তরুণ উদ্যোক্তা শহীদুল ইসলাম ও কিছু কথা!

Category: এগ্রিবিজ এন্ড টেক্ Written by Shafiul Azam

মোহাম্মদ শাহজাহান : শহীদুল ইসলাম বয়সে তরুণ একজন ব্যবসায়ী ও সফল উদ্যোক্তা। তিনি ব্যবসার পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছেন সমানতালে! বর্তমানে তিনি এমএস এন্টারপ্রাইজ নামে একটি এগশপের স্বত্বাধিকারী এবং দক্ষিণ মিঠাছড়ি, রামু, কক্সবাজারের স্থায়ী বাসিন্দা। ব্যবসায় হাতে খড়ি তার বছর তিনেক হলেও বর্তমানে তিনি একজন পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী!

খুব অল্প পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও বর্তমানে বেশ সচ্ছল অবস্থানে আছেন তিনি! কিন্তু বুঝে উঠতে পার ছিলেন না তিনি কিভাবে ব্যবসার পরিচিতি এবং পরিধিটা আরও বাড়াবেন! তাছাড়া সম্প্রতি ফুড সিকিউরিটি ইনস্পেক্টর টীম এসে অভিযান চালায়! পরিচ্ছন্নতা বিধি, মূল্য তালিকা ও ডিমের গ্রেড ভাগ না থাকার কারণে জরিমানা করা হয়। এতে তিনি অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েন!

এরমধ্যে পরিচয় হয় কোস্ট ফাউন্ডেশনের আরএমটিপি (পোল্ট্রি) প্রকল্পের একজন কর্মকর্তার সাথে! বিভিন্ন বিষয়ে আলাপচারিতায় এক পর্যায়ে তিনি তার সমস্যাগুলো শেয়ার করেন প্রকল্প কর্মকর্তার কাছে! কোস্ট ফাউন্ডেশনের চলমান প্রকল্প আরএমটিপি (পোল্ট্রি)'র হাইজেনিক ও হালাল পোল্ট্রি চেইন শপ উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয় সর্ম্পকে তাকে ধারণা দেন প্রকল্প কর্মকর্তা। এছাড়া উল্লেখিত খাতে উদ্যোক্তাদের অনুদান প্রদানের বিষয়টি ও অবগত করেন।

তারই ধারাবাহিকতায় উক্ত উদ্যোক্তা উদ্বুদ্ধ হয়ে এগশপ উন্নয়নে অনুদানের জন্য আবেদন করেন। দু'জনের পারস্পরিক আলাপ ও পরিদর্শনকালে প্রকল্প কর্মকর্তা উদ্যোক্তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিম্নোদ্ধৃত সমস্যা গুলো চিহ্নিত করেন ----

★ অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ডিম সরবরাহ করা।
★ এই কাজে নিয়োজিত কর্মীদের পরিচ্ছন্নতা বিধি মেনে না চলা।
★ বিপণন কৌশল ছিল গতানুগতিক এবং অফ লাইনে সামান্য পরিসরে।
★ পরিচিতির জন্য সাইনবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন, মূল্য তালিকা ও স্টিকারের মাধ্যমে প্রচারণার ব্যবস্থা নেই।
★ বড় বড় ক্রেতাসাধারণকে তার এগশপটি পরিদর্শন করানোর অনুপযোগী ছিল।

আবেদনের আলোকে উক্ত উদ্যোক্তার অনুদান অনুমোদিত হয় এবং অনুদানের অর্থ দিয়ে শনাক্তকৃত সমস্যা গুলো সমাধান করে তার প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে নিম্নোক্ত পরিবর্তন গুলো পরিলক্ষিত হয়েছে-

★ বর্তমানে স্বাস্থ্যকর ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশে ডিম সরবরাহ করা হচ্ছে।
★ তিনি এখন ডিমের গ্রেডিং ভাগ করে বড় এবং ছোট ডিম আলাদা আলাদা মূল্যে বিক্রি করেন।
★ এই কাজে নিয়োজিত কর্মীরা পরিচ্ছন্নতা বিধি মেনে চলে এবং নিয়মিত দোকান পরিষ্কার রাখে।
★ বর্তমানে বিপণন কৌশল হচ্ছে ভিন্ন ধাঁচের। অফ লাইনের পাশাপাশি অনলাইনে ও রয়েছে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা। অনলাইনে রয়েছে এমএস এন্টারপ্রাইজ নামে আলাদা পেইজ যা উন্নয়নে তিনি বুস্টিং সহায়তা বাবদ অনুদান ও পেয়েছেন।
★ বর্তমানে পরিচিতির জন্য সাইনবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন, মূল্য তালিকা ও স্টিকারের মাধ্যমে প্রচারণার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
★ এখন তিনি ক্রেতাসাধারণকে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তার এগশপটি ভিজিট করাতে পারছেন। ফলে ক্রেতারা ও সন্তুষ্ট।

তুলনামূলক বিশ্লেষণে বর্তমানে তিনি যে যে সুফল পাচ্ছেন তার ভাষ্যমতে তা নিম্নরূপ:

★ তার ব্যবসায়িক পরিচিতি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
★ অফ লাইন ও অনলাইনে প্রতি মাসে তার বিক্রির হার বেড়েছে গড়ে প্রায় ১৫% শতাংশ।
★ ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে গড়ে প্রায় ১০% শতাংশ।
★ নীট লাভের ক্ষেত্রে ও গড়ে বেড়েছে প্রায় ৫% শতাংশ।
★ জনসচেতনতা বেড়েছে গড়ে প্রায় ১৫% শতাংশ।
★ ক্রেতাসাধারণের সন্তুষ্টি অর্জনের পাশাপাশি ব্যবসায়িক সুনামের গ্রাফ রেখাটিও বেশ উর্ধ্বমুখী।

উক্ত উদ্যোক্তা এগশপ উন্নয়নে কোস্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ ও ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং অত্র সংস্থার নীতি নির্ধারকও উন্নয়ন কর্মীদের কৃতজ্ঞচিত্তে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

প্রতিবেদক: বিজনেস ডেভলপমেন্ট অফিসার
আরএমটিপি(পোল্ট্রি) , কোস্ট ফাউন্ডেশন, কক্সবাজার সদর -১