এগ্রিবিজনেস ডেস্ক:লাভ জনক কৃষির কথা মাথায় রেখে উচ্চ মুল্যের ফসল আবাদের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয়। উচ্চ মুল্যের কাজু বাদাম পুষ্টিকর এবং মজাদার খাদ্য। এটি উৎকৃষ্ট শিশু খাদ্যও বটে, যার চাহিদা সারা বিশ্বে দিনে দিনে বাড়ছে। এর এক একটি গাছ ৫০ কেজি করে গ্রীন হাউস গ্যাস (কার্বন ডাইঅক্সাইড) শোষণ করে, এ গাছটিকে পরিবেশের বন্ধুও বলা চলে। বাদাম উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণে জনবলের প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে নারীদের কর্মসংস্থান হবে।
বুধবার (১২ জুন) কৃষি ন্ত্রী ড.মো:আব্দুর রাজ্জক এম.পি মন্ত্রণালয়ে তার অফিসকক্ষে কাজুবাদাম উৎপাদনকারী, প্রক্রিয়াজাতকারী ও রপ্তানিকারক এসোসিয়েশন এর নের্তৃবৃন্দের সাথে বৈঠক এসব কথা বলেন। এতে নের্তৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি জনাব মো: হারুন।
নেতৃবৃন্দ বলেন; ২০১৪ সাল থেকে বান্দরবানের রুমা উপজেলার পাশাপাশি থানচি, রোয়াংছড়ি ও সদর উপজেলা, খাগড়াছড়ি এবং রাঙ্গামাটিতে কাজুবাদাম চাষ হচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে। নিজস্ব চারা থেকে উৎপাদিত গাছ হতে উৎপন্ন বাদামে তারা লাভবান হচ্ছে। তাদের ২০২১ সালের লক্ষ্যমাত্রা ৮০ হাজার মে.টন, ২০৩০ সালের মধ্যে ১৫ কোটি গাছ রোপন করে ২ লাখ হেক্টর জমি চাষের আওতায় আনা হবে। এতে করে উৎপাদন হবে প্রায় ১০ লাখ মে.টন যার বাজার মুল্য ২৬ হাজার কোটি টাকা। আমাদের প্রসেসিং কারখানা থাকলে এবং প্রসেসিং করে রপ্তানি করা গেলে এই অর্থের পরিমান দ্বিগুন হবে। এর জন্য ভিয়েতনামের উচ্চফলনশীল জাতের চারা প্রয়োজন ও নিজস্ব প্রসেসিং কারখানা। কৃষিমন্ত্রী মনোযোগ সহকারে তাদের কথা শুনেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন; সরকার সবসময় কৃষকের লাভের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রেও সরকারের সর্বাত্বক সহযোগিতা থাকবে। কাজুবাদাম আবাদ মোটামুটি সহজ। এটি চাষের ক্ষেত্র প্রসারিত করার পরামর্শ দেন তিনি। ভিয়েতনাম থেকে উচ্চ ফলনশীল জাতের চারা আমদানির ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন প্রয়োজনে কাজু বাদাম চারায় সরকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে। আরো অধিক সংখ্যক কৃষককে উদ্বুদ্ধ করতে হবে, সকল উপযোগি পতিত যায়গায় এর চাষ করার তাগিদ দেন কৃষিমন্ত্রী। প্রক্রিয়াজাতসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে জানান তিনি। প্রয়োজনে কৃষকদের বিদেশে অভিজ্ঞতা অর্জন ও প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাজু বাদামের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক এবং ক্রেতা।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন; ভিয়েতনাম ১৯৮৮ সালে কাজুবাদাম চাষ শুরু করে এবং ১৯৯৮ সালে বাণিজ্যিক চাষে গিয়ে আজ তারা বিশ্বে এক নাম্বার হলে আমরা কেন পারব না। বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কৃষির জন্য যা যা করার সব করবে। কৃষিপণ্যটি রফতানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্ভাবনাময় রফতানি পণ্যের তালিকায় উঠে এসেছে কৃষিপণ্যটি। যে সব দেশে কাজুবাদাম বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয় সে সব দেশে গিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের তাগিদ দেন মন্ত্রী এবং দেশে তার প্রতিফলন চান।
নের্তৃবৃন্দের মধ্যে আরও ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি শফিক উদ্দিন, কাজী শাহাদাত হোসেন, মো:মহিউদ্দিন, মো:কামাল উদ্দিন, সাইফুদ্দিন হাসান, এমডি মেঘা অ্যাগ্রো প্রোডা:শাহ সিরাজুর রহমান, রেজাউল করিম-সহযোগি অধ্যাপক, চট্রগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়, নুরুল আফসার. মোস্তাফিজুর রহমান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, রুমা, থানচি এবং মু:আব্দুস ছালাম, সাধারণ সম্পাদক।