ধানের ব্লাস্ট রোগ দমনে করনীয়

Category: গবেষণা ফিচার Written by agrilife24

সমীরন বিশ্বাস:ধানের যে সমস্ত রোগের কারণে ধান চাষীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয় তারমধ্যে ধানের ব্লাস্ট রোগ অন্যতম। বোরো ও আমন মৌসুমে সাধারণত এ রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। অনুকূল আবহাওয়া এ রোগের আক্রমণে ফলন শতভাগ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। চারা অবস্থা থেকে শুরু করে ধান পাকার আগ পর্যন্ত যেকোনো সময়ের রোগটি দেখা দিতে পারে। তাই চাষী ভাইদের রোগটি সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। 

 ব্লাস্ট রোগ প্রধানত ০৩ প্রকার, যথাঃ
(১) পাতা ব্লাস্ট বা Leaf Blast
(২) গীট ব্লাস্ট বা Node Blast Neck Blast
(৩) শীষ ব্লাস্ট বা Neck Blast

পাতা ব্লাস্ট বা Leaf Blast:
১. পাতায় ছোট ছোট ডিম্বাকৃতির সাদা বা বাদামি দাগ দেখা দেয়।
২. পর্যায়ক্রমে সমস্ত পাতা ও ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ে।
৩. আক্রমণ বেশি হলে ক্ষেতের বিভিন্ন স্থানে রোদে পুড়ে যাওয়ার মতো দেখা যায়।
৪. আক্রান্ত ক্ষেতে অনেক সময় পাতা ও খোলের সংযোগস্থলে কালো দাগ দেখা দেয় যা পরবর্তীতে পচে পাতা ভেঙে পড়ে ফলন বিনষ্ট হয়।

গীট ব্লাস্ট বা Node Blast:
১. ধানের থোড় বা গর্ভবতী অবস্থায় এ রোগ হলে গীটে কালো দাগের সৃষ্টি হয়।
২) গিঁট আক্রান্ত হলে আক্রান্ত স্থান কালো ও দুর্বল হয়। জোরে বাতাসের ফলে আক্রান্ত স্থান ভেঙে পড়ে কিন্তু একদম আলাদা হয় না, ফলে আক্রান্ত গিটের উপরের অংশ মারা যায়।

শীষ ব্লাস্ট বা Neck Blast:
১) শীষ অবস্থায় এ রোগ হলে শীষের গোড়া কালো বা বাদামী হয়ে যায়।
২) আক্রমণ বেশি হলে শীষের গোড়া ভেঙ্গে যায়।
৩) ধান পুষ্ট হওয়ার পূর্বে রোগের আক্রমণের ফলে শীষের সব ধান চিটা হয়ে যায়।

দমন ব্যবস্থা
টেবুকোনাজল + ট্রাইফ্লক্সিস্ট্রবিন (মনা২৮এসসি এবং এগবেন৫০%এফ,  জেনেটিকা লিমিটেড) ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে চারা রোপণের ৫০ দিন পর হতে ১২-১৪ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করা।

সতর্কতাঃ
১, ব্লাস্ট প্রতিরোধি জাত নির্বাচন করা
২, বীজ শোধন করে বীজতলা করা
৩, আক্রান্ত গাছের বীজ ব্যবহার না করা
৪, সুষম সার প্রয়োগ,  খেত আগাছা মুক্ত রাখা এবং গুছির সঠিক দূরত্ব  বজায় রাখা।  
৫, খেতে পর্যাপ্ত আলো (রোদ) - বাতাস এর  সুযোগ  করে দেয়া।
৬, গাছ আক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই  বা শুরুতেই ছত্রাক নাশক-" মনা ২৮ এসসি"  নিয়মিত ব্যবহার করা।

লেখক:কৃষি ব্যক্তিত্ব