সৎকর্মের প্রতিদান মহান আল্লাহ অবশ্যই প্রদান করবেন

Category: ইসলাম ও জীবন Written by agrilife24

ইসলামিক ডেস্ক: মুমিন-মুসমানদের সুযোগ পেলেই সৎকর্ম করার চেষ্টা করা প্রয়োজন। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম হাতিয়ার হলো সৎকর্ম করা। যে মুমিন মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একনিষ্ঠভাবে সৎকর্ম করবে, মহান আল্লাহ তাকে হায়াতে তাইয়্যেবাহ দান করার ঘোষণা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি মুমিন থাকা অবস্থায় সৎকর্ম করবে, সে পুরুষ হোক বা নারী, আমি অবশ্যই তাকে উত্তম জীবন-যাপন করাব এবং তাদেরকে তাদের উৎকৃষ্ট কর্ম অনুযায়ী প্রতিদান অবশ্যই প্রদান করব। ’ (সুরা নাহল, আয়াত : ৯৭)

বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন, ‘ভালো কোনো কিছু দান করাকে হীন মনে করে না, এমনকি হোক সেটা ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৫৮৪)

তাই ছোট হোক বা বড়, সৎকর্মের সুযোগ হলে তা কখনোই হাতছাড়া না করা। মানুষের ছোট একটি সৎকর্মও যদি মহান আল্লাহর কাছে পছন্দ হয়, তবে এর বিনিময়ে মহান আল্লাহ বান্দার গোটা জীবনের গুনাহ ক্ষমা করে দেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এক ব্যক্তি কখনো কোনো ভালো কাজ করেনি, শুধু একটি কাঁটাযুক্ত ডাল রাস্তা থেকে সরিয়েছিল। হয়তো ডালটি গাছেই ছিল, কেউ তা কেটে ফেলে রেখেছিল অথবা রাস্তায়ই পড়ে ছিল। সে তা সরিয়ে ফেলেছিল। আল্লাহ তার এই কাজ গ্রহণ করলেন এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালেন। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫২৪৫)

সুবহানাল্লাহ! রাস্তা থেকে একটি গাছের ডাল সরাতে লোকটির হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হয়নি, খুব বেশি শক্তি বা সময়েরও প্রয়োজন হয়নি, শুধু পরিশুদ্ধ অন্তরে সামান্য এই কাজটি করেই লোকটি মহান রবের সন্তুষ্টি অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘এক ব্যভিচারিণীকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। সে একটি কুকুরের কাছ দিয়ে যাচ্ছিল। তখন সে দেখতে পেল কুকুরটি একটি কূপের পাশে বসে হাঁপাচ্ছে। বর্ণনাকারী বলেন, পানির পিপাসা তাকে মুমূর্ষু করে দিয়েছিল। তখন সেই নারী তার মোজা খুলে উড়নার সঙ্গে বাঁধল। অতঃপর সে কূপ থেকে পানি তুলল (এবং কুকুরটিকে পানি পান করাল) এ কারণে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হলো। ’ (বুখারি, হাদিস : ৩৩২১)

এই হাদিস দ্বারাও বোঝা যায়, ছোট একটি সৎ কাজ মানুষের গোটা জীবনের গুনাহ থেকে ক্ষমা পাওয়ার মাধ্যম হয়ে যেতে পারে। আবার এর বিপরীতে ছোট একটি অসৎ কর্মও কিন্তু গোটা জীবনের আমল ধ্বংস করতে পারে।

আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এক স্ত্রী লোককে একটি বিড়ালের জন্য ‘আজাব দেওয়া হয় এ জন্য যে সে বিড়ালটিকে আটকে রেখেছিল, পরিশেষে সেটি মারা গেল। যার জন্য সে জাহান্নামে গেল। যে মেয়ে লোকটি বিড়ালটিকে বেঁধে রেখেছে, নিজেও পানাহার করায় নি আর সেটিকে ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে জমিনের পোকামাকড় খেয়ে বাঁচতে পারে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৫৭৪৫)

অবলা প্রাণীকে অহেতুক কষ্ট দেওয়া অনেক বড় পাপ হলেও আমাদের সমাজে এসব কাজকে হালকাভাবে নেওয়া হয়। অথচ আমাদের দৃষ্টি এসব হালকা অসৎ কর্মেও জীবনের সব নেক আমল ধ্বংস হতে পারে। তাই আমাদের উচিত সুযোগ পেলেই সৎকর্মে আত্মনিয়োগের ব্যাপারে সচেষ্ট হওয়া। এবং ছোট ছোট অসৎ আমলও পরিহার করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা। আসুন আমরা সকলেই সৎকর্মের দিকে মনোনিবেশ করি। পরিবার থেকে সমাজ তথা রাষ্ট্রকে সুন্দর করে গড়ে তুলি। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের শয়তানের সকল প্রকার ধোঁকা থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দিন।-আমিন