এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: মাঝারি বাজেটের ফোনের বাজারে নজর কেড়েছে ইনফিনিক্স নোট ৪০ প্রো। প্রিমিয়াম ডিজাইনের সঙ্গে ফোনটিতে আরও আছে উদ্ভাবনী ফিচার ও সুপার-ফাস্ট চার্জিং। কিন্তু মাঝারি বাজেটের স্মার্টফোনের বাজারে ফোনটিকে তুমুল প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হয়। চলুন দেখে নেওয়া যাক, দাম বিবেচনায় ইনফিনিক্স নোট ৪০ প্রো তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় কতটা এগিয়ে আছে।
উদ্ভাবনী চার্জিং প্রযুক্তি
অ্যান্ড্রয়েড ফোনে প্রথমবারের মতো ম্যাগচার্জ প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে ইনফিনিক্স নোট ৪০ প্রো। এতে আছে ৫০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি, দ্রুতগতির ৭০ ওয়াটের ওয়্যারড চার্জিং এবং সুবিধাজনক ২০ ওয়াটের ওয়্যারলেস চার্জিং। ফোনটির সঙ্গে দেয়া হয় ইনফিনিক্স ম্যাগকিট। যাতে রয়েছে ম্যাগকেস ও ম্যাগপাওয়ার, ফলে যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায় ডিভাইসটি চার্জ দেওয়া যায়। ম্যাগকিটের সাহায্যে ব্যবহারকারীরা কোনো বাড়তি অ্যাক্সেসরিজ বা ক্যাবল ছাড়াই ফোনটি চার্জ দিতে পারবেন। এতে চার্জিং আরও সহজ ও দ্রুততার সঙ্গে হয় বলে সময় বাঁচে।
ইনফিনিক্সের চিতা এক্সওয়ান চিপসেটে চালিত অল-রাউন্ড ফাস্ট চার্জ ২.০ প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে শক্তির সমবণ্টনের মাধ্যমে ব্যাটারির স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে। এর হাইপার চার্জিং মোডে মাত্র ১৬ মিনিটে ডিভাইসটি ৫০% চার্জ হয়।
ডিভাইসটির অন্যান্য ফিচারের মধ্যে আছে ওয়্যারড ও ওয়্যারলেস রিভার্স চার্জিং। যার সাহায্যে ওয়্যারলেস চার্জিং সাপোর্ট করে এমন ডিভাইসে সহজেই চার্জ দেওয়া যায়।
শক্তিশালী প্রসেসর
মিডিয়াটেক হেলিও জি৯৯ আল্টিমেট প্রসেসর পাওয়ারড বাই ইনফিনিক্স নোট ৪০ প্রোতে আছে ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজ। ব্যবহারকারীরা একইসাথে একাধিক অ্যাপ চালানোর পাশাপাশি কোনো ল্যাগ ছাড়াই নির্বিঘ্নে সব দৈনন্দিন কাজ সারতে পারেন। অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ফোনের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া প্রতিরোধে স্মার্টফোনটি ভেপার চেম্বার (ভিসি) লিকুইড কুলিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে। ফলে অতিরিক্ত ব্যবহারেও ফোন গরম হয় না।
অ্যান্ড্রয়েড ১৪-এর ওপর ভিত্তি করে এক্সওএস ১৪ দ্বারা পরিচালিত হয় ইনফিনিক্স নোট ৪০ প্রো। অবশ্য ডিভাইসটির জন্য দুই বছরের সফটওয়্যার আপডেট এবং তিন বছরের সিকিউরিটি প্যাচ দেবে ইনফিনিক্স।
প্রিমিয়াম ডিজাইন
নোট ৪০ প্রো-তে দেখা যায় ইনফিনিক্সের স্কাইস্ক্রেপার মেটালাইন ফিনিশ ও স্লিক ডিজাইন। সঙ্গে রয়েছে সূক্ষ্ম বেজেলযুক্ত থ্রিডি কার্ভড ডিসপ্লে। প্রিমিয়াম অনুভূতি ও বাড়তি গ্রিপের জন্য এই ডিভাইসে আছে ভেগান লেদারের ব্যাক প্যানেল। দাগ ও ফাটল থেকে সুরক্ষার জন্য আছে কর্নিং গরিলা গ্লাস।
ফোনটির ব্যাক ক্যামেরা মডিউলের ডিজাইন ফোনের নড়বড়ে ভাব প্রতিরোধ করে। আর ব্যক্তিগত অনুভূতি দেওয়ার জন্য যুক্ত করা হয়েছে এআই অ্যাকটিভ হেলো লাইটিং ফিচার। ভারসাম্যপূর্ণ ওজন ও স্লিম প্রোফাইলযুক্ত ডিভাইসটি বেশ শক্ত ও মজবুত। পাশাপাশি এটি সহজেই বহন করা যায়। ভিন্টেজ গ্রিন ও টাইটান গোল্ড এই দুটি রঙে পাওয়া যাচ্ছে ফোনটি। দুটি রঙেই স্টাইল ও কার্যকারিতার চমৎকার সমন্বয় ঘটেছে।
থ্রিডি কার্ভড ডিসপ্লে
নোট ৪০ প্রো ফোনটিতে আছে বড় আকারের ৬.৭৮ ইঞ্চি কার্ভড অ্যামোলেড ডিসপ্লে, যা দেয় প্রাণবন্ত রং ও ডিপ কনস্ট্রাস্ট। স্বচ্ছন্দ স্ক্রলিংয়ের জন্য আছে ১২০ হার্টজের রিফ্রেশ রেট। দেখার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে এই ফোনের সিমেট্রিক্যাল লেআউট দেয় ৯৩.৮% স্ক্রিন-টু-বডি রেশিও। ৩৯৩ পিপিআই ডেনসিটির সাথে ১০৮০x২৪৩৬ পিক্সেলের এফএইচডি+ রেজ্যুলেশন নিশ্চিত করে শার্পনেস ও ক্ল্যারিটি।
সৃজনশীলতার জন্য ক্যামেরা
ডিভাইসটির প্রধান ক্যামেরায় আছে ওআইএসযুক্ত ১০৮ মেগাপিক্সেলের সেন্সর। মূল কাজ এই সেন্সরই করে। আরও আছে ২ মেগাপিক্সেলের বাড়তি সেন্সর। দিনের বেলায় এই ক্যামেরা দিয়ে চমৎকার ছবি তোলা যায়। এমনকি থ্রি-এক্স ডিজিটাল জুম দিয়ে তোলা ছবিও আসে বেশ স্পষ্ট। দুর্দান্ত সব সেলফি তোলার জন্য নোট ৪০ প্রো ফোনটিতে রয়েছে ৩২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা।
ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা
উদ্ভাবনী ও অভিনব চার্জিং প্রযুক্তির কারণে অন্যান্য ফোন থেকে অনেকটাই আলাদা ইনফিনিক্স নোট ৪০ প্রো। তাই স্মার্টফোনের বাজারে এটি একটি অনন্য স্থান অর্জন করেছে। এর শহুরে দৃশ্যাবলী দ্বারা অনুপ্রাণিত ডিজাইন দেয় প্রিমিয়াম অনুভূতি। এই ডিজাইন দেখে একে মাঝারি বাজেটের ফোন বলে মনেই হয় না। এক্সবুস্ট ফ্রেম রেট কন্ট্রোলের সাহায্যে গেমিং পারফরম্যান্স অনেক উন্নত হয়। এর ফলে অপটিমাল ফ্রেম রেটের সাথে পাওয়া যায় নিরবচ্ছিন্ন গেমপ্লে। ইনফিনিক্সের টাচ অ্যালগরিদমের ফলে কার্ভড এজে নির্ভুলতা নিশ্চিত হয়। এছাড়া এর অন-স্ক্রিন ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর দেয় অধিক নিরাপত্তা। সব মিলিয়ে বলা যায়, ফোনটি ব্যবহার করা বেশ সহজ ও সুবিধাজনক।
এছাড়া, নোট ৪০ সিরিজে আছে জেবিএল-এর ইঞ্জিনিয়ারদের টিউন করা ডুয়েল স্টেরিও স্পিকার। ফলে চমৎকার মানের সাউন্ডের সঙ্গে ব্যবহারকারীদের দেখার অভিজ্ঞতাও হবে উন্নত।
মূল্য
নোট ৪০ প্রো-এর ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজ সংস্করণটির বাজারমূল্য ৩০,৯৯৯ টাকা এবং ১২ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজ সংস্করণটির বাজারমূল্য ৩৪,৯৯৯ টাকা।