বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২৫ উদযাপন: পুষ্টি ও পরিবেশ রক্ষায় ডেইরি খাতের টেকসই অঙ্গীকার

Category: ফোকাস Written by Shafiul Azam

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: “দুগ্ধের অপার শক্তিতে, মেতে উঠি একসাথে” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজধানীতে পালিত হলো বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২৫। এ উপলক্ষে এলডিপি (লাইভস্টক ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট) ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও এক বিশেষ সেমিনার।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়,মিজ ফরিদা আখতার। সভাপতিত্ব করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবু সুফিয়ান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাঃ মোঃ বয়জার রহমান, পরিচালক (প্রশাসন), ও ডাঃ বেগম শামসুন্নাহার আহম্মেদ, পরিচালক (সম্প্রসারণ), প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ডাঃ মোঃ জসিম উদ্দিন, প্রকল্প পরিচালক, এলডিপি। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন)।

সেমিনারে দেশের দুগ্ধখাতে উৎপাদন ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের গৃহীত উদ্যোগগুলো তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ৬,৫০০টি প্রোডিউসার গ্রুপ ও মাঠ স্কুল, ৪০০টি গ্রামীণ মিল্ক কালেকশন সেন্টার, ৪,৩৯১টি দুগ্ধ দোহন যন্ত্র, ১০টি বৃহৎ দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান ও ২৩২টি দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট প্রতিষ্ঠা এবং মাঠ পর্যায়ে ম্যাচিং গ্রান্টের সহায়তা।

সেমিনারে আলোচনায় উঠে আসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট দুগ্ধখাতে জলবায়ু কার্যক্রমে আন্তর্জাতিক অগ্রযাত্রা। বর্তমান বিশ্বের ডেইরি খাত শুধুমাত্র পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তায় নয়, বরং পরিবেশ রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ‘ডেইরি নেট জিরো’ নামক বৈশ্বিক পদক্ষেপের মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষক থেকে শুরু করে বৃহৎ খামার, প্রক্রিয়াজাতকারী, পরিবহন, বিক্রেতা ও ভোক্তা সবাইকে যুক্ত করে একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ার চেষ্টা চলছে।

এই উদ্যোগে অংশগ্রহণের সুযোগ সবার জন্য উন্মুক্ত। প্রত্যেক খামার, পরিবার ও প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদন পদ্ধতিকে আরও দক্ষ, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই করে গড়ে তুলতে পারে। খাদ্য অপচয় হ্রাস, নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার ও কার্বন নির্গমন কমিয়ে একটি সবুজ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্বে সক্রিয় রয়েছে প্রায় ১৩৩ মিলিয়ন দুগ্ধ খামার, যার মধ্যে ৩৭ মিলিয়ন খামার নারী নেতৃত্বে পরিচালিত। এই খাত বিশ্বব্যাপী ২৪০ মিলিয়ন কর্মসংস্থান এবং১ বিলিয়ন মানুষের জীবিকার উৎস।

এই বাস্তবতায় বিশ্ব দুগ্ধ দিবস আমাদের সামনে একটি দ্বৈত বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে পুষ্টি ও জীবিকার নিশ্চয়তা যেমন প্রয়োজন, তেমনি পরিবেশ রক্ষায় দায়িত্বশীলতা এখন সময়ের দাবি। আগামী ৩০ বছরে দুগ্ধখাতের কার্বন নির্গমন উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সক্রিয় গবেষণা, উদ্ভাবন, প্রশিক্ষণ ও বিনিয়োগ প্রয়োজন।