
বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) তৃতীয়বারের মতো শুরু হয়েছে ন্যাশনাল ক্যারিয়ার কার্নিভ্যাল । শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম কনফারেন্স কক্ষে এর প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে বাকৃবি ক্যারিয়ার ক্লাব (বাউসিসি)। আগামী শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যালিপ্যাডে কার্নিভালের দ্বিতীয় পর্ব 'জব ফেয়ার' অনুষ্ঠিত হবে।
বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিক সাফল্যের পর এবারও কার্নিভালটি শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন। এবছর অনুষ্ঠানের মূল স্পন্সর হিসেবে রয়েছে এসিআই এনিমেল হেলথ, এসিআই মোটরস এবং ইনজেনিয়াস ।
কার্নিভালের প্রথম দিন ছিল নিবন্ধিত অংশগ্রহণকারীদের জন্য বিশেষ সেশন ও আলোচনা ও কর্মশালা। এদিন বিশেষজ্ঞদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয় চাকরি কেন্দ্রিক বিভিন্ন কর্মশালা। মূল সেশনগুলোর মধ্যে ছিল; সিভি ও ইন্টারভিউ কৌশল, সৃজনশীল কর্মক্ষেত্র পরিচিতি, উদ্যোক্তা ও স্টার্ট-আপ দিকনির্দেশনা, বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ, সরকারি চাকরির প্রস্তুতি এবং শিল্প ক্ষেত্রে নেতাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা শোনার আয়োজন।
বাকৃবি ক্যারিয়ার ক্লাবের (বাউসিসি) সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আকতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. জিএম মুজিবুর রহমান। অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ (চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবির, ক্লাবের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. নাহিদ সাত্তার।
বক্তাদের মধ্যে ছিলেন এসিআই এনিমেল হেলথের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন, এভারেস্ট জয়ী পর্বতারোহী ও চিকিৎসক ডা. বাবর আলী, ক্রিকেট অ্যানালিস্ট ও ইন্টারন্যাশনাল কমেন্টেটর সৈয়দ আবিদ হুসাইন সামি।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ (চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবির বলেন, বাংলাদেশে আজ যেসব বড় বড় কর্পোরেট কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেগুলোর গড়ে ওঠার পথ লক্ষ্য করলে একটি বিষয় স্পষ্ট হয় যে দীর্ঘমেয়াদি স্বপ্ন, অ্যাকাডেমিক জ্ঞান ও দক্ষতার সঠিক প্রয়োগই সফল ক্যারিয়ারের মূল ভিত্তি। ঠিক সেইভাবেই তোমরাও নিজ নিজ ভবিষ্যৎকে গড়ে তুলতে পারো। আমরা তোমাদের যেসব অ্যাকাডেমিক উপকরণ ও পাঠ দিচ্ছি, সেগুলো মনোযোগ দিয়ে গ্রহণ করো এবং নিজের স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে যাও।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণমূলক ভালো কাজের সাথে তোমাদের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও পাশে থাকবে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতোমধ্যে মন্ত্রী, সচিব, প্রাইভেট কোম্পানি ও ব্যাংকের এমডি, আন্তর্জাতিক সংস্থার কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভসহ অসংখ্য গুণী ব্যক্তিত্ব তৈরি হয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি তোমরাও চেষ্টা করলে এরকম সফলতা অর্জন করতে পারবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. জিএম মুজিবুর রহমান বলেন, এই কার্নিভাল শুধুমাত্র চাকরি খুঁজে দেওয়ার মঞ্চ নয়, এটি আমাদের শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এখানে তারা দেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর সাথে সরাসরি পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে, যা তাদের পেশাগত জীবনে বিশাল সুবিধা দেবে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমরা চাই আমাদের গ্র্যাজুয়েটরা কেবল চাকরিপ্রার্থী না হয়ে চাকরিদাতা হোক। উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য যে অনুপ্রেরণা ও জ্ঞান দরকার, এই কার্নিভাল সেই বীজ বপন করেছে। আমি বিশ্বাস করি, এই ইভেন্ট বাংলাদেশের কৃষি খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
উল্লেখ্য দ্বিতীয় দিনে এসিআই ক্রপ কেয়ার, বেঙ্গল মিট, নারিশ, ইউএসএসবিডি, ইন্টারেক্টিভ কেয়ারস, এসিআই গোদরেজ, সিপি গ্রুপ, প্রভিটা, মেটাল, সিনজেনটা, স্কয়ার এর মতো কোম্পানির এবং দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক সম্পন্নকারীদের সমন্বয়ে জব ফেয়ার অনুষ্ঠিত হবে।