২০২৫ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকমঃ ২০২৫ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এবছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাধারণ হজ প্যাকেজ নামে দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে । সাধারণ হজ প্যাকেজ-১ এর মূল্য ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা এবং অন্যটির মূল্য ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতবারের তুলনায় এবছর প্যাকেজ দুটিতে খরচ কমেছে যথাক্রমে ১ লাখ ৯ হাজার ১৪৮ টাকা ও ১১ হাজার ৭১০ টাকা।

আজ বিকালে সচিবালয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এই হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেন।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। বর্তমানে এদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৯৩ শতাংশ মুসলমান। হজযাত্রী প্রেরণের সংখ্যা বিবেচনায় বিশ্বে আমাদের অবস্থান চতুর্থ। অনেকদিন ধরে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ বিভিন্ন প্লাটফর্মে হজ প্যাকেজ মূল্য কমানোর বিষয়ে দাবী জানিয়ে আসছে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর এদাবীকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে হজের সাথে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সাথে বেশ কয়েকদফা সভা করেছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধি দল অতি সম্প্রতি সৌদি আরব সফর করেছে। এ সফরে সেদেশের হজ ও উমরাহ্ মন্ত্রীর সাথে দ্বিপক্ষীয় সভা করা হয়েছে এবং হজ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী কোম্পানির সাথেও মতবিনিময় করা হয়েছে। এছাড়া, মক্কা ও মদিনায় হজযাত্রীদের আবাসন উপযোগী হোটেল পরিদর্শন করা হয়েছে। এছাড়া, আজ সকালে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভাও করা হয়েছে।

ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, সকল অংশীজনের মতামত, বিভিন্ন খাতে খরচের চুলচেরা বিশ্লেষণ ও সম্ভাব্য সকল ধরনের ব্যয় বাস্তবভিত্তিক ও যৌক্তিকীকরণের মাধ্যমে এবছরের হজের প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, হজের প্যাকেজ নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমাদের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি ছিলো না, চেষ্টার কোন কমতি ছিলো না।

এবছরের বেসরকারি মাধ্যমের সাধারণ হজ প্যাকেজ মূল্য ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৫৬ টাকা। এছাড়া, সাধারণ হজ প্যাকেজ গ্রহণপূর্বক এজেন্সিকে একটি অতিরিক্ত বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করার সুযোগ রাখা হয়েছে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৫ সনের ৫ জুন  পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এবছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজব্রত পালনের সুযোগ পাবেন।

সরকারি মাধ্যমের সাধারণ হজ প্যাকেজ-১ এ
মক্কায় হারাম শরীফের বহি:চত্বর হতে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে এবং মদিনায় মসজিদে নববী হতে সর্বোচ্চ দেড় কিলোমিটারের মধ্যে আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। মক্কায় হারাম শরীফ যাতায়াতের জন্য থাকবে বাসের ব্যবস্থা। এই প্যাকেজটিতে মিনায় তাঁবুর অবস্থান হবে গ্রীন জোনে (জোন-৫)   এবং মিনা-আরাফায় 'ডি' ক্যাটাগরির সার্ভিস পাওয়া যাবে।

সরকারি মাধ্যমে সাধারণ হজ প্যাকেজ-২ মক্কায় হারাম শরীফের বহি:চত্বর হতে দেড় কিলোমিটারের মধ্যে এবং মদিনায় মার্কাজিয়া এলাকায় আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

উভয় প্যাকেজের হজযাত্রীরা মক্কার হোটেল কিংবা বাড়ি হতে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুযদালিফা-মিনা ট্রেনযোগে যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া, মিনা এবং আরাফায় মোয়াল্লেম কর্তৃক খাবার পরিবেশন করা হবে। দুটি প্যাকেজেই মক্কা ও মদিনায় বাড়ি বা হোটেলে এটাচড বাথরুমসহ প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৬ জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। হোটেলে থাকবে রেফ্রিজারেটরের ব্যবস্থা। এছাড়া হজযাত্রীদেরকে মক্কা, মদিনা ও জেদ্দায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে ঔষধ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে।

উল্লেখ্য, এবছর প্রত্যেক হজযাত্রীকে খাবার বাবদ ন্যূনতম ৪০ হাজার টাকার সমপরিমাণ সৌদি রিয়াল এবং কুরবানী বাবদ ৭৫০ সৌদি রিয়াল  আবশ্যিকভাবে সঙ্গে নিতে হবে।এছাড়া, অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করে মক্কা ও মদিনার বাড়ি বা হোটেলে ২, ৩ ও ৪ সিটের রুম এবং শর্ট প্যাকেজের সুবিধা গ্রহণ করা যাবে।

এসময় ধর্ম সচিব মুঃ আঃ হামিদ জমাদ্দার, হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মতিউল ইসলামসহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।