বাঙালি জাতি কখনো বিশ্ব মোড়লদের ধার ধারে নাঃ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্রই ফরিদপুরের মাটিতে বরদাশত করা হবে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আব্দুর রহমান। আজ শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা লেক উন্নয়ন প্রকল্পের (১ম সংশোধিত) ১৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান এমপি বলেছেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ শুধু পদ্মা সেতুই নয়, এই স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ প্রতিবাদের ভাষা। এই স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ বাঙালি জাতির উন্নয়নের প্রতীক। নিজস্ব অর্থায়নে এই পদ্মা সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে সারা পৃথিবীর মোড়লদেরকে শেখ হাসিনা প্রমাণ করে দিয়েছেন, বিশ্ব মোড়লের ধার এই বাঙালি জাতি কখনোই ধারেনা, কখনো ধারবেও না।

শেখ হাসিনা সমস্ত সহমর্মিতা ও ভালোবাসা দিয়ে ফরিদপুরের মানুষের পাশে আছেন তেমনি ফরিদপুরের মানুষও শেখ হাসিনার পিছনে ইস্পাত ঐক্য নির্মাণ করবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্রই আওয়ামী লীগের নেতারা ফরিদপুরের মাটিতে বরদাশত করবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে সামনে নিয়েই উন্নয়নের ও স্বপ্নের ফরিদপুর গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

এসময় মন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেন, ফরিদপুরবাসীর স্বপ্ন পূরণের রাস্তা সুগম হবে খুব শিঘ্রই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুইশো কোটি টাকা ব্যয়ে টেপাখোলা লেক সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এই টেপাখোলা লেককে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠবে ফরিদপুরের নতুন উপশহর। তিনি বলেন, এই ফরিদপুরবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন খুব শিঘ্রই পূরণ হতে চলেছে। আমি এখনই তা প্রকাশ করতে চাইনা।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা, যিনি তাঁর জীবনের সবকিছু হারিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে এই বাংলার মাটিতে পদার্পণ করেছিলেন। সেদিন বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন ছোট বোন শেখ রেহানাকে বুকে জড়িয়ে ধরে শপথ করে বলেছিলেন, আমার যেই পিতা এই দেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর জন্যে, এই দেশের মানুষের ভাত কাপড় জোগাড় করার জন্যে, এ দেশের মানুষের একটা স্বাধীন পতাকা দেয়ার জন্যে, এই দেশের মানুষকে স্বাধীন সত্ত্বায় পাহাড়, পর্বত, নদী, সাগর, সৈকত উপহার দেয়ার জন্য জীবন পণ লড়াই করেছিলেন, অবশেষে জীবন দিয়ে বাঙালির ঋণ তিনি পরিশোধ করে গেলেন। ছোট বোন শেখ রেহানাকে বুকের পাঁজর মেলে বুকে জড়িয়ে ধরে সেই শোক সেদিন তাঁরা সইবার চেষ্টা করেছিল বলে এসময় তিনি মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, কষ্টের নীল দরিয়া সাঁতরিয়ে সাঁতরিয়ে শেখ হাসিনা বাংলার মানুষের কাছে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। শেখ হাসিনা শেরে বাংলা নগরে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবশে বলেছিলেন, জাতির পিতা আপনাদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য জীবন দিয়েছেন, প্রয়োজনে আমার বাবার মত আমি জীবন দেব, তবু আমি বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফুটাবোই ফুটাবো। আর সেই থেকে তার এই বিরামহীন যাত্রা, সেই বিরামহীন যাত্রায় এই বাংলাদেশকে তিনি কোথায় নিয়েছেন তা আজকে স্কুল ছাত্র জানে, কৃষক-শ্রমিক জানে। আজকে বাংলাদেশের সীমারেখা অতিক্রম করে বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে শেখ হাসিনা সমাদৃত।

উন্নয়নের মহাসড়কে আমরা দাঁড়িয়ে আছি উল্লেখ করে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ফরিদপুরের টেপাখোলা লেকের হারানো যৌবন ফিরিয়ে আনা হবে ও টেপাখোলা লেককে ঘিরে নতুন করে উপশহর গড়ে উঠবে।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে ফরিদপুর—২ আসনের সংসদ সদস্য আয়মন আকবর চৌধুরী লাবলু, ফরিদপুর—৩ আসনের সংসদ সদস্য এ কে আজাদ, ফরিদপুর—৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ঝর্ণা হাসান, ফরিদপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুজ্জামান খান, টেপাখোলা লেক উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক সাজ্জাদ আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ, পৌর মেয়র অমিতাভ বোসসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

টেপাখোলা লেক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান এমপি ফরিদপুর এলজিইডি ভবনে পল্লী কর্ম সংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি-৩ প্রকল্পের আওতায় দুস্থ্য মহিলাদের মাঝে চেক বিতরণ করেন।

এছাড়া বিকেল সাড়ে তিনটায় নির্বাচনী এলাকার ফরিদপুর সদর ও বোয়ালমারী উপজেলার সংযোগস্থল কাদিরদী বাজারের কুমার নদে ৮০ মিটার ব্রীজ উদ্বোধন এবং বিকেল সাড়ে ৪টায় মধুখালী উপজেলার কামারখালী ভায়া জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক উদ্বোধন শেষে স্থানীয়দের আয়োজনে এক জনসভায় বক্তব্য রাখেন।