এগ্রিলাইফ২৪ ডটকমঃ ক্যাডার যার মন্ত্রণালয় তার, উপসচিব পদে বিদ্যমান কোটা বিলোপ ও সকল ক্যাডারের মধ্যে সমতার বিধানসহ আট দফা দাবিনামা উপস্থাপন করেছে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ বরিশাল জেলা শাখার কর্মকর্তারা। শনিবার (২৬ অক্টোবর) বরিশাল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব দাবিনামা উপস্থাপন করেন।
পরিষদের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বরিশাল জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক মোহাম্মদ ওমর ফারুক দেওয়ান পরিষদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর মোঃ সোহরাব হোসেন হাওলাদার। অন্যান্য কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কৃষি ক্যাডারের মোঃ খায়রুল ইসলাম মল্লিক , শিক্ষা ক্যাডারের মোঃ মাসুম বিল্লাহ , স্বাস্থ্য ক্যাডারের মোঃ মাজহারুল রেজোয়ান, সমবায় ক্যাডারের মোঃ মোস্তফা, তথ্য বেতার ক্যাডারের মোঃ জাহিদ হোসেন । সভায় বিভিন্ন ক্যাডারের শতাধিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আট দফা দাবিনামার প্রথম দফায় বলা হয়, দক্ষ, প্রফেসনাল, আধুনিক ও সময়োপযুগী সেবা ব্যবস্থা চালু করে জনগণের কাংখিত সেবা নিশ্চিত করতে ‘ক্যাডার যার মন্ত্রণালয় তার’-এই ফরমুলায় জনপ্রশাসন তথা জনসেবা ব্যবস্থাপনা পুনর্গঠন করতে হবে। দ্বিতীয় দফায় বলা হয়, মেধাভিত্তিক, বৈষম্যহীন ও কোটামুক্ত সরকার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে উপসচিব ও তদোর্ধ পদকে ক্যাডার বহির্ভূত পদ ঘোষণা করে সকল ক্যাডার থেকে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দিতে হবে। অর্থাৎ ১৯৭৯ সালের সিনিয়র সার্ভিস পুল (এসএসপি) পদ্ধতি চালু করতে হবে। তৃতীয় দফায় কর্মকর্তারা সকল ক্যাডারের মধ্যে পদোন্নতি, গ্রেড, প্রিভিলেজ, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে সমতার নীতি অবলম্বন করে সকল ক্যাডারের মধ্যে ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতির দাবি করেন।
আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ এর সুপারিশের ভিত্তিতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশণে নতুন করে তিনজন সদস্য নেওয়া হলেও তারা চতুর্থ দফায় বৃহত্তর সকল ক্যাডারের প্রতিনিধিত্ব দাবি করেন। কমিশনের অফিস সচিবালয়ে থাকায় কমিশন সদস্যদের সাথে যোগাযোগের প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করে তা বাইরে স্থানান্তরের দাবি করেন পঞ্চম দফায়। প্রস্তাবনার ষষ্ঠ দফায় জনপ্রশাসন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ একজন বুদ্ধিজীবীকে কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করার দাবি করেন তারা। সপ্তম দফায় ‘জনপ্রশাসন’ শব্দ বাতিল করে ‘জনসেবা’ বা ‘জন ব্যবস্থাপনা অথবা উপযুক্ত শব্দ গ্রহণ করে সিভিল সার্ভিসকে জনগণের সেবক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার দাবি করেন। অষ্টম দফায় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনকে প্রত্যেক ক্যাডার থেকে সংস্কারের প্রস্তাব গ্রহণ করার দাবি করেন।
২৩টি ক্যাডারে গ্রেড-১ পদে কোন কর্মকর্তা নেই। তথাকথিত ফিডারের নামে সকল ক্যাডারে পদোন্নতি আটকে রাখা হয়েছে। কিন্তু এমন অনেক কর্মকর্তা আছেন যাদের চাকরি ২৫ বছরের উর্ধে এমন কি ৩০ বছরও হয়েছে। তাই ফিডার পূর্ণতার নামে কর্মকর্তার পদোন্নতি আটকে রাখার চক্রান্ত পরিহার করার আহ্বান জানান কর্মকর্তারা। তারা বলেন, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য পরিষদ দেশের ২৬টি ক্যাডারের মধ্যে ২৫টি ক্যাডারকে প্রতিনিধিত্ব করে। প্রায় ৬০ হাজার কর্মকর্তার মধ্যে ২৫টি ক্যাডারে প্রায় ৫৩ হাজার কর্মকর্তা চাকরি করে। দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি, জনসেবা, অবকাঠামো নির্মাণ, রাজস্ব আদায় এই ২৫টি ক্যাডারের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। তাই ২৫টি ক্যাডারকে পাশ কাটিয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার সম্ভব নয়। সিভিল সার্ভিসে সকল বৈষম্য দূর করে জনকল্যাণমূখী সেবা ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা করতে তাই সকল ক্যাডারের সাথে মতবিনিময় করে সুপারিশ গ্রহণের জন্য কমিশন সদস্যদের আহ্বান জানান।