ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১-সবার জন্য মানসম্পন্ন, নিরাপদ এবং পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা

Category: ফার্ম টু ডাইনিং Written by agrilife24

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: ঢাকার দুই কোটিরও বেশি জনসংখ্যার সকলকে সাশ্রয়ী মূল্যে, নিরাপদ এবং পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১ তৈরির জন্য আজ একটি সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা ফুড এজেন্ডার লক্ষ্য হল শহরের বর্তমান ও ভবিষ্যত খাদ্য চাহিদা পূরণের জন্য একটি সমন্বিত সমাধান তৈরি করা।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা যৌথভাবে ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আজকের সেমিনারের আয়োজন করে।

ঢাকা মহানগর, যা চারটি সিটি কর্পোরেশনকে (ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুর) নিয়ে গঠিত-বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মহানগর হতে চলেছে৷ দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে শহরের নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষের কাছে সুলভে খাবার যোগান দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ঢাকার জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে, যারা নিজেদের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করতে পারেন না। স্বাস্থ্যকর খাবারের দুর্লভতা এবং খাদ্য নিরাপদতা জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এই সমস্যাগুলো আরও বেশি প্রকট হয়ে উঠেছে।

নেদারল্যান্ডসের ওয়াগেনিনজেন ইউনিভার্সিটি অফ রিসার্চ এর প্রযুক্তিগত সহায়তায় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্প সরকার সহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে একটি প্রমাণ-ভিত্তিক এবং সহযোগিতামূলক পদ্ধতিতে ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১ তৈরি করতে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করছে।

ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১ হবে মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিডি) এবং ঢাকার চারটি সিটি কর্পোরেশনের একটি সমন্বিত লক্ষ্যের নথি।  এই এজেন্ডাটি গবেষণা, পরীক্ষামূলক উদ্যোগ এবং পরামর্শের মাধ্যমে তৈরি করা হবে। এটি গত বছরের জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থা শীর্ষ সম্মেলনের পর পরিকল্পিত কাজের পরিপূরক হিসেবে জাতীয় নীতিতে নগর খাদ্য ব্যবস্থা পরিকল্পনাকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দেশের নীতিনির্ধারকদের সহায়তা করবে।  আশা করা যাচ্ছে যে ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১ অন্যান্য মহানগরগুলোর জন্য অনুরূপ কৌশল তৈরির ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সেক্রেটারি হেলাল উদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী, তাজুল ইসলাম, এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির মাননীয় মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস। বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত অ্যানে ভ্যান লিউয়েন এবং বাংলাদেশে  জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিনিধি রবার্ট ডি. সিম্পসন এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।



নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের অর্থায়নে পরিচালিত ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পটি শহরের সকল বাসিন্দাদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের, উচ্চ মানের খাবারের সহজলভ্যতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। আজকের আয়োজনে বক্তব্য রাখার সময় প্রকল্পটির চীফ টেকনিকাল অ্যাডভাইজার, জন টেলর, বলেন: “ঢাকা শহরের খাদ্য ব্যবস্থার ভবিষ্যত প্রতিকূলতা মোকাবেলা করার জন্য প্রয়োজন অগ্রগামী চিন্তাভাবনা, উদ্ভাবনী সমাধান, কার্যকর নীতি, বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতা এবং সিটি কর্পোরেশনের প্রতিশ্রুতি।“

সেমিনারে প্রকল্পের কিছু সাফল্যও দেখানো হয়েছে যার ফলে সরকারের ন্যাশনাল পাথওয়ে ২০২১ এবং পারস্পেক্টিভ প্ল্যান ২০৪১ বিষয়ে আলোচনা করার সুযোগ হয়।

ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের লক্ষ্য হলঃ
•    খাদ্য ব্যবস্থার পরিকল্পনা ও প্রশাসন
•    পুষ্টি এবং খাদ্য নিরাপত্তা
•    কাঁচাবাজারের উন্নয়ন
•    খাদ্যের অপচয় ও ক্ষতি হ্রাস
•    খাদ্য নিরাপদতা এবং ভোক্তা সচেতনতা উন্নয়ন
•    খাদ্য শৃঙ্খল (ফুড ভ্যালু চেইন) মজবুত করা