বাকৃবি প্রতিনিধি:ধান বাংলাদেশের প্রধান শস্য জাতীয় ফসল। আর ধান থেকে উৎপাদিত চালে আর্সেনিকের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ায় মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশে উৎপাদিত চালে প্রায় শতকরা ৮০-৯০ ভাগ অজৈব আর্সেনিকের উপস্থিত রয়েছে। ধান চাষের সময় সেচের জন্য ব্যবহৃত ভূগর্ভস্থ পানি এই অর্সেনিকের উৎস। আর এই অজৈব আর্সেনিক মানুষের শরীরের জন্য অত্যান্ত ক্ষতিকর। এটি শরীরের মধ্যে প্রবেশ করলে ত্বক, লিভার ক্যান্সার সহ বিভিন্ন ধরনের মারত্বক রোগে আক্রান্ত হয় মানুষ। আর দীর্ঘ গবেষণায় দেশে উৎপাদিত চাল থেকে এই আর্সেনিক অপসারণে সফলতা পেয়েছেন বাকৃবির একদল গবেষক।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে "Removing Inorganic Arsenic From Rice" শীর্ষক সেমিনারে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় এসব কথা বলেন গবেষণা প্রকল্পের প্রধান অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন সুমন। তিনি আরও বলেন, ধান সিদ্ধ করার প্রচলিত পদ্ধতির কিছুটা পরিবর্তন ঘটিয়ে বিকল্প পদ্ধতির মাধ্যমে ধান হতে আর্সেনিক অপসারণ করা সম্ভব। বিকল্প এই পদ্ধতিতে প্রথমে ধান পানিতে ভিজানোর পূর্বে হাস্কিং মেশিনের সাহায্যে ধানের উপরের খোসা অপসরণ (হাস্ক) করা হয়। এরপর ওই শস্যকে ১২ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে ১০ মিনিট দ্বিগুণ পরিমান ফুটন্ত পানিতে সিদ্ধ করে রোদে শুকানো হয়। তারপর পলিশিং এর মাধ্যমে ধানের কুঁড়া অপসরন করা হয়। উক্ত পদ্ধতির মাধ্যমে জাত ভেদে চালের শতকরা ৬৮ ভাগ পর্যন্ত অজৈব আর্সেনিক অপসারণ সম্ভব। এই পদ্ধতির প্রবর্তনের জন্য সুইজারল্যান্ডের নেসলে ফাউন্ডেশন এর অর্থায়নে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও কুইন্স ইউনিভার্সিটি, বেলফাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে একটি গবেষণা কাজ চলমান আছেও বলেও জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আবেদীনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জহির উদ্দিন, বাকৃবি রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. এম এ এম ইয়াহিয়া খন্দকার। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।