এখলাসুল হক:আমরা স্মরন করতে পারি ১৯৭৪ সালের কথা যখন মানুষের খাবার ছিল না। এমনকি ধনী ব্যক্তিরাও ছিল এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী। হাজার হাজার মানুষ শুধু না খেতে পেয়ে মারা গিয়েছিল। মানুষ ছিল মাত্র সাড়ে সাত কোটি। এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন হতো ৫-৬ মণ। ৯০% মানুষেরই খাবার ছিল ভাত, ডাল, আলু বা বেগুন ভর্তা। মুরগী, গরু বা খাশীর মাংস ছিল সোনার হরিণের মতো ব্যাপার। নদীতে মাছ ছিল পর্যাপ্ত কিন্তু প্রায় ৯০ ভাগ মানুষেরই তার যোগান দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না।
কিন্তু বর্তমানে সেই চিত্র পরিবর্তন হয়েছে, চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমলেও ধান উৎপাদন হয় পর্যাপ্ত। পরিবর্তন হয়েছে জাতীয় পুষ্টি চাহিদার আরো অনেক কিছু এবং আমরা আশা করতে পারি আগামী দশকের বাংলাদেশের মানুষের থাকবে সুষম খাদ্যের স্বয়ংসম্পূর্ণতা। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ুও বেড়েছে ৩৮ বছর থেকে ৭২ বছরে। এইগুলো সবই আমাদের অর্জন।
এখন সময় মানুষের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার। নিরাপদ খাদ্যের বিরুদ্ধে যায় এমন যে কোন কিছু বা যে কারো বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহনে সহনশীলতার মাত্রা শুন্যের কোঠায় আনতে হবে। যেই হোক না কেন, একজন ধান চাসী, ফলমূল বা সবজি উৎপাদক কিংবা মুরগীর খামারী বা ফিডমিলের মালিক সবারই উচিৎ নিরাপদ খাদ্যের ব্যাপারে সবধরনের বিবেচনা রাখা। আর নয় আমাদের কিংবা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মদের জীবন নিয়ে খেলা। BRAND মানে হলো কোন কোম্পানীর পারিবারিক ইতিহাস। ব্র্যান্ড পরিচিতি থাকা কোম্পানীগুলোর এগিয়ে আসা উচিৎ এবং তাদের ব্র্যান্ডের আওতায় নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকারের সাথে আলোচনা শুরু করা উচিৎ।
এ ছাড়া প্রত্যেকটি কোম্পানিরই উচিৎ ধাপে ধাপে তাদের ব্র্যান্ডের পরিচিতি, গুরুত্ব এবং বিশ্বাসযোগ্যতাকে দিন দিন শক্তিশালী করে তোলা। এটা একটা ভ্যালু চেইন তৈরী করে। ধান, চাল, শাক-সব্জি, ফলমূল, মাছ, মুরগী প্রভৃতির এসমস্ত চাষি এবং উৎপাদকগণ এই ভ্যালু চেইনের অংশীদার হবে। যদি কেউ বা এই ভ্যালু চেইনের কোন অংশীদার ভেজাল উৎপাদনের মাধ্যমে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করতে চায় বা চেষ্টা করে তাহলে ভ্যালু চেইনের নীতিমালা অনুসারে তাকে যথোপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা উচিৎ।
আমরা যদি এরকম ভবিষ্যৎ বিবেচনা করতে পারি, তাহলে এটা আমাদের শিল্পকে আরো শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে এবং আমরা নিশ্চিত করতে পারবো সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য, নিরাপদ ও সুস্থ্য-সবল ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।
একটা শিশু জন্মগ্রহণ করে কিছু মৌলিক অধিকার নিয়েঃ
-নিরাপদ খাবার পানি
-নিরাপদ খাদ্য
-নিঃশ্বাস নেয়ার জন্য বিশুদ্ধ নির্মল বাতাস
তাই এখনই সময় এক হওয়ার এবং শুরু করার নিরাপদ খাদ্য আন্দোলন এবং সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার। একতাই শক্তি, আসুন আমরা আমাদের লক্ষ্য পূরনে এক হয়ে কাজ করি।