জলাতঙ্ক প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি:ড. এফ এইচ আনসারী

Category: ফোকাস Written by Shafiul Azam

রাজধানী প্রতিবেদক: বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর প্রায় ৫৯ হাজার মানুষ জলাতঙ্কে মারা যায়, যার বড় অংশ এশিয়া ও আফ্রিকা অঞ্চলে। দুঃখজনক হলেও সত্য, এদের বেশিরভাগই শিশু। বাংলাদেশও এই সমস্যা থেকে মুক্ত নয়। তবে সময়মতো টিকাদান, সচেতনতা এবং যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে জলাতঙ্ক সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধযোগ্য। এ বিষয়ে সমন্বিত উদ্যোগের ওপর জোর দিয়েছেন এ সি আই এগ্রি বিজনেসেস-এর প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারী।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর ফার্মগেটস্থ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সেমিনার রুমে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আয়োজনে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস উপলক্ষে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ২০১০ সালের আগে প্রতিবছর প্রায় ২,৫০০ মানুষ জলাতঙ্কে মারা যেত, অথচ ২০২৩ সালে সরকারি হাসপাতালে এ সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪৪ জনে। এটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলেও ঝুঁকি এখনো বিদ্যমান। শুধু ২০২৩ সালেই ৩-৪ লক্ষ মানুষ জলাতঙ্ক-পরবর্তী প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা নিয়েছেন। তাই মানুষের পাশাপাশি মূল উৎস নিয়ন্ত্রণ অর্থাৎ কুকুর ও বিড়ালকে ভ্যাকসিন দিয়ে সুরক্ষিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক । সভাপতিত্ব করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ডা. মো. বয়জার রহমান, পরিচালক প্রশাসন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. মো. শাহিনুর আলম, পরিচালক, প্রাণিসম্পদ ঔষধাগার, ঢাকা

ড. আনসারী বলেন, জলাতঙ্ক প্রতিরোধে সরকারের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা, সিটি কর্পোরেশনের রাস্তার কুকুর নিয়ন্ত্রণ ও টিকাদান কার্যক্রম, বেসরকারি খাতের মানসম্মত ভ্যাকসিন সরবরাহ, পোষা প্রাণীর মালিকদের সচেতনতা এবং গণমাধ্যমের প্রচার সব মিলেই একটি সমন্বিত One Health উদ্যোগ গড়ে তুলতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “জলাতঙ্ক প্রতিরোধ মানে কেবল মানুষের চিকিৎসা নয়, বরং প্রাণীর টিকাদান নিশ্চিত করা। সবাই মিলে কাজ করলে ২০৩০ সালের মধ্যে জলাতঙ্কমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব।”

পোষা প্রাণীর স্বাস্থ্যসেবায় এ সি আই-এর কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৩ লক্ষ কুকুর ও ৬ লক্ষ বিড়াল রয়েছে। এই চাহিদা পূরণে এ সি আই তার অ্যানিমেল হেলথ বিজনেসের অধীনে পেট পোর্টফোলিও চালু করেছে, যেখানে রয়েছে পোষা প্রাণীর খাদ্য, ক্যাট লিটার, ভ্যাকসিন, এক্সেসরিজ ও সেবা। মাঠ পর্যায়ে ৭০০-রও বেশি কর্মকর্তা ও প্রাণিচিকিৎসক এবং একটি পেট ক্লিনিকের মাধ্যমে এ সি আই কাজ করছে। দেশের ভ্যাকসিন বাজারে এককভাবে ৫৫ শতাংশেরও বেশি সরবরাহ করছে এ সি আই, বিশেষ করে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে কুকুর ও বিড়ালের কোর ভ্যাকসিন সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে প্রতিষ্ঠানটি।

অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন রুবাইয়াত আহমেদ, অভয়ারণ্য বাংলাদেশ ; স্থপতি রকিবুল হক এমিল,প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান পিপল ফর অ্যানিমেল অয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশন ; ডঃ মো. সফিউল আহাদ সরদার, কনভেনার বিভিএ; ডাক্তার মো. আজিজ আল মামুন, পরিচালক কেন্দ্রীয় ভেটেরিনারি হাসপাতাল, ঢাকা।