আবুল বাশার মিরাজঃসম্ভাবনার আলোতে আলোকিত আমাদের এই তারুণ্য। ইতিবাচক নানা ধরনের কাজের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবার মানসিকতা নিয়ে সমাজের নানা প্রান্তে কাজ করে যাচ্ছে এদেশের তরুণ-তরুণীরা। তেমনি একজন স্বপ্নবাজ তরুণীর নাম ইশরাত করিম ইভ।
আলোকিত এই তরুণী দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। স্নাতকোত্তর করার পর তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং ‘আমাল ফাউন্ডেশন’ নামে একটি অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সমাজের মূল স্রোতে নিয়ে আসতে তাদের জন্য মৌলিক, নৈতিক, ধর্মীয় ও কারিগরি শিক্ষার জন্য কাজ করছেন তিনি। পাশাপাশি নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে গ্রামীণ পিছিয়ে পরা নারী ও শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্ষমতায়ন এবং জরুরী সংকটের জন্যও কাজ করছে তার ফাউন্ডেশনটি। তিনি যুব আইকন ২০১৮, ওয়াই এস এস ই সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট অ্যাওয়ার্ড, জিটিএ গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ড, জোকোনা ক্যাটালিস্ট ফেলোশিপসহ বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন।
তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, ফাউন্ডেশনটি সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য চারটি ভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম একটি বিষয় হচ্ছে স্বাস্থ্য। তিনি জানান সকলের সহযোগিতার মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি লোকের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ঔষধ সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছেন। আগামী মাসে নিজস্ব স্বাস্থ্য ক্লিনিক সেট আপ করা হবে।
ফাউন্ডেশনের আরেকটি কাজের ক্ষেত্র হলো নারী ক্ষমতায়ন। এ বিষয়ে তিনি জানান, এ বছর আমরা বগুড়ায় ‘রওশন আরা স্কিল সেন্টার’ নামে একটি দক্ষতা কেন্দ্র নির্মাণ করেছি। আমরা লক্ষ্য করেছি দারিদ্র্যের চক্র থেকে মুক্ত হতে স্বতঃস্ফুর্ত হওয়ার জন্য প্রয়োাজনীয় সরঞ্জামগুলির সাথে পুরুষ ও মহিলাদের ক্ষমতায়ন করা।
ইশরাত জানান, সংগঠনটির সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে শিক্ষার দিকে। ইতিমধ্যে আমরা চরের শিশুদের জন্য ‘উচ্ছ্বাস স্কুল’ তৈরি করেছি। ৫০ জনের অধিক সুবিধাবঞ্চিত শিশু এখানে বিনামূল্যে পড়াশোনা করতে পারে। আমরা ১০০০ এরও বেশি মানুষের জন্য শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করেছি।
সংগঠনটির আরেকটি উল্লেখযোগ্য কাজের ক্ষেত্র হচ্ছে জরুরী সেবা। এ বিষয়ে তিনি জানান, আমরা সারা বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষকে বন্যার সময় ত্রাণ সরবরাহ করেছি। রোহিঙ্গা সংকট আমাদের অংশীদার সংগঠনের সহায়তায় হাজার হাজার মানুষকে ত্রাণ সরবরাহ করেছি। আমরা তাঁদের জন্য মডেল ভিলেজ তৈরি, বৃক্ষরোপন ও শস্য বীজ বিতরণ, সোলার লইট, মেডিকেল স্বাস্থ্যসেবার কাজগুলি করছি। এছাড়াও আমরা একটি অনাথ আশ্রম নির্মাণ করার কাজ হাতে নিয়েছি। আগামী মাসে সেটির কাজও শুরু হবে। বিত্তবানদের সহযোগিতা থাকলে ফাউন্ডেশনটি তাদের কার্যক্রমকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারবে। পাশাপাশি নারী ও শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়ন, বাল্যবিবাহ রোধ, মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করা, নারী উদ্যোক্তা তৈরি করে চাকরির বাজারে চাপ কমানোর কাজটি করে যাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।