ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা কার্যক্রমে তরুনদের অংশগ্রহন বাড়ানো জরুরি

Category: সমসাময়িক Written by agrilife24

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনসহ যে কোন সংকটে তরুনরা জাতিকে দিক নির্দেশনা প্রদান করে সংকট সমাধানে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। কিন্তু বর্তমানে তরুনরা রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি ও ইন্টারনেটভিত্তিক গেমসহ নানা নেশায় আসক্ত হয়ে পৃথিবীর যাবতীয় কর্মকান্ড থেকে অনেক দূরে সরে আছে। আবার দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় একজন ছাত্র/ছাত্রীকে শিক্ষার্থী হিসাবে নয়, গড়ে তোলা হচ্ছে পরীক্ষার্থী হিসাবে। সেকারনেই অভিভাবকদের কাছে পরীক্ষায় পাশই মুখ্য। শিক্ষিত হয়ে প্রকৃত মানুষ হলো কিনা সেটা গৌন।

অন্যদিকে ব্যবসা অনুষদ বা মাকেটিংসহ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুই হাজার পাঁচশত টাকায় ব্যবসা শুরু করে দুই হাজার পাঁচশত কোটির মালিকে পরিনত হবার মতো সাফল্যগুলো পড়ানো হয়। কিছু পত্রপত্রিকা ও মিডিয়াগুলো এধরনের সাফল্যের কাহিনীগুলো প্রচার করছেন। যেনতেন ভাবে ব্যবসায় লাভ করাটাই এখন সাফল্যের চাবিকাটি। সেকারনেই একজন ছাত্র/ছাত্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পার না করতেই কিভাবেই হাজার কোটি টাকার মালিক হতে পারে সে চিন্তায় মগ্ন হন।

১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ইং নগরীর শিল্পকলা একাডেমীর সেমিনার হলে ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের উদ্যোগে আয়োজিত "ইয়ুথ কনজ্যুমারস রাইটস এক্টিভিষ্ঠ ডায়লগ" এ বিভিন্ন বক্তাগন উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি আবু হানিফ নোমানের সভাপতিত্বে ও ক্যাব যুব গ্রুপ সদস্য ইসমাইল হোসেন মহারাজ'র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংলাপে সম্মানিত অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক আবদুল হক, পরিবেশবিদ মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডঃ ইদ্রিস আলী, ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু। মুল কর্মঅধিবেশেনে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাঈদ আহসান খালিদ, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় বিশ্বাস ও দি ডেইলী বিজনেস স্টার্ন্ডাডস চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান সামসুদ্দিন ইলিয়াছ। মুক্ত আলোচনায় অংশনেন নিলয় বর্মন, খাইরুল ইসলাম, রাসেল উদ্দীন, ইমদাদুল ইসলা, রাকিবুল ইসলাম, সিদরাতুল মুনতাহা, মিসকাত, আরাফাত হোসেন চৌধুরী, নাফিসুল ইসলাম, রাকিবুল আলম, ইমরান হোসেন প্রমুখ

সংলাপে বক্তারা আরও বলেন, আজকে যারা ছাত্র ও যুবক, আগামিতে তারাই পরিবার, সমাজ ও রাস্ট্রের গুরুর্ত্বপূর্ন দায়িত্ব নিবে। কিন্তু তারা যদি সমাজে চলমান অনিয়ম, ভোগান্তি, প্রতারনা ও সমস্যাগুলি সম্পর্কে সম্যক অবহিত না হয়, তাহলে পেশাগত জীবনে অথবা ব্যক্তিগত জীবনে এই সমস্যাগুলি থেকে উত্তরণের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে বেগ পেতে হবে। তাই দেশের তরুন জনগোষ্ঠিকে দেশ ও জাতিগঠনমুলক স্বেচ্ছাসেবী সমাজ পরিবর্তন কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করা জরুরি। তারই অংশ হিসাবে ভোক্তা অধিকার, খাদ্যে ভেজাল বিরোধী অভিযান মাদক ও ধুমপানের বিরোধী প্রচারনা কর্মকান্ডে তরুন জনগোষ্ঠিকে সম্পৃক্ত করতে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ক্যাব যুব গ্রুপ গঠনের তৎপরতা বাড়ানো দরকার।

বক্তারা আরও বলেন, দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শুরু করে সবকটি আন্দোলনে তরুন সমাজ নেতৃত্ব প্রদান করলেও ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে তরুনদেরকে ব্যবহার করে একটি গোষ্ঠী নিজেদের ফায়দা হাসিলের কারনে তরুন সমাজ বিভ্রান্ত হয়ে দেশে ও জাতি গঠনমুলক কাজ থেকে বিমুখ হয়ে আছে। সেকারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পাড়া মহল্লায় এখন আর সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড চর্চা ও মানবতার কল্যানে স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগগুলি বিকশিত হচ্ছে না। যার কারনে তরুনরা বিপথগামী হচ্ছে।

সম্প্রতি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জঘন্যতম ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। অন্যদিকে কর্পোরেট সংস্কৃতির আগ্রাসনে পড়াশুনা শেষ না করতেই তরুনদের নানা লোভনীয় অফার দিয়ে খন্ডকালীন চাকুরী দেয়া হলেও পরক্ষণে তার যবনিকা ঘটে। এর সর্বশেষ পরিনতি হয় অকালে সম্ভাবনাময় অনেক জীবন নস্ট হয়ে যায়।