এগ্রিলাইফ ডেস্ক:প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভবন ও জায়গা দখল করে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন বাণিজ্য করছে, এমন শিরোনামে একটি বে-সরকারী টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভিএ মহাসচিব ড. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান মোল্লা। বর্তমানে বিদেশে অবস্থানের কারণে জরুরী এক ই-মেইল বার্তায় তিনি এ প্রতিবাদ জানান।
ই-মেইলে প্রেরিত প্রতিবাদে বিভিএ মহাসচিব ড. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান মোল্লা বলেন, “ভেটেরিনারি পেশার মর্যাদা নষ্ট করতেই এমন উদ্দেশ্য প্রণোদিত মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক সংবাদ পরিবেশন। ১৬ বছর (৯+৭) পর বাংলাদেশে ভেটেরিনারি পেশার একমাত্র আন্তর্জাতিক সংগঠন বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন (বিভিএ) এর নির্বাচন গত ২ ডিসেম্বর ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ২টি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আমাদের (ডা. নজরুল– ড. হাবিব মোল্লা) প্যানেল বিপুল ভোটের ব্যবধানে পূর্নপ্যানেলে নির্বাচিত হই। নির্বাচনে আমরা ২১ দফা ইশতেহার দিয়েছিলাম। এর মধ্যে মৃতপ্রায় অচল বিভিএ সচল এবং কার্যকর করা। আমরা ১ জানুয়ারি ২০১৮ দায়িত্বভার বুঝে পাই। বিভিএ’র এই ভবনটি ছিল জরাজীর্ণ একটি ভবন, যেখানে বসার মতো কোন ব্যবস্থা ছিল না। বিভিএ ভবনটি ছিল সম্পূর্ণ বসবাসের অনুপযোগী। আমরা দায়িত্বভার বুঝে নেওয়ার পর প্রথম নির্বাচিত সকল নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে মাজার জিয়ারত করে যাত্রা শুরু করি।
প্রতিবাদ লিপিতে তিনি আরো বলেন বিভিএ ভবনটি যেহেতু কার্যত: বসার অনুপযোগী তাই আমরা বিভিএ’র প্রথম কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিং টুঙ্গিপাড়া জাতির পিতার সমাধি প্রাঙ্গণস্থ রেস্ট হাউজে করি। সেদিনের প্রথম সভায় বিস্তারিত আলোচনার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল, বিভিএ ভবনকে সংস্কার করে এসোসিয়েশনের কার্যক্রম শুরু করা। আর তারই ফলশ্রুতিতে মাত্র ১ বছরের মাথায় আজকের এই বিভিএ ভবন এবং বর্তমান অবস্থা।
প্রতিবাদে তিনি আরো বলেন, সারা বাংলাদশের ভেটেরিনারিয়ানগণকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরসহ নানান গুরুত্বপূর্ণ কাজে ঢাকায় আসতে হয়। কোথাও কোন বিশ্রাম অথবা ১ বা ২ রাত অবস্থান করে কাজ করবেন এমন কোন ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। বর্তমান বিভিএ সিদ্ধান্ত নেয় যেহেতু বিভিএ ভবনের ২ তলায় ৩ টি রুম খালিই রয়েছে সেখানে আমরা রেস্টরুম করে দিলে অন্তত ঢাকায় এসে বিশ্রাম নিয়ে কাজ করতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন। বর্তমান বিভিএ দীর্ঘদিন পর বিগত ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ সালে কেআইবি অডিটোরিয়াম এ ভেটেরিনারিয়ানদের সাধারণ সভা করি। সভায় অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের মধ্যে বিভিএ ভবনের ২ তলায় ১ টি নারী এবং ২ টি পুরুষ রেস্টরুম এবং বিভিএ ভবনের পাশে ১ টি ক্যাফেটরিয়া করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আর তারই আলোকে আজকের এই বিভিএ রেস্টরুম এবং বিভিএ ক্যাফেটেরিয়া। কেআইবি এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরসহ অত্র এলাকায় কোন ধরনের খাওয়ার সুব্যবস্থা নেই। বিভিএ বিভিন্ন পর্যায়ের সকলের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে সকলের সহযোগিতায় বিভিএ ক্যাফেটেরিয়া চালু করে, যার সুবিধা পাচ্ছেন অত্র এলাকার সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং বিভিন্ন কাজে আসা সাধারণ মানুষজন। সর্বস্তরের মানুষ উক্ত ক্যাফেটেরিয়ার উচ্ছসিত প্রশংসা করছেন।”
এদিকে এহেন সংবাদের প্রতিবাদে সারাবাংলার ভেটেরিনারিয়ানদের মধ্যে চরম ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে। তাদের মতে ঐ রিপোর্টটি ছিলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তারা বলছেন, একটি স্বার্থান্বেষি মহলের ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ এই প্রতিবেদন। প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যাদের বিরুদ্ধে নিউজ করা হয়েছে, তাদের কারো কোন সাক্ষাৎকার নেয়া হয়নি। বলা হয়েছে, গেস্ট হাউজে বহিরাগতরা থাকে, কিন্তু গেস্ট রেজিস্টার চেক করা হয়নি। যে ব্যাক্তির সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে, তার কথার ভিত্তি কি? তা যাচাইয়ের জন্য কোন প্রশ্ন করা হয়নি, তার চেহারা না দেখাক কিন্তু কোন পদমর্যাদার তাও বলা হয়নি। বিভিএ মহাসচিব দেশে নেই বলে তার সাক্ষাৎকার নেয়া সম্ভব হয়নি। মহাসচিব না থাকলেও সভাপতি তো দেশেই ছিলেন, বা বিভিএর অন্য কোন নেতার সাথেও তো কথা বলা যেতো, তাও করা হয়নি।
অপরদিকে এমন একটি সংবাদের প্রতিবাদে সামাজিক মাধ্যমেও এর প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। সর্বস্তরের ভেটেরিনারিয়ানরা প্রচারিত সংবাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বিভিন্ন স্ট্যটাস ও মন্তব্য প্রকাশ করছেন।