মোঃ গোলাম আরিফঃ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পাবনা সদর ও হারভেস্টপ্লাস আয়োজনে প্রগতিশীল চাষীদের মাঝে জিংকসমৃদ্ধ বোরো ধানের বীজ বিতরণ ও প্রশিক্ষণ প্রদান অনুষ্ঠিত হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাবনা সদর উপজেলাস্থ প্রশিক্ষণ হলে আজ মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ ড. মোঃ জামাল উদ্দীন, উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পাবনা। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পাবনা’র জেলা প্রশিক্ষল অফিসার, কৃষিবিদ মোঃ সাইফুল ইসলাম; অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মোঃ রোকনুজ্জামান; হারভেস্টপ্লাস এর কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর মোঃ ওয়াহিদুল আমিন; ডিভিশনাল কোঅর্ডিনেটর জাকিউল হাসান; উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ কুন্তলা ঘোষ;, কৃষি তথ্য সার্ভিস, পাবনা’র সহকারী তথ্য অফিসার কৃষিবিদ মোঃ খালেদীন আনাম।
অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ বলেন, জিংক খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান। এটি মানবদেহের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান, যা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জোরদার করে। মানবদেহে জিংকের অভাব হলে বিভিন্ন সমস্যা দেখো দেয়। গর্ভকালীন জিংকের ঘাটতি হলে জন্মগত ত্রুটি, কম ওজনের শিশু জন্ম দেওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। এছাড়াও দেহের বৃদ্ধি রোধ, দৈহিক অপরিপক্বতা বা বামনত্ব হতে পারে। জিংকের অভাবে ডায়রিয়া বা নিউমোনিয়া, পায়ে বা জিহ্বায় ক্ষত, মুখের চারপাশে ক্ষত, একজিমা, ব্রণ, ছত্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণজনিত অসুস্থতা, চুল পড়ে যাওয়া, মানসিক দুর্বলতা, আচরণগত অস্বাভাবিকতা, অমনোযোগিতা, ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়। এসব সমস্যা থেকে আমাদের বাঁচতে জিংকসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে।
বক্তারা বলেন, গরু ও ভেড়ার মাংস, সামুদ্রিক মাছ, গরু খাসির কলিজা, লাল আটা-ময়দার রুটি, দুগ্ধজাত খাদ্য, মসুর ডাল, চীনাবাদাম, মাশরুম, ঝিনুকে উচ্চমাত্রায় জিংক রয়েছে। এগুলো উচ্চমূল্যের খাবার যা সকলের সবসময় সাধ্যের মধ্যে থাকে না। এজন্য গবেষণার মাধ্যমে ধান, গম, মসুরসহ বিভিন্ন ফসলের মধ্যে জিংকসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান উচ্চমাত্রায় সংযোজন করা সম্ভব হয়েছে। যা নিয়মিত গ্রহণ করলে জিংকসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।
জিংকসমৃদ্ধ বোরো ধানের চাষাবাদে বক্তারা আরো বলেন, বীজবাহিত রোগ দমনে অবশ্যই বীজ শোধন করে বীজতলায় বপন করতে হবে। এলোমেলোভাবে বালাইনাশক প্রয়োগ করা যাবে না, এতে আর্থিক অপচয় এবং মানব স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। এছাড়াও প্রশিক্ষণে জনস্বাস্থ্য ও মাটির স্বাস্থ্য সংরক্ষণ, ফলন বৃদ্ধি এবং ফসল রক্ষায় প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়।
প্রশিক্ষণ শেষে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ পাবনা সদর উপজেলাস্থ ১২২০ জন প্রগতিশীল কৃষকের মাঝে ৩ কেজি করে জিংকসমৃদ্ধ বোরো ধানের ব্রি ধান৭৪ এবং ব্রি ধান১০০ এর ৩৬৬০ কেজি বীজ বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পাবনা এর জেলা/উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, কৃষি তথ্য সার্ভিস, কৃষক, প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।