এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খুলনা অঞ্চলের সভাকক্ষে জলাবদ্ধতা নিরসন ও চলতি রবি মৌসুমে দন্ডায়মান মাঠ ফসলের অবস্থা শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্প্রসারণ অণুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ জাকির হোসেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. বেগম সামিয়া সুলতানা ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপপরিচালক (উপ সচিব) মোছাঃ শাহনাজ বেগম, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, যশোরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বি এম আব্দুল মোমিন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উইংয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ ও বাংলাদেশ পল্লী বিদুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ রফিকুল ইসলাম মতবিনিময় সভায় খুলনা অঞ্চলের চলতি রবি মৌসুমে ফসল আবাদের অগ্রগতি অবহিত করেন। তিনি বলেন, উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিএডিসি ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সমন্বিত উদ্যোগে জলাবদ্ধতা অনেকাংশে নিরসন করা গেছে এবং বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্র অর্জনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
ক্লাইমেট-স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ শেখ ফজলুল হক মনি প্রকল্পের কার্যক্রমের উপর ভিডিও প্রদর্শন করেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ সাইফুল ইসলাম, কৃষিবিদ শংকর কুমার মজুমদার ও বিএডিসি’র সহকারী প্রকৌশলী মোঃ হাফিজ ফারুক সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের জলাবদ্ধতা এবং চলমান কৃষি কার্যক্রম সম্পর্কে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন।
সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া এর পক্ষে কৃষিবিদ ড. এস এম ফেরদৌস ফসলী জমির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মজা খাল পুনঃখননের কার্যক্রম ও গুরুত্ব মতবিনিময় সভায় উপস্থাপন করেন। কৃষিবিদ ফেরদৌস জানান, সলিডারিডাড যশোর, নড়াইল, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও খুলনা জেলার নির্ধারিত ১২ টি উপজেলায় মোট ৮০টি খাল পুনঃখননের পরিকল্পনা করেছে। ইতিমধ্যে ৫২টি খাল পুনঃখননের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং অবশিষ্ট খালগুলো চলতি শুকনো মৌসুমের মধ্যে খনন করা হবে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বি এম আব্দুল মোমিন ও খুলনা পওর-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান তাযকিয়া প্রধান অতিথি জাকির হোসেনকে বিল ডাকাতিয়া ও ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনে সম্পাদিত কর্মকান্ড ও পরবর্তীতে গৃহিত পরিকল্পনা অবহিত করেন।
অন্যান্যের মধ্যে বিএডিসি’র যুগ্ম-পরিচালক (সার) কৃষিবিদ মোঃ লিয়াকত আলী, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ মহাদেব সানা, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সীর সহকারী আঞ্চলিক বীজ প্রত্যয়ন অফিসার কৃষিবিদ ড. রুবায়েত আরা, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, খুলনার সরেজমিন বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ কামরুল ইসলাম, কৃষি প্রকৌশলী হারুন-অর-রশীদ ও দীপংকর বালা, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ড. জিতু, বিনার সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার প্রমুখ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সভায় অবহিত করেন।
প্রধান অতিথি মনোযোগ দিয়ে সকল কর্মকর্তার আলোচনা শ্রবন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন ও উপকূলীয় এলাকায় ফসলের আবাদ সম্প্রসারণের জন্য স্বাদু পানির আধার খননে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, যেসব ফসলের আবাদে পানির সাশ্রয় হয় সেসব প্রযুক্তি কৃষক পর্যায়ে বিস্তার কররতে হবে। অতিরিক্ত সচিব জাকির হোসেন ব্লক পর্যায়ে ফসল আবাদের জন্য ফসল আবাদের পরিকল্পনা তৈরি করার জন্য সকল কর্মকর্তার প্রতি অনুরোধ করেন।
মতবিনিময় সভায় যোগদানের পূর্বে অতিরিক্ত সচিব মোঃ জাকির হোসেন কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারকরণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলা কৃষি অফিসার/কৃষি সম্প্রসারণ অফিসারদের অংশগ্রহণে দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ উদ্বোধন করে কৃষিবিদদের নিজ দায়িত্ব ধারণ করে কৃষকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করেন।
মনিটরিং অফিসার কৃষিবিদ মেহের মালিকা লিজা প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি সঞ্চালন করেন। বিকেলে অতিরিক্ত সচিব জাকির হোসেন কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা প্লট, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের নির্মানধীন ভবন ও বর্তমান গবেষণাগার, হর্টিকালচার সেন্টার, বিভাগীয় কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের খুলনা কার্যালয়, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সীর আঞ্চলিক কার্যালয় পরিদর্শন করেন।