এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে একসময় ৬০ শতাংশ মাছ মুক্ত জলাশয়ে পাওয়া যেত এবং বাকিটা চাষ হতো। বর্তমানে ৪০ শতাংশ মাছ মুক্ত জলাশয়ে এবং ৬০ শতাংশ মাছ বদ্ধ জলাশয়ে চাষ হচ্ছে। উন্মুক্ত জলাশয়ে দিন দিন পানি দূষণ, ভরাট, অনিয়ন্ত্রিত ট্যুরিজমের ফলে মাছের মাছের প্রজনন ও বিচরণ ক্ষেত্র নষ্ট হচ্ছে।
উপদেষ্টা আজ সকালে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই)-এর অডিটোরিয়ামে আয়োজিত “বার্ষিক গবেষণা অগ্রগতি (২০২৪-২৫) পর্যালোচনা এবং পরিকল্পনা প্রণয়ন (২০২৫-২৬)” শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা বলেন।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে ইলিশ উৎপাদনে প্রথম স্থানে রয়েছে। তবে এই অর্জন ধরে রাখতে হলে ইলিশ বিষয়ে আরও গভীর গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। তিনি আরো বলেন, দেশের গর্ব হালদা নদীর রুই ও কাতলা দেশের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। হালদার এ মাছের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য গবেষণা কার্যক্রম বাড়াতে হবে।
ফরিদা আখতার বলেন, সমুদ্র ও উপকূলে কারেন্ট জাল, ট্রল ডোর এবং সোনার সিস্টেম ব্যবহারের মাধ্যমে মাছের অতিআহরণ ঘটছে, যার ফলে দেশের মূল্যবান মৎস্য সম্পদ ধ্বংসের মুখে পড়ছে। এ অবস্থায় মৎস্য সম্পদ রক্ষার্থে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় বিধিবদ্ধ (Regulatory) পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
কর্মশালার বিএফআরআই-এর মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্রের সভাপতিত্বে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের। তিনি বলেন, দেশের মৎস্য সম্পদের পর্যাপ্ত যোগান নিশ্চিত করতে বিজ্ঞানীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তাদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা পর্যাপ্ত নয়। বিজ্ঞানীদের সুযোগ নিশ্চিত করা গেলে তারা আরো অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন নতুন মাছের জাত উদ্ভাবনে এগিয়ে আসবেন। এসময় তিনি মাছের প্রাপ্যতা বৃদ্ধিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা, পানি দূষণ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষ জনশক্তি তৈরি এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়েও গুরুত্ব আরোপ করেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ফারাহ্ শাম্মী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. রফিকুল ইসলাম সরদার, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবদুর রউফ।
এ সময়ে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই)- এর সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম মৎস্য সম্পদের বার্ষিক গবেষণা অগ্রগতি নিয়ে একটি তথ্যবহুল প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। তার উপস্থাপনায় সাম্প্রতিক গবেষণার সাফল্য, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।