বাংলাদেশে আলু চাষের আধুনিক প্রযুক্তি: উন্নত বীজ, দক্ষ সেচ, সুষম সার ব্যবস্থাপনা ও মড়ক রোগ দমন

Category: এগ্রিবিজ এন্ড টেক্ Written by Shafiul Azam

ড. মোঃ মাহফুজ আলম

ভূমিকা:পুষ্টিগুণ, বহুমুখী ব্যবহার ও উচ্চ ফলনের কারণে আলু ধান ও গমের পরই বাংলাদেশের খাদ্যতালিকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে। দেশে ৪.৫৮ লক্ষ হেক্টর জমিতে বছরে প্রায় ১০৯.৬৫ লক্ষ টন আলু উৎপাদিত হয় (২০২৩-২৪), যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ চাহিদা ৭০–৮০ লক্ষ টন এবং রপ্তানি প্রায় ৩২ হাজার টন। দেশের শীতকালীন আবহাওয়া ও উর্বর মাটি আলু উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত অনুকূল হওয়ায় রংপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, নওগাঁ ও যশোর অঞ্চল প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। উন্নত জাত, আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি, সুষ্ঠু সার–সেচ ব্যবস্থাপনা এবং রোগবালাই দমন প্রযুক্তির গ্রহণে আলুর উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং গবেষণা উদ্ভাবন ভবিষ্যতে আলু চাষকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

আলু চাষের উপযুক্ত সময়:বাংলাদেশে সাধারণত অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আলুর বীজ রোপণ করা হয়। আলুর ফসল সংগ্রহ করা হয় জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে।

উপযুক্ত মাটির ধরন ও আবহাওয়া: আলু চাষে সঠিক মাটি ও আবহাওয়া নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো সরাসরি ফলন ও কন্দের গুণগত মানকে প্রভাবিত করে। বেলে দোআঁশ মাটি আলু চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী, কারণ এটি পানি নিষ্কাশনে সহায়ক এবং কন্দ পচন রোধ করে। মাটির পিএইচ ৫.২–৬.৫ থাকলে উত্তম ফলন পাওয়া যায়। আলু ১৫–২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ভালো বৃদ্ধি পায়; অতিরিক্ত গরমে কন্দের বৃদ্ধি কমে এবং অতিরিক্ত ঠান্ডায় কন্দ জমাট বাঁধতে পারে।

বাংলাদেশে আলু চাষের উপযুক্ত সময় শীতকাল, অক্টোবরের শেষ থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি। শীতল ও শুষ্ক আবহাওয়া কন্দের বৃদ্ধি ও বিকাশে অত্যন্ত অনুকূল। সাধারণত অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের শুরুতে বীজ রোপণ করলে সঠিক সময়ের আবহাওয়া পাওয়া যায় এবং ফলনও ভালো হয়। অঞ্চলভেদে চাষের সময় কিছুটা ভিন্ন হয়—উত্তরবঙ্গে নভেম্বরেই বীজ রোপণ শুরু হয়, আর দক্ষিণাঞ্চলে ডিসেম্বরের প্রথমদিকে চাষ সম্ভব। রোপণের সময় জমি শুষ্ক কিন্তু আর্দ্র রাখতে হবে; জলাবদ্ধতা বা অতিবৃষ্টি অঙ্কুরোদগমে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

মাটির প্রস্তুতি: আলু চাষের জন্য সঠিক মাটির প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর উপরই ফসলের গুণগত মান ও উৎপাদন নির্ভর করে। আলু একটি কন্দজাতীয় ফসল, যা মূলত ভালোভাবে নিষ্কাশনযোগ্য, উর্বর ও দোঁআশ মাটিতে সবচেয়ে ভালো ফলন দেয়। মাটির প্রস্তুতির জন্য প্রথমে জমি ৪-৫ বার চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে ও সমান করতে হবে এবং আগাছা আগের ও ফসলের অবশিষ্টাংশ পরিষ্কার করতে হবে । এরপর জমিতে গভীর চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নেওয়া উচিত, যাতে কন্দ সহজে মাটির নিচে বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া, মাটির পিএইচ মান ৫.৫ থেকে ৬.৫-এর মধ্যে থাকলে আলু ভালোভাবে বৃদ্ধি পায়। যদি মাটি অতিরিক্ত অম্লীয় হয়, তবে ডোলোমাইট বা চুন প্রয়োগ করে পিএইচ সমতা আনতে হবে। পাশাপাশি মাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফসফরাস, পটাশ ও নাইট্রোজেন থাকলে কন্দের বৃদ্ধি ও ফলনের গুণমান উন্নত হয়। জমি চাষ করার সময় সঠিক মাত্রায় রাসায়নিক সার প্রয়োগ করাও গুরুত্বপূর্ণ। সার প্রয়োগের পরে জমি মই দিয়ে সমান করে নেওয়া হয়, যাতে আলুর বীজ লাগানোর জন্য জমি সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকে। এভাবে সঠিক পদ্ধতিতে মাটির প্রস্তুতি নিশ্চিত করলে আলুর ফলন বৃদ্ধি পায় এবং রোগবালাই প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

উন্নতমানের বীজ নির্বাচন: আলু চাষের সাফল্যের জন্য উন্নতমানের বীজ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ ফলনশীল জাত যেমন-বারি আলু৯৬, বারি আলু৯৮, বারি আলু৯২, বারি আলু৯৩, বারি আলু৯৫, বারি আলু১০০, বারি আলু১০১, বারি আলু১০৩, বিএডিসি আলু১, বিএডিসি আলু২, বিএডিসি আলু৩, বিএডিসি আলু৬, বিএডিসি আলু৭, বিএডিসি আলু১১, বিএডিসি আলু১২, বিএডিসি আলু১৩, লিভেন্তে, এসআিই ফ্রাই আলু২, এসআিই আলু৭, এসআিই আলু৯, এসআিই ফ্রাই আলু২, আদাতো, টুইনার, র্আসনোল, মারকিস জাতের বীজ ব্যাবহার করলে ফলন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। উন্নতমানের বীজ কন্দের আকার, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এবং পরিবেশগত প্রতিকূলতার সাথে খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা বাড়ায়।

উন্নতমানের বীজের বৈশিষ্ট্য: উন্নতমানের বীজ বেছে নেওয়ার জন্য যে বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে:

বীজ নির্বাচন ও সংরক্ষণ পদ্ধতি

স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান: বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি), বিএআরআই এবং নির্ভরযোগ্য বীজ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে উন্নতমানের বীজ সংগ্রহ করা উচিত।

সংরক্ষণ: বীজ সংরক্ষণের জন্য শীতল এবং শুষ্ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। বীজে রোগবালাই দেখা দিলে তা চাষের আগে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করা যেতে পারে।

বীজের পরিমাণ

প্রতি হেক্টরে ১৫০০-২০০০ কেজি বীজ প্রয়োজন। বীজের আকার মাঝারি হলে ভালো হয় এবং প্রতিটি বীজের ওজন ৩০-৫০ গ্রাম হওয়া উচিত।

বীজ শোধন

বীজকে ছত্রাকনাশক (যেমন: প্রভাক্স/ম্যানকোজেব) দ্বারা শোধন করতে হবে, যাতে রোগবালাই থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।

বীজ রোপণ পদ্ধতি

সারি এবং গাছের দূরত্ব

রোপণ পদ্ধতি

 জৈব এবং রাসায়নিক সার প্রয়োগ:আলু চাষে সঠিক মাত্রায় জৈব এবং রাসায়নিক সার প্রয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো আলুর কন্দের সুষ্ঠু বৃদ্ধি ও ভালো ফলনের জন্য অপরিহার্য। উর্বর মাটি নিশ্চিত করার জন্য জৈব সার এবং রাসায়নিক সারের সুষম ব্যবহার করা হলে ফসলের গুণগত মান বৃদ্ধি পায় এবং মাটির স্বাস্থ্যও রক্ষিত হয়।

জৈব সার প্রয়োগ: জৈব সার মাটির গুণাগুণ উন্নত করে এবং আলুর জন্য প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক পুষ্টি সরবরাহ করে।

গোবর সার: প্রতি হেক্টরে ৮-১০ টন পচা গোবর সার প্রয়োগ করলে মাটির জৈব পদার্থের পরিমাণ বাড়ে এবং মাটির ধরন হালকা হয়, যা কন্দের বৃদ্ধি সহজ করে।

কম্পোস্ট: জমিতে ৫-৭ টন কম্পোস্ট প্রয়োগ করলে মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

ভার্মিকম্পোস্ট: এটি উন্নতমানের জৈব সার, যা মাটিতে নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান সরবরাহ করে।

জৈব সার প্রয়োগের ফলে মাটির উর্বরতা দীর্ঘমেয়াদে বজায় থাকে এবং রাসায়নিক সারের নির্ভরশীলতা কমে।

রাসায়নিক সার প্রয়োগ:রাসায়নিক সার আলুর দ্রুত বৃদ্ধি এবং উচ্চ ফলনের জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে এটি সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে, যাতে মাটির ভারসাম্য নষ্ট না হয়।

ইউরিয়া: প্রতি হেক্টরে ৩২৫-৩৫০ কেজি ইউরিয়া ব্যবহার করলে গাছের পাতা ও শাখার বৃদ্ধি ভালো হয়। তবে এটি প্রয়োগ করার সময় দুই ভাগে ভাগ করতে হবে। প্রথম ভাগ চারা গজানোর পর এবং দ্বিতীয় ভাগ ৩০-৪০ দিন পর।

টিএসপি (ট্রিপল সুপার ফসফেট): প্রতি হেক্টরে ২০০-২২০ কেজি টিএসপি ব্যবহার করলে কন্দের বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। এটি জমি তৈরির সময় মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হয়।

এমওপি (মিউরিয়েট অব পটাশ): প্রতি হেক্টরে ২৫০-৩০০ কেজি এমওপি প্রয়োগ করলে কন্দ মজবুত ও রোগ প্রতিরোধী হয়।

জিপসাম, জিংক সালফেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেট: প্রতি হেক্টরে ১০০-১২০ কেজি জিপসাম, ৮-১০ কেজি জিংক সালফেট, যে মাটিতে ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি আছ্‌ সেখানে ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ১৪০-১৬০ ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ব্যবহার করলে মাটিতে সালফারের ঘাটতি পূরণ হয় এবং প্রয়োজনবোধে ৬- ৮ কেজি বোরন ব্যবহার করলে ফলন বৃদ্ধি পায়।         

সার প্রয়োগের পদ্ধতি:জমি চাষের সময় জৈব সার ও রাসায়নিক সার সমানভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়ার মতো নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ সার দুই ভাগে ভাগ করে প্রয়োগ করা উচিত।মাটির ধরন ও পিএইচ অনুযায়ী সারের পরিমাণ সামঞ্জস্য করতে হবে।প্রয়োগের পর হালকা সেচ দিয়ে সার জমিতে মিশিয়ে দিতে হবে।জৈব ও রাসায়নিক সারের সুষম ব্যবহারে আলুর ভালো ফলন নিশ্চিত করা যায়, মাটির স্বাস্থ্য রক্ষিত থাকে এবং পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় থাকে।

সেচ ব্যবস্থাপনা: আলু চাষে সঠিক সময়ে এবং উপযুক্ত পদ্ধতিতে সেচ প্রয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সেচের নিয়ন্ত্রণ ফসলের ফলন ও গুণগত মান নির্ধারণে প্রভাব ফেলে। নিচে আলু চাষে সেচ ব্যবস্থাপনার বিস্তারিত দিকনির্দেশনা দেওয়া হলো:

১. প্রাথমিক সেচ:বীজ রোপণের পর জমিতে পর্যাপ্ত রস না থাকলে তাৎক্ষণিক সেচ দিতে হবে। তবে সেচের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন জমিতে কোনোভাবেই পানি জমে না থাকে। সেচ দেওয়ার সময় ভেলির ২/৩ অংশ পর্যন্ত পানিতে ডুবিয়ে রাখা উত্তম। এই পদ্ধতিতে মাটির আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং বীজ সহজে অঙ্কুরিত হয়।

২. সেচের সময়সূচি: সেচ প্রয়োগের সময়কাল আলুর বৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায়ে ভিন্ন হতে পারে:

স্টোলন বের হওয়ার সময় (২০-২৫ দিন): বীজ রোপণের ২০-২৫ দিনের মধ্যে স্টোলন (কন্দ গঠনের প্রাথমিক ধাপ) বের হয়। এ সময়ে জমিতে পর্যাপ্ত রস নিশ্চিত করতে সেচ দেওয়া জরুরি।

গুটি বের হওয়ার সময় (৪০-৪৫ দিন): গুটি গঠনের সময়ে সেচ প্রয়োগ করতে হবে, কারণ এই পর্যায়ে মাটির আর্দ্রতার অভাব ফসলের ফলনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

আলু বৃদ্ধির সময়: আলুর বৃদ্ধির সময় (৫০-৬০ দিন) সেচ দেওয়া প্রয়োজন, তবে সঠিক পরিমাণে। এই সময়ে মাটির আর্দ্রতা বজায় রাখলে কন্দের আকার বড় হয় এবং গুণগত মান উন্নত হয়।

৩. সেচ বন্ধ করার সময়: জমি থেকে আলু উত্তোলনের ৭-১০ দিন আগে সেচ বন্ধ করতে হবে। এ সময় সেচ বন্ধ রাখলে আলুর খোসা শক্ত হয়, যা সংরক্ষণে সহায়ক।

৪. দাঁদ রোগ নিয়ন্ত্রণ: দাঁদ রোগ প্রতিরোধের জন্য সেচ ব্যবস্থাপনায় বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন:

রসের ঘাটতি রোধ (৩০-৫০ দিন): আলু রোপণের ৩০-৫০ দিনের মধ্যে মাটিতে আর্দ্রতার ঘাটতি যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

রসের আধিক্য রোধ (৬০-৬৫ দিন): আলু রোপণের ৬০-৬৫ দিনের পর জমিতে অতিরিক্ত আর্দ্রতা যেন না থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অতিরিক্ত আর্দ্রতা দাঁদ রোগ সৃষ্টি করতে পারে।

আলুর মড়ক রোগ দমন: Phytopthora infestans নামক ছত্রাকের আক্রমনে এ রোগ হয়ে থাকে। প্রতি বছর আমাদের দেশে এ রোগের কারণে ব্যাপক ক্ষতি সাধতি হয়।

প্রতিরোধের উপায়

রোগ হওয়ার পর করণীয়

আলু উত্তোলন পদ্ধতি: আলু উত্তোলনের সময় সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে ফসলের গুণগত মান অক্ষুণ্ণ থাকে এবং সংরক্ষণের জন্য উপযুক্ত হয়। আলু উত্তোলনের জন্য শুষ্ক, উজ্জ্বল এবং ভালো আবহাওয়া নির্বাচন করতে হবে। উত্তোলনের ৭-১০ দিন আগে জমিতে সেচ বন্ধ করতে হবে, যাতে আলুর খোসা শক্ত হয়। এক সারির পর এক সারি কোদাল বা লাঙ্গল দিয়ে আলু উঠাতে হবে। উত্তোলনের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন আলু আঘাতপ্রাপ্ত না হয়। উত্তোলনের পর আলু প্রখর রৌদ্রে ফেলে রাখা যাবে না, কারণ তাতে আলুর মান নষ্ট হতে পারে। মাঠে প্রাথমিক বাছাইয়ের মাধ্যমে কাটা, ফাটা, ক্ষতিগ্রস্ত এবং আংশিক পচা আলু পৃথক করতে হবে। ভালো আলু থেকে এসব আলু আলাদা করে রাখতে হবে, যাতে গুণগত মান বজায় থাকে।

পরিবহন ও সংরক্ষণ: আলু উত্তোলনের পর সতর্কতার সাথে বস্তা বা চট দ্বারা আবৃত ঝুড়িতে করে অস্থায়ী শেডে আনতে হবে।আলুর বস্তা বা ঝুড়ি আছড়ানো যাবে না, কারণ এতে আলুর চামড়া উঠে যেতে পারে বা আলু থেতলে যেতে পারে।

উপসংহার: বাংলাদেশের জন্য আলু একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ফসল। আধুনিক পদ্ধতিতে আলু চাষ করলে উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং কৃষকের আর্থিক উন্নতি ঘটে। উচ্চ ফলনশীল জাত, উন্নত বীজ, সঠিক মাটি প্রস্তুতি, সার, সেচ, রোগ দমন প্রযুক্তি এবং ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করলে বাংলাদেশে আলু চাষ আরও লাভজনক হবে। সঠিক পরিকল্পনা, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, এবং বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নতির মাধ্যমে আলু দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কৃষকের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

-লেখকঃ পরিচালক (জনশক্তি ও প্রশিক্ষণ), বিএআরসি, ঢাকা।