ইফতারে খিচুরি খাওয়ার দাবিতে চট্টগ্রামে "মানববন্ধন ও গণঅবস্থান" কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের উদ্যোগে নিত্যপণ্য মূল্যের ক্রমাগত উর্ধ্বগতিরোধ ও ইফতারে খিচুরি খাওয়ার দাবিতে "মানববন্ধন ও গণঅবস্থান" বুধবার (৩০ মার্চ) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র-ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ মাহফুজুর রহমান, ক্যাবের উপদেষ্টা ও পরিবেশবিদ প্রফেসর মুক্তিযোদ্ধা ডঃ ইদিস আলী, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক।

প্রজন্ম চট্টগ্রাম'র প্রধান নির্বাহী চৌধুরী জসীমুল হকের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন ন্যাপের সাংগঠনিক সম্পাদক মিটুল দাস গুপ্ত, প্রশিকার উপ-পরিচালক শাহাদত হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ শাহ আলম ভুইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা তৌহিদুল করিম কাজল, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. কে এম মইনুদ্দিন, ক্যাব সদরঘাট থানার শাহীন চৌধুরী, ক্যাব পাহাড়তলী থানার হারুণ গফুর ভুইয়া, ক্যাব চান্দগাঁও থানার মোহাম্মদ জানে আলম, ক্যাব আকবর শাহ থানার দিদারুল আলম প্রধান, যুব গ্রুপের সভাপতি চৌধুরী রিয়াদ, ক্যাব লালখান বাজাররের ঝর্না বড়ুয়া, ক্যাব চকবাজার থানার কাজী রাজেশ ইমরান, সংস্কৃতি সংগঠক প্রণব রাজ্য বডুয়া, ভাস্কর চৌধুরী, প্রকৌশলী লিটন ব্যানার্জী, সিন্সন ভৌমিক, ডা. সুভাষ চন্দ্র সেন, চকবাজার মহিলা আওয়ামীলীগের শেলী বড়ুয়া, প্রশিকার কামাল হোসেন, ক্যাব যুব গ্রুপের এম এ হানিফ নোমান প্রমুখ।

বক্তারা বলেন দেশে ইফতারে প্লেটভর্তি ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, জিলাপি ও মুড়ি ছাড়া হয় না। কিন্তু রোজাদারের স্বাস্থ্যের পক্ষে এসব খাবার কতটুকু উপকারী? স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকার পর সন্ধ্যায় ইফতারিতে ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। ডায়েবেটিস বা বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত রোগীদের অবশ্যই সাহরি ও ইফতারিতে দুধ, ওটস এবং বাদামের মতো হালকা খাবার খাওয়া উচিত। ভাজাপোড়া ও মিষ্টান্নজাতীয় খাবার শরীরে ক্যালরির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই যেসব খাবারে তেল ও শর্করাজাতীয় উপাদান থাকে সেসব খাবার পরিহার করাই শ্রেয়। একইভাবে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদেরও ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া উচিত নয়। বিকল্প হিসাবে খিচুরীও শরীরের জন্য ফলদায়ক বলে মত প্রকাশ করা হয়।

বক্তাগন করোনার লকডডাউন পরবর্তী সময় থেকে নিত্যপণ্যের বাজারে ক্রমাগত উর্ধ্বগতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে ১৮ কোটি মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে অবিলম্বে এই পণ্যমূল্য স্থিতিশীল করতে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি করেন। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন নিত্যপণ্য মূল্যের বাজারে আগুন ও অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে সরকারের কালক্ষেপন সব অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে। আর এভাবে বিষয়টিকে অবজ্ঞার ফল দীর্ঘমেয়াদে সরকারের জনপ্রিয়তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলবে। কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী সবগুলি সরকারের আমলে সরকারের কাধে ভর করে বিপলু পরিমান অর্থ হাতিয়ে নেন। আবার ক্ষমতার পালা বদল হলে সাইনবোর্ড বদল করেন। তাদের কাছে আদর্শ কিছুই না, মানুষের রক্ত চুষে অর্থ লুন্ঠনই মুখ্য। তাই এসমস্ত ব্যবসায়ীদের মিস্টি কথায় না ভিজে সাধারন মানুষের জন্য কিছু করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সাধারন জনগনের দুঃখ দুুুর্দশা লাগবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক হলেও তাঁর অধিনস্তদের আন্তরিকতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে। সে কারনে ১ কোটি পরিবারের জন্য টিসিবির রেশন কার্ড প্রদান, টিসিবির ট্রাক সেল, ওমমএস ও ১০ টাকায় চাল বিক্রির মতো জনহিতকর কর্মসুচি সফল করতে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরী করা হচ্ছে। করোনা পরবর্তী সময় থেকে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপণ্যের বাজারে কারসাজি করে বাজারে আগুন ধরাচ্ছেন। যার কারনে চালের দাম দীর্ঘ দুই বছর ধরেই অস্থির। এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা একবার আলু, একবার পেয়াঁজ, একবার ডাল, আটা-ময়দা এভাবে প্রতিটি পণ্যের বাজারে অস্থিরতা তৈরী করছেন। সরকারের সংস্লিষ্ট সংস্থার লোকজন অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি বন্ধের পরিবর্তে এসমস্ত অসাধু ব্যবসায়ীদের কর্মকান্ডকে বৈধতা প্রদানে সাধারন মানুষের ওপর নানা অভিযোগ তুলছেন। রমজানকে সামনে রেখে দাম বাড়েনি এমন পণ্যের তালিকা খুঁজে পাওয়া কঠিন। এ অবস্থায় গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীদেরকে সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে বর্জনের আহবান জানানো হয়েছে।