নীলফামারীতে পলিনেট হাউজে চারা উৎপাদনের ওপর মাঠ দিবস ও কারিগরী আলোচনা অনুষ্ঠিত

Category: এগ্রিবিজ এন্ড টেক্ Written by Shafiul Azam

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: ‘সারাবছর চারা উৎপাদন বা ফসল উৎপাদনে পলিনেট হাউজ এক আধুনিক প্রযুক্তি। বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়ার তারতম্য বেশ পরিলক্ষিত হচ্ছে। পলিনেট হাউজে চারা উৎপাদন বা ফসল উৎপাদন পরিবর্তিত জলবায়ুতে খাপখাওয়াতে লাগসই প্রযুক্তি হিসেবে ইতিমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে।’

মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় গতকাল ২১ জুন শনিবার বিকেলে রংপুর বুড়িরহাট হর্টিকালচার সেন্টারের আয়োজনে ও কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী চন্ডীরবাজার গ্রামে পলিনেট হাউজের ওপর এক মাঠ দিবস ও কারিগরী আলোচনা অনুষ্ঠানে কৃষি বিশেষজ্ঞগণ এসব কথা বলেন।

মাঠ দিবসের কারিগরী আলোচনা পর্বে রংপুর বুড়িরহাট হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবু সায়েম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রেইনস প্রকল্পের প্রকল্প অফিসার কৃষিবিদ ড. মো. নজরুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নীলফামারী জেলার জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ মো. আজিজুল হক, নীলফামারী কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. লোকমান হোসেন প্রমুখ।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, কৃষিক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। তামাত্রার উঠানামা, বৃষ্টির অসমতা আমাদেও কৃষিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। পলিনেট হাউজে চারা উৎপাদন কার্যক্রম এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ ধরণের প্রযুক্ত সম্প্রসারণ করা হলে কৃষি উন্নয়ন আরও ত্বরাণি¦ত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পলিনেট হাউজ প্রদর্শনী কৃষক নিত্যানন্দ বলেন পলিনেট হাউজ তৈরির পূর্বে খোলা আকাশের নিচে শুধু ছাওনি ব্যবহার বিভিন্ন ফসলের চারা উৎপাদন করতেন। সারাবছর চারা উৎপাদন করতে পারতেন না। এমনকি অনেক সময় বৈরি আবহাওয়ার কারণে বীজতলায় বা কোকোপিটের ট্রেতে উৎপাদিত চারা টিকিয়ে রাখা কঠিন হতো। পলিনেট হাউজ হওয়াতে এখন সারাবছর চারা উৎপাদন করতে সক্ষম হচ্ছেন। পলিনেট হাউজে আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগে মাসে প্রায় ৪০ হাজার চারা উৎপাদন হচ্ছে এবং উৎপাদিত চারা বিক্রি করে মাসে প্রায় ১০-১৫ হাজার টাকা আয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবু সায়েম বলেন, পলিনেট হাউজে মাটিবিহীন উপায়ে কোকোপিট ব্যবহার করে সারা বছর সবজি-ফুলের চারা উৎপাদনে একটি আধুনিক প্রযুক্তি। এ উপায়ে খুব সহজেই সুস্থ-সবল, নিরোগ চারা উৎপাদন করা সম্ভব। উপস্থিত কৃষকদের মাঝে তিনি লাভজনক এ প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেয়ার আহŸান জানান।

আলোচনা অনুষ্ঠানের আগে আমন্ত্রিত অতিথিসহ উপস্থিত কৃষকগণ পলিনেট হাউজে চারা উৎপানের মাঠ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। মাঠ দিবসে প্রায় দুই শতাধিক কৃষক-কিষাণী উপস্থিত ছিলেন।