প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিদের রক্ষায় ডিম আমদানি বন্ধ করুন

Category: ফারমার্স এন্ড ফার্মিং প্রডাক্টস্ Written by Shafiul Azam

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: দেশের প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিদের রক্ষায় প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে ডিম আমদানি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে "ভেটেরিনারি ডক্টর'স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভ্যাব)"। আজ রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানান ভ্যাব সভাপতি প্রফেসর ড.মোঃ মাহবুব আলম ও মহাসচিব ডাঃ কবির উদ্দিন আহমেদ।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারত থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ২ লাখ ৩১ হাজার পিস মুরগির ডিম আমদানি করা হয়েছে। তথ্যমতে আরো ৪৭ লক্ষ ডিম আমদানি পাইপ লাইনে আছে। ভারতীয় ট্রাকে এই ডিম আমদানি হয় বলে গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে।

"ভেটেরিনারি ডক্টর'স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভ্যাব)" দেশীয় পোল্ট্রি শিল্পকে ধ্বংসের পাঁয়তারা ও লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের পরিপ্রেক্ষিত এই খাতের মানুষদের কর্মহীন করার চক্রান্ত হিসেবে ডিম আমদানির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই পদক্ষেপ দেশীয় পোল্ট্রি শিল্পের জন্য মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনবে, যেখানে দেশের ৮০-৮৫% ডিমের চাহিদা প্রান্তিক খামারিরা পূরণ করে আসছে। ডিম আমদানি না করে পোল্ট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার মূল্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দেশীয় উৎপাদন ধরে রাখার পদক্ষেপ নেওয়া যখন সরকারের প্রধান লক্ষ হওয়া উচিত ছিল তখন ভারত থেকে ডিম আমদানী হবে দেশের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে একটি আত্মঘাতী সিদ্বান্ত বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

বর্তমান পোল্ট্রি সেক্টরে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে প্রায় ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা প্রান্তিক খামারিদের টিকিয়ে রাখতে পোল্ট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার দাম কমানোরও ব্যবস্থা করতে হবে এবং ডিম-মরগীর সাপ্লাই চেইনে মধ্যসত্বভোগীদের সিন্ডিকেটের দৌরাত্ব কমিয়ে এনে উৎপাদন কারী ও ভোক্তাবান্ধব পোল্ট্রি শিল্প গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবী।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে "ভেটেরিনারি ডক্টর'স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভ্যাব)"-এর পক্ষ থেকে বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করা হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে-

১. ডিম আমদানির পরিবর্তে পোল্ট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার মূল্য হ্রাস করুন: পোল্ট্রি শিল্পে উৎপাদন খরচ কমাতে মুরগির বাচ্চা ও ফিডের মূল্য কমানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিন।

২. প্রান্তিক খামারিদের সুরক্ষা দিন। সহজ শর্তে ঋণ ও অন্যান্য সুবিধা দিয়ে তাদের উৎপাদনে টিকিয়ে রাখুন এবং দেশীয় শিল্প তথা উৎপাদন ব্যবস্থাকে সুরক্ষাদিন।

৩. সিন্ডিকেট ভাঙার পদক্ষেপ নিন। পোল্ট্রির খাদ্য বাচ্চা, ডিম, মুরগীর সরবরাহ ব্যবস্থায় বিদ্যমান সকল কর্পোরেট সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সরকারকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। মুরগির বাচ্চার উৎপাদন খরচ কমাতে আমদানি ব্যবস্থা গড়ে তুলুন।

৪. দেশীয় উৎপাদন ধরে রাখুন: আমদানির পরিবর্তে দেশীয় উৎপাদন ও রপ্তানিতে গুরুত্ব দিন এবং পোল্ট্রি খামারীদের পাশে দাঁড়ান।

বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে "ভেটেরিনারি ডক্টর'স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভ্যাব)" বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যেন এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্পকে রক্ষা করেন। দেশের লক্ষ লক্ষ প্রান্তিক খামারি ও উদ্যোক্তা এই শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। তাদের রক্ষায় ফিড ও মুরগির বাচ্চার মূল্য কমিয়ে, উৎপাদন খরচ হ্রাসের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি বলে মনে করে "ভেটেরিনারি ডক্টর'স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভ্যাব)" ।