এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:দানাদার খাদ্য হিসাবে গমের অবস্থান ধানের পরেই। সমীক্ষায় দেখা যায় আমাদের বাৎসরিক গমের চাহিদা প্রায় ৭০ লক্ষ টন । বাৎসরিক ধানের যোগান দেশজ উৎপাদনের মাধ্যমে পুরাপুরি পূরণ হলেও গমের চাহিদার নিজস্ব উৎপাদন প্রায় একষষ্ঠাংশ মাত্র । বিগত ২০১৬ সালে বাংলাদেশের দক্ষিন এবং দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের কিছু এলাকায় গম ফসলে মহামারী হিসাবে ব্লাস্ট রোগ দেখা দেওয়ায় গমের উৎপাদনে আরও ঘাটতি তৈরী হয়।
এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ভূট্টা ও গম গবেষনা কন্দ্রে (সিমিট) বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইস্টিটিউট এর সাথে ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জাত উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ শুরু করে এবং বারি গম ৩৩ জাতটি ২০১৭ সালে অবমুক্ত করে। আরও তিনটি জাত বারি গম ২৮, বারি গম ৩০ ও বারি গম ৩২ ব্লাস্ট রোগ সহনশীল হলেও একমাত্র বারি গম ৩৩ জাতটিই পুরোপুরি ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জাত এবং ফলনও সন্তোষজনক।
এ বছর চাষী পর্যায়ে জাতটির সম্প্রসারনের লক্ষ্যে সিমিট ফরিদপুর হাব যৌথভাবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইস্টিটিউট এবং কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের সাথে বারি গম ৩৩ জাতটির বীজ উৎপাদন প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করে। ৩০ শে ফাল্গুন রাজবাড়ী সদর উপজলোর ধুলদি-জয়পুর গ্রামে কৃষক কৃষানীদের মাঝে পরিচিত করন এবং সরেজমিনে জাতটির গুনাগুন প্রত্যক্ষকরনের লক্ষ্যে গম ফসলের সর্বাধুনিক এ জাতের বীজ উৎপাদন প্রদর্শনীর উপর কৃষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ইউএসএআইডি (USAID)-এর অর্থায়নে, Wheat Blast প্রকল্পের আওতায় সিমিট বাংলাদেশের আয়োজনে এ মাঠ দিবসের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো: ফজলুর রহমান, উপ পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর, রাজবাড়ী, বিশেষ অতিথি হিসাবে ছিলেন মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন, কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা ,কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর, রাজবাড়ী সদর। অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন খোঃ আবুল খায়ের, এ.ডি.ও,, সিমিট, ফরিদপুর। মাঠ দিবস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন মোঃ আইনাল মন্ডল, টি.এফ, সিসা-এমআই প্র্রকল্প, এসডিসি, ফরিদপুর।
এ মাঠ দিবসে ৭২ জন কৃষানীসহ মোট ১২০ জন স্থানীয় গমচাষী তাদের মাঠে নূতন জাতের এ ফসল দেখতে পেরে খুবই আনন্দিত এবং পরবর্তী বছওে এ জাতের গম চাষে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রধান অতিথি এবছর নূতন জাতটির উৎপাদিত সমুদয় বীজ খাদ্য হিসাবে ব্যবহার না করে পরবর্তী বছরের জন্য বীজ হিসাবে সংরক্ষনের জন্য সংশ্লিস্ট চাষীভাইদের আহ্বান জানান। সকলের সন্মিলিত প্রচেষ্টায় ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে এবং গমের ফলন বৃদ্ধি পাবে মর্মে সভাপতি মহোদয় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।