স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-চ্যানেল আই অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ডে গবেষণায় সেরা বাকৃবি ও আজীবন সম্মাননা পেলেন ড. এম এ রহিম

আবুল বাশার মিরাজ, বাকৃবি প্রতিনিধি:কৃষিক্ষেত্রে অনন্য অবদানের জন্য ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-চ্যানেল আই অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন। গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসাবে এবং আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন বিশিষ্ট উদ্যানতত্ত্ববিদ ড. এম, এ রহিম।

রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে কৃষক ও কৃষি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে সম্মানিত করার জন্য ৭ম বারের মতো আয়োজন করা হয় এই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-চ্যানেল আই অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড। আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক।

এ বছর সর্বমোট নয়টি কাটগরিতে ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া পুরস্কার পান বছরের সেরা কৃষক (পুরুষ মো. আকবর হোসেন, বছরের সেরা কৃষক (নারী) যৌথভাবে নয়ন সেলিনা ও মোছা. নুরুন্নাহার বেগম।

পরিবর্তনের নায়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম শাহ, সেরা কৃষি সাংবাদিক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, জুরি স্পেশাল মো. কুব্বাদ হোসাইন, সেরা কৃষি প্রতিষ্ঠান (গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সেরা কৃষি প্রতিষ্ঠান (সহযোগিতা ও বাস্তবায়ন) রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (আরডিএফ) ও সেরা কৃষি প্রতিষ্ঠান (রপ্তানী) প্রাণ ডেইরি লিমিটেড।

প্রায় তিন শতাধিক আবেদনের ভেতর থেকে বাছাই শেষে জুরি বোর্ড উল্লেখিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হয়।

জুরি বোর্ডে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ। সদস্য ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক এম এ সাত্তার মন্ডল। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাজাহান কবির, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কন্সালটেন্ট ফরাজি বিনতে ফেরদৌস, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গৌতম বুদ্ধ দাস এবং বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয় বলেন, ‘‘এ বছর যারা বিজয়ী হয়েছেন তারা সময়ের সেরা কৃষি নায়ক। তাদের অদম্য চেতনায় আমরা অনুপ্রাণিত। করোনা মহামারি এবং নানান প্রতিবন্ধকতার ভিতর, এই কৃষি উদ্যোক্তারা এবং কৃষি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কাজে একনিষ্ঠ থেকেছে এবং একটি তথ্যমতে আমরা বলতে পারি এই দুঃসময়ে ১৫০০ ও বেশি মানুষকে কৃষিকাজে যুক্ত রাখতে পেরেছে। তাদের অধ্যবসায় কৃষির প্রতি অনুরাগ, ত্যাগ, বিশেষত যখন তারা জানেন কোটি মানুষের খাদ্য চাহিদা মেটাতে কাজ করে যেতেই হবে, তখন তারা আরো বৃহৎভাবে এগিয়ে নিয়েছেন, একবারও পেছনে ফিরে তাকাননি। আমার কাছে এটি খুবই গর্বের এবং সম্মানের যে চ্যানেল আইয়ের সাথে এই যৌথ উদ্যোগটি আমরা প্রতিবছর উদযাপন করতে পারছি। আমরা সেইসব নায়কদেরই পুরস্কৃত করছি যারা শুধু নিজেকে নয়, দেশকে নিয়ে গেছেন উন্নয়নের এক অনন্য উচ্চতায়।”



শুভেচ্ছা বক্তব্যে কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং চ্যানেল আইয়ের বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ বলেন, ‘‘কৃষকই বাংলাদেশের প্রধানতম নায়ক। তাদের হাতেই রচিত হয়েছে ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ। আমরা প্রায়ই তা ভুলে যাই। কিন্তু এই কৃষকরাই আমাদের শ্রমে, ঘামে আনাদের অন্ন জুগিয়ে যাচ্ছেন। কৃষক নিরন্তর চেষ্টায় এগিয়ে চলছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের সময়ে তরুণ কৃষকরা প্রযুক্তিনির্ভর কৃষিতে অসামান্য সাফল্যের নজির গড়ছেন। প্রত্যেকেই বিশেষ মূল্যায়নের দাবি রাখেন। যারা অ্যাওয়ার্ড পেলেন স্ব স্ব ক্ষেত্রে তাদের অনেক বড় অবদান। এই নিবেদিতপ্রাণ মানুষদের সম্মানিত করতে পেরে চ্যানেল আই আনন্দিত।’’

পুরস্কারপ্রাপ্তরা কৃষিমন্ত্রীর কাছ থেকে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট গ্রহণ করেন। নয়টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কারের অর্থ হিসেবে সর্বমোট ২২ লাখ টাকা প্রদান করা হয়।