সিকৃবি ভিসির পদত্যাগ দাবিতে উত্তপ্ত সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

ক্যাম্পাস ডেস্ক: ১৬ আগস্ট শুক্রবার ছুটির দিনে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাতক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা অজ্ঞাত অবস্থান থেকে অফিস আদেশ জারির হিন চেষ্টার প্রতিবাদে শনিবার (১৭ আগস্ট) সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র , শিক্ষক , কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

বিক্ষোভ মিছিলে বক্তারা বলেন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বরপুত্র ডা. জামাল ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে পতিত স্বৈরাচারের পতনের পর ছাত্র-জনতার রোষানল থেকে প্রান ভিক্ষা চেয়ে ও পদত্যাগের আশ্বাস দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যান । তিনি ৬ - ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ডিন কাউন্সিলের আহবায়ককে দায়িত্ব দিয়ে ছুটির দরখাস্ত পাঠান।

পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন ও সাধারন ছাত্রদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৪ আগস্ট ডিন কাউন্সিলের আহবায়ক প্রফেসর ড. মো. ছিদ্দিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতিতে ডিন কাউন্সিলের সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদ থেকে শিক্ষক কর্মকর্তারা পদত্যাগ করায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিদ্যমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সাপেক্ষে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।

এই সকল সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাত স্থান থেকে সিকৃবির দুর্নীতিবাজ ভিসি প্রফেসর ডা. জামাল উদ্দিন ভূঞা ১৮ আগস্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম যথারীতি চলবে মর্মে অফিস আদেশ জারীর প্রেক্ষিতে ক্যাম্পাস সংশ্লিষ্ট ছাত্র, শিক্ষক , কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। যার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছেন বলে উল্লেখ করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংশ্লিষ্টরা।

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ অফিস আদেশ প্রত্যাখ্যান করি।

কেননা দেশের এমন জরুরী পরিস্থিতিতে শুক্রবার ছুটির দিনে একজন পলাতক ও অবাঞ্ছিত উপাচার্য (যার অসীম দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে) কর্তৃক স্বাক্ষরিত (নীল রংয়ের কলম দ্বারা স্বাক্ষরিত, যা দাপ্তরিক নথি হিসেবে অগ্রহণযোগ্য) যে কোন বিজ্ঞপ্তি বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, অফিস আদেশটির অস্তিত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নেই। পলাতক ও অবাঞ্ছিত উপাচার্য কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোন স্বার্থান্বেষী মহল অজ্ঞাত স্থান থেকে এ ধরণের বিব্রতকর অফিস আদেশ প্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যৌক্তিক দাবি আদায়ে বাঁধা প্রদান করতে চাচ্ছে।

৬ আগস্ট থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞার পদত্যাগ দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

এদিকে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতিতে ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো. ছিদ্দিকুল ইসলাম এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ১৪ আগস্ট ডিন কাউন্সিলের জরুরী সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সবাই একমত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম অনতিবিলম্বে শুরু করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অধিকাংশ পদ হতে (পরিচালক, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা, প্রক্টর, প্রভোস্ট, সহকারী প্রভোস্ট ইত্যাদি) শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ পদত্যাগ করায় প্রশাসনিক কার্যক্রম ও ছাত্রদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে বিধায় ১৮ আগস্ট হতে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়।