মানিকগঞ্জে “হিমায়িত মাংস ও দুধ খাওয়ার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণা সপ্তাহ” পালন

Category: ফারমার্স এন্ড ফার্মিং প্রডাক্টস্ Written by Shafiul Azam

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: হিমায়িত খাদ্যের পুষ্টিগুণ ও নিরাপত্তা বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য সারাদেশে ১২ মার্চ থেকে ১৮ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত “হিমায়িত মাংস ও দুধ খাওয়ার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণা সপ্তাহ” পালন করা হচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংক এর সহায়তায় আইআরজি ডেভলোপমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড (আইআরজিডিএসএল) ১৭ মার্চ ২০২৫, দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে একটি বিশেষ ক্যাম্পেইন আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মোহাম্মদ মজিবুর রহমান। অনান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কৃষি ও প্রাণিসম্পদ অর্থনীতিবিদ ও প্রকল্প টিম লিডার প্রফেসর ড. এস এম ফখরুল ইসলাম, প্রাণিসম্পদ ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ ড. এস এম রাজিউর রহমান, শিবালয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মো. ফারুক হোসেন এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন তারেক মাহমুদ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, হিমায়িত মাংস ও পাস্তুরিত দুধ নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত, কারণ এটি আধুনিক প্রক্রিয়ায় সংরক্ষিত হয়। হিমায়িত মাংস সঠিক উপায়ে সংরক্ষণের ফলে এতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর সুযোগ কম থাকে এবং এর পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকে। অপরদিকে, বাজারের খোলা মাংস ও দুধ সংরক্ষণের মানদণ্ড অনুসরণ না করায় তা স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। খোলা মাংসে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে, যা ফুড পয়জনিংসহ নানা রোগের কারণ হতে পারে। তাছাড়া, কাঁচা দুধে টিবি, ব্রুসেলোসিস ও সালমোনেলা সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে, যা মানুষের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

প্রাণিসম্পদ ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ ড. এস এম রাজিউর রহমানের মতে, সঠিকভাবে সংরক্ষিত হিমায়িত মাংসের প্রোটিন, আয়রণসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান তাজা মাংসের মতোই বজায় থাকে এবং চর্বির অক্সিডেশন কম থাকায় এর পুষ্টিগুণ দীর্ঘসময় অক্ষুণ্ণ থাকে। তাই প্রতিদিনের সুস্থ খাদ্যাভ্যাস গঠনে নিরাপদ ও সঠিকভাবে সংরক্ষিত দুধ-মাংস গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি, প্যাকেটজাত দুধ ও মাংসে যথাযথ লেবেলিং থাকে বলে ট্রেসেবিলিটি নিশ্চিত করা যায়, যা খাদ্য নিরাপত্তা ও ভোক্তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিশিষ্ট কৃষি ও প্রাণিসম্পদ অর্থনীতিবিদ ও প্রকল্প টিম লিডার প্রফেসর ড. এস এম ফখরুল ইসলাম, বলেন, হিমায়িত খাদ্য সম্পর্কে বাংলাদেশের ভোক্তাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। ক্রেতাদের সচেতন করার জন্য আমরা সারাদেশে একটি সমন্বিত প্রচারণা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। তিনি আরও বলেন, চাহিদা বাড়লে বাংলাদেশে কোল্ড চেইন ব্যবস্থাপনার জন্য বিনিয়োগ বাড়বে ও খাদ্যের পচন কমিয়ে বাজারের মূল্য কমবে। ফলে খামারি, ব্যবসায়ী ও ভোক্তাগণ উপকৃত হবেন ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মানিকগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, প্রতিটা বাজারে নির্দিষ্টস্থানে স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব উপায়ে প্রাণি জবাই করতে হবে। তা না হলে পরিবেশ দূষিত হবে এবং আমরাও নানারকম রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারি। হিমায়িত খাদ্য পচন ধরার সম্ভাবনা থাকে না জন্য এটা অধিক স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ।

আইআরজিএসএল এই প্রচারণা সপ্তাহে বিভিন্ন ব্যানার, লিফলেট, গণমাধ্যম প্রচার, সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে সরাসরি সংলাপের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করতে কাজ করছে।

“সচেতন ভোক্তা, স্বাস্থ্যবান পরিবার—নিরাপদ খাবারে হিমায়িত দুধ-মাংসের অগ্রাধিকার!”