বৃহস্পতিবার কাপ্তান বাজারে ও শুক্রবার তেজগাঁও পাইকারি বাজারে সরকারি দামে ডিম বিক্রি শুরু

Category: ফোকাস Written by Shafiul Azam

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: ডিমের বাজারের চলমান অস্থিরতা দূর করতে আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে সরকারি দামে ডিম বিক্রির বিশেষ কার্যক্রম। রাজধানীতে অবস্থিত ডিমের প্রধান দুই পাইকারি বাজার- তেজগাঁও ও কাপ্তান বাজারে প্রতিদিন ২০ লাখ ডিম সরবরাহ করার মাধ্যমে ডিমের দামে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ঢাকায় এ কার্যক্রম শুরু করা হলেও সারাদেশেই এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ডিম উৎপাদনকারি দেশের অপেক্ষাকৃত বড় খামারগুলো এ ডিম সরবরাহ করবে বলে জানিয়েছে, এ কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক ‘বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল’ (বিপিআইসিসি)। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায় ‘জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর’ এর মহাপরিচালক জনাব মো. আলীম আখতার খান, রাজধানীর কাপ্তান বাজারে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিপিআইসিসি’র যুগ্ম-আহ্বায়ক জনাব মসিউর রহমান বলেন- সরকার কর্তৃক নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও পোল্ট্রি স্টেকহোল্ডারগণ একত্রে বসে ডিমের যৌক্তিক উৎপাদন খরচসহ উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিমের মূল্য নির্ধারণ করেছে। সাম্প্রতিক সময়ের পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিজনিত বন্যার কারণে দেশের প্রায় এক চতুর্থাংশ জেলার পোল্ট্রি খামারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে দৈনিক প্রায় ৬০-৭০ লাখ ডিমের উৎপাদন কমে যায়; ফলশ্রুতিতে চাহিদা ও যোগানের মাঝে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়।

জনাব মসিউর বলেন- দেশের এ সংকটকালীন সময়ে একটি মহল অতিরিক্ত মুনাফা লোটার চেষ্টা করলে ডিমের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। দেশ ও মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাথে একাত্ম হয়ে পোল্ট্রি শিল্পের কেন্দ্রিয় সংগঠন ‘বিপিআইসিসি’ আগামী ১৫দিনের যে বিশেষ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে তাতে খামার থেকে প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১২টাকায় পাওয়া যাবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, সরকারের বাজার তদারকি সংস্থা, ডিম উৎপাদনকারি বড় খামারি ও পাইকারি আড়ৎদারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা- এ উদ্যোগকে সফল করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ উদ্যোগের অপর একজন সমন্বয়ক ‘ব্রিডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (বিএবি) এর সভাপতি জনাব মাহাবুবুর রহমান বলেন- খামার থেকে ভোক্তার হাতে ডিম পৌঁছাতে ৭ হাত বদল হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ডিমের দাম বৃদ্ধির কারণে বেশ কিছু এলাকায় কিছু অপেশাদার লোকজনও ডিমের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এতে হাত বদলের সংখ্যা আরও বেড়েছে। যত হাত বদল হবে, দাম ততই বাড়বে। তাই আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে- হাত বদলের সংখ্যা যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহায়তায় আমরা সে চেষ্টাই করছি।

বিপিআইসিসি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে- গত ১৫ অক্টোবর সকালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে এবং দুপুরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে পৃথক দু’টি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন সন্ধ্যাতেই বিপিআইসিসি’র উদ্যোগে ডিম উৎপাদনকারি বড় খামারিদের সাথে যোগাযোগ করে একটি অনলাইন সভা আহবান করা হয়। পরেরদিন ১৬ অক্টোবর বড় খামারি এবং তেজগাঁও এবং কাপ্তান বাজারের পাইকারি আড়ৎদারদের প্রতিনিধি সমন্বয়ে আরও একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় যেখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকায় ডিমের সরবরাহ ও বিপণন সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

পরবর্তীতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকে রাজধানীর কাপ্তান বাজারে সরকারি দামে ডিম বিক্রির কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সময় স্বল্পতার কারণে তেজগাঁও পাইকারি বাজারে যথাসময়ে ডিমের চালান পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছেনা; তাই শুক্রবার থেকে তেজগাঁও বাজারের কার্যক্রম শুরু হবে।

এ কার্যক্রমে ডিম সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- কাজী ফার্মস, ডায়মন্ড এগস লিঃ, প্যারাগন পোল্ট্রি, পিপলস পোল্ট্রি এন্ড হ্যাচারি, নারিশ পোল্ট্রি, ভিআইপি শাহাদত পোল্ট্রি, নর্থ এগ লিঃ, নাবিল এগ্রো, আর.আর.পি, রানা পোল্ট্রি, চাঁদ এগ্রো, কৃষিবিদ পোল্ট্রি, চিত্রা এগ্রো, আমান পোল্ট্রি এবং মেগা পোল্ট্রি। আশাকরা হচ্ছে- আফিল এগ্রো এবং প্রাণ এগ্রোও পরবর্তীতে এ কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হবে।