ময়মনসিংহের ৩০ শতাংশ বীজের চাহিদা পূরণ করছে বাকৃবি

আবুল বাশার মিরাজ, বাকৃবি প্রতিনিধি:বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) খামার ব্যবস্থাপনা শাখার অধীনে প্রতি বছর আউশ, আমন ও বোরো মৌসুমে প্রায় ৫০০ টন উচ্চ ফলনশীল ধানের বীজ উৎপাদন করা হয়ে থাকে। যা দিয়ে ময়মনসিংহ সদর অঞ্চলের কৃষকদের ২৫ থেকে৩০ শতাংশ বীজের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। এছাড়াও উৎপাদিত বীজ বিক্রি করে বাকৃবির খামার ব্যবস্থাপনা শাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা জমা দিয়েছে।

শুক্রবার (১ এপ্রিল) সকাল ১১টায় বাকৃবির খামার ব্যবস্থাপনা শাখায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ওই শাখার উপ-প্রধান তত্ত্বাবধায়ক মো. জিয়াউর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, বাকৃবির কৃষির সার্বিক উন্নয়ন ও গবেষণা কার্যক্রমের মধ্যে খামার ব্যবস্থাপনা শাখা অন্যতম। খামার ব্যবস্থাপনা শাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চাষকৃত জমিগুলোর তত্ত্বাবধায়ন করে। এ শাখার অধীনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি শিক্ষার্থীরা হাতে কলমে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ পাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুর দিকে ৭৭৪ একর জমি এই শাখার অধীনে ছিল। বর্তমানে এই শাখার অধীনে ২১৫ দশমিক ১১ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে আবাদী জমি রয়েছে ১৭০ দশমিক ৬২ একর। বিএডিসি ও বিনার মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় খামার ব্যবস্থাপনা শাখায় আউশ, আমন, বোরো মৌসুমে ধান, সরিষা, গম ও সয়াবিন ফসল উৎপাদন করা হয়। বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ নিয়েই আবাদযোগ্য সকল জমি চাষের আওতায় এনে আয় বৃদ্ধি এবং এই অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা করছে খামার ব্যবস্থাপনা শাখা ।

সংবাদ সম্মেলনে খামার ব্যবস্থাপনা শাখার প্রধান তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক ড. মো. রমিজ উদ্দিন জানান, বাকৃবির খামার ব্যবস্থাপনা শাখা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে উন্নত জাতের বীজ উৎপাদন করছে। এই শাখার অধীনে কোনো জমিই অনাবাদি রাখা হয় না। বছরের তিন মৌসুমেই জমিগুলোতে বীজ চাষাবাদ করা হয়। এ পর্যন্ত খামার ব্যবস্থাপনা শাখায় ব্রি ধান ২৮,২৯,৮১,৮৪,৯২,৯৬, বাউ ধান৩, বঙ্গবন্ধু ধান১০০, বিনা ধান-৮,১০,২৫ সহ অনেক উন্নত জাতের বোরো ধানের বীজ মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষা এবং সেগুলোকে সারা বাংলাদেশের কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, খামার ব্যবস্থাপনা শাখায় বীজ উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের কৃষি ও কৃষক উপকৃত হচ্ছে, পাশপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) সাথে বীজ উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বীজ উৎপাদনের মাধ্যমে খামার ব্যবস্থাপনা শাখা সরাসরি দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএডিসির বীজ বিভাগের উপপরিচালক সঞ্জয় রায় ও সার বিভাগের সহকারী পরিচালক হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদসহ খামার ব্যবস্থাপনা শাখার অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।