জাপানকে বাংলাদেশে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আহবান-চট্টগ্রামে সমাবেশে বক্তারা

Category: সমসাময়িক Written by agrilife24

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: ওয়েষ্টিন টোকিওতে ২৮ মার্চ থেকে ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত ৫ম জাপান এনার্জি সামিট ২০২৩ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ বছরে জাপান এনার্জি সামিট হল কার্ব্ন নিরপেক্ষতার জন্য দেশের রোডম্যাপ- এলএনজি, গ্যাস এবং হাইড্রোজেনের ভূমিকা মোকাবেলা করা এবং নেট জিরো কার্ব্ন শুন্য অর্জন। এটি একটি আর্ন্তজাতিক প্লাটফরম যেখানে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এর সাথে জড়িত ষ্টেকহোল্ডার, জাপানি ক্রেতা ও সরকারী প্রতিনিধি এবং আন্তর্জাতিক সরবরাহকারীদের বর্তমান শিল্পবানিজ্যকে প্রভাবিত করে এমন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য আহবান জানিয়েছে। যার মধ্যে এলএনজি ও গ্যাস কি ভাবে বৈশ্বিক তাপমাত্রার বৃদ্ধি সংকটপূর্ন ভূমিকা রাখছে, হাইড্রোজেন ও এমোনিয়াতে পরিবর্তন এবং কম কার্বন নির্গমনের সমাধান করা যায়।

জাপান পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত ও ধনী দেশগুলোর অন্যতম। ১৯৯২ সালের জলবায়ু-সনদ অনুসারে জাপান শুধু নিজের দেশে নয় বরং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশেরও গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে নীতিগতভাবে বাধ্য। কিন্তু জাপান সরকার ও সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো এলএনজি ও কয়লা-বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করে যেমন বাংলাদেশকে বিপদে ফেলছে তেমনি মানবজাতির সমান ক্ষতি সাধন করছে। এতে লাভ হচ্ছে জাপানের, কিন্তু ক্ষতি হচ্ছে বাংলাদেশের ও পৃথিবীর। ২০৫০ নেট-জিরো বৈশ্বিক তাপমাত্রার বৃদ্ধি যাতে ১.৫º সেলসিয়াসের নিচে থাকে তার জন্যে প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যমাত্রার জন্য যথেষ্ট নয়।

বর্তমানে বাংলাদেশে জাপান-এর দু'টি বিনিয়োগ রয়েছে, সামিট গাজীপুর, ফেজ-২, ৩০০ মে:ও: এইচএফও ভিত্তিক বিদ্যুৎ কোম্পানি (৩ বিলিয়ন ইউএসডি) এবং রিলায়েন্স মেঘনাঘাট, ৭৫০ মে:ও: এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎ কোম্পানি (১২৬৫ মিলিয়ন ইউএসডি)। যা প্যারিস চুক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা স্থাপনের জন্য জাপানের এ বিনিয়োগ কাম্য নয়।

আজ ২ মার্চ ২০২৩ইং বৃহঃস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় বাংলাদেশ বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোট (BWGED), এপিএমডিডি এবং আইএসডিই বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

সমাবেশে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আইএসডিই বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইন বলেন-জাপান বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ ও পরীক্ষিত বন্ধু রাষ্ট্র হলেও সবচেয়ে বেশী বিনিয়োগকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি যারা বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করেছে যা জীবাশ্ম জ্বালানি দ্বারা পরিচালিত যার ফলে আমরা জলবায়ু, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অবিচারের শিকার হচ্ছি। তাই জাপানের উচিৎ উন্নত প্রযুক্তি ও অর্থায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি অর্জনের পথে সাহায্য করা। বাংলাদেশ সরকার ইতিামধ্যেই ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়ন করার জন্য মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

বিভিন্ন বক্তারা বলেন, কয়লাসহ-জীবাশ্ম জ্বালানি দ্বারা পরিচালিত বিদ্যুত প্রকল্পের ফলে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যহানি ও পরিবেশের মারত্মক দূষণের ঝুঁকি ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এছাড়া আমদানিকৃত কয়লা থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। তাই এ খাতে জাপানের বিনিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশের শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ নিশ্চিত করার জন্য জাপানকে উদ্যোগ নেয়ার জোর আহ্বান জানান।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, সাফা মোতালেব কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হাজী আবু তাহের, বিশিষ্ঠ কলামিস্ট মুসা খান, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক ত্যেহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ভেজিটেবল এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য সেলিম জাহাঙ্গীর, চান্দগাঁও ল্যাবরেটরী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ইসমাইল ফারুকী, অধ্যক্ষ মনিরুজ্জমান, ক্যাব সদরঘাটের শাহীন চৌধুরী, ক্যাব জামালখানের সভাপতি হেলাল চৌধুরী, ক্যাব পাহাড়তলীর হারুন গফুর ভুইয়া, বন গবেষণাগার কলেজের অধ্যাপক একেএম হুমায়ুন কবির, ক্যাব খুলসীর সভাপতি প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম আইন কলেজের সাবেক ভিপি রেবা বড়ুয়া, ক্যাব নেতা ফাহানা আকতার, মহিলা পরিষদের রুবি খান, মানবাধিকার সংগঠক ওসমান জাহাঙ্গীর, সিএসডিএফ'র শম্পা কে নাহার, আইএসডিই'র মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, অ্যাডভোকেট প্রণব বিশ্বাস, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমান, নিলয় বর্মন, সাকিলুর রহমান, মিনা আকতার, জান্নাতুন নাঈম, অমিত দে, আমজাদুল হক আয়েজ, মোঃ মিসকাত, এমদাদুল ইসলাম, রাসেল উদ্দীন প্রমুখ।