সুস্থভাবে হজব্রত পালনে শারিরীক সুস্থতা অত্যন্ত জরুরি

Category: ইসলাম ও জীবন Written by agrilife24

ইসলামিক ডেস্ক:দেশ থেকে আল্লাহর মেহমান হিসেবে হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে যারা গেছেন বা যারা যাচ্ছেন তাদের জন্য শারিরীক সুস্থতা অত্যন্ত জরুরি। হজ একটি কঠোর পরিশ্রমের কাজ। সাঈ করা, আরাফাত থেকে মিনা ময়দানে যাওয়া, তাওয়াফ করাসহ বেশিরভাগ কাজই করতে হয় হেঁটে। তাই আগে থেকে হাঁটার অভ্যাস না থাকলে যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। তাই সুস্থভাবে হজ পালন করতে হলে সচেতনতার বিকল্প নেই। এছাড়া আমাদের দেশের সঙ্গে সৌদি আরবের আবহাওয়ার বেশ পার্থক্যের কারণে হাজিরা নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হন।

হজে এক রুমে বেশ কয়েকজন থাকতে হয়। এ ছাড়া আরাফাত ময়দান ও মিনায় খোলা আকাশে রাতযাপন করতে হয়। এখানে বাথরুমের ব্যবস্থা অপ্রতুল। অনেক সময় তা অস্বাস্থ্যকর। এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। রাস্তার খোলা খাবার খাবেন না।

গরমের মধ্যে আপনার ত্বকে বিভিন্ন ধরনের র‌্যাশ হতে পারে। পেট্রোলিয়াম জেলি লাগাতে পারেন। রোদে পোড়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। রোদে গেলে সানগল্গাস ব্যবহার করুন। পাওয়ার যুক্ত চশমা পরলে তা অটোসান করে নিন। বাইরে বেরোলে মাথায় স্কার্ফ জাতীয় লম্বা কাপড় দিয়ে ঢেকে নিন।

হজের সময়ের কমন সমস্যা শ্বাসতন্ত্রের ইনফেকশন। এ সমস্যা সমাধানে প্রচুর পানি পান করুন। জ্বর ও ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল, লবণ দিয়ে গরম পানি গড়গড়া ও গরম পানি পান করুন। হাঁচি-কাশির সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখুন। বাইরে থেকে এসেই হাত-মুখ ধুয়ে ফেলুন। ডায়াবেটিস রোগীরা হজে যাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আপনার ওষুধ বা ইনসুলিন নিলে তার ডোজ পরিবর্তন করতে হবে কি-না জেনে নিন। হজে থাকার সময়ও নিয়ম করে ওষুধ সেবন করুন বা ইনসুলিন নিন। হাইপো অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সব সময় মধু বা মিষ্টি জাতীয় খাবার সঙ্গে রাখুন।

হজের সময় হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে। কখনই একটানা শারীরিক পরিশ্রম করবেন না বা লম্বা সময়ের জন্য হাঁটবেন না। হিটস্ট্রোকের উপসর্গ দেখা দেয়ামাত্র আক্রান্ত ব্যক্তিকে রোদ থেকে সরিয়ে ঠাণ্ডা জায়গায় নিতে হবে। শরীরের কাপড় যতটুকু সম্ভব খুলে ফেলে শরীরে ঠাণ্ডা পানি ঢালতে হবে তবে বরফ-শীতল পানি ঢালা যাবে না। রোগীকে বাতাস করতে হবে। কুচকি ও বগলের নিচে আইস প্যাক রাখলে তাপমাত্রা দ্রুত কমে আসবে। হজের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মাঝে সময় পেলেই ঠাণ্ডা জায়গায় বসে কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম করুন।

রোদে বেরুলে অবশ্যই ছাতা নেবেন। সব সময় বেশি বেশি পানি, শরবত, স্যালাইন ও ফলের জুস পান করতে হবে। ভিড়ের মধ্যে যাবেন না। ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করার সময় তাড়াহুড়া করবেন না। হিটস্ট্রোকের উপসর্গ দেখা দিলে ভিড় থেকে সরে যান।
সঙ্গে রাখুন কাশির ওষুধ, খাবার স্যালাইন, দরকারি অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিবায়োটিক অয়েন্টমেন্ট, কাটাছেঁড়ার জন্য পভিডন আয়োডিন, স্যাভলন, ব্যান্ডেজ, কটন, প্যারাসিটামল ও কিছু ব্যথানাশক ওষুধ যেমন_ ডাইক্লোফেনাক, কিটোরোলাক, গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ ওমিপ্রাজল। আপনি যেসব ওষুধ নিয়মিত সেবন করেন সেগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে দেশ থেকে নিয়ে যান। আপানার সঙ্গে আপনার চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র সঙ্গে রাখুন। মহান আল্লাহ সবাইকে সুস্থভাবে হজ সম্পন্ন করার তৌফিক দিন।-আমিন