রাজশাহীতে পার্টনার প্রোগ্রামের আঞ্চলিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

Category: ফারমার্স এন্ড ফার্মিং প্রডাক্টস্ Written by Shafiul Azam

মো: দেলোয়ার হোসেন: খোরপোষের কৃষিকে রুপান্তরের মাধ্যমে বানিজ্যিক কৃষির মধ্য দিয়ে পুষ্টি চাহিদা পূরণ পার্টনার প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য বলেন, কর্মশালার প্রধান অতিথি বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) খন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি। পার্টনার প্রোগ্রামের মাধ্যমে কৃষকের উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণ করা হলে কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের নায্য মূল্য পাবে।

তিনি বলেন, কৃষক অনেক কষ্ট করে ফসল উৎপাদন করেও মৌসুমে ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত হয়। সংরক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় কৃষক তার আমের মূল্য কম পাচ্ছে, আলু চাষীকে কোল্ড ষ্টোরেজে অনেক অর্থ ব্যয় করে আলু সংরক্ষণ করতে হয়। তাই রাজশাহী অঞ্চলে আম প্রসেজিং ইউনিট স্থাপন করলে কৃষক সারা বছরব্যাপী লাভবান হতে পারবেন। তিনি পার্টনার প্রোগ্রামের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় কৃষকের উৎপাদিত পণ্য অপচয়ের হাত থেকে রক্ষার দীর্ঘ স্থায়ী ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়ে কর্মশালার শুভ উদ্বোধনী ঘোষনা করেন।

গত বৃহস্পতিবার ২৬শে জুন/২০২৫ খ্রিঃ তারিখ প্রাইমারী শিক্ষক ট্রেনিং ইনষ্টিটিউট (পিটিআই) রাজশাহীর কনফারেন্স রুমে প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচার এন্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনিউরশীপ এন্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার) প্রোগ্রামের আঞ্চলিক কর্মশালা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাজশাহী অঞ্চল রাজশাহীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাজশাহী অঞ্চল, রাজশাহীর অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো: আজিজুর রহমানের সভাপত্বিতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্প্রসারণ উইং এর যুগ্ম সচিব দীপঙ্কর বিশ্বাস, রাজশাহী আঞ্চলিক বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির আঞ্চলিক বীজ প্রত্যয়ন অফিসার কৃষিবিদ ড. মোতালেব হোসেন এবং পার্টনারের প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর কৃষিবিদ মো: আবুল কালাম আজাদ।

কর্মশালার শুরুতেই পার্টনারের এডিশনাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর কৃষিবিদ ড. গৌর গোবিন্দ দাশ তাঁর স্বাগত বক্তব্যে রাজশাহী অঞ্চলে পার্টনার প্রোগ্রামে কার্যক্রম সুন্দর ও সুষ্ঠ ভাবে পরিচালিত করায় স্টেক হোল্ডারগণকে ধন্যবাদ জানান। পার্টনার প্রোগ্রাম মুলত ১০ টি ডিয়েলাইট এর মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। তিনি ডিয়েলাইট সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করেন। রাজশাহী অঞ্চলে সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে এবং প্রয়োজনে রিভিশন করা হবে। তিনি কর্মশালায় সকল স্টেক হোল্ডার উপস্থিত থাকায় ধন্যবাদ জানান।

বিশেষ অতিথি যুগ্ম সচিব মহোদয় তাঁর বক্তব্যে বলেন, খাদ্য নিরাপত্তায় আমাদের কাজ করতে হবে। পার্টনার প্রোগ্রামের নাম কিন্তু ছোট তবে অর্থ অনেক বড়। এখানে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের কাজ করার অনেক সুয়োগ রয়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কৃষি তথা কৃষকের উন্নয়ন সাধন করা সম্ভব। পুষ্টি চাহিদা পূরণ, খাদ্য নিরাপত্তা, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা, কৃষকের উপাদিত পণ্যের মূল্য নিশ্চিত করার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন ওয়ার্কসপ ভাল হয়েছে এবং এর সাফল্য কামনা করেন।

বিশেষ অতিথি প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর বলেন, পার্টনার প্রোগ্রামের লক্ষ্য হলো খাদ্য শস্য উৎপাদনে বৈচিত্র আনয়ন, মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কৃষিকে বানিজ্যিকিকরণ ও বেকার সমস্যা দূরীকরণ করে কৃষকের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা, খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কৃষকের স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমিয়ে আনা হলো পার্টনারের মুল লক্ষ্য। পার্টনার বিশ্ব ব্যাংক ও ইফাদের অর্থায়নে পরিচালিত। বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসক্রিপশন আমাদের ফলো করতে হয়। অভ্যন্তরিন তদারকির ফলাফলে ওপর নির্ভর করে পরবর্তী প্রোগ্রাম এক্সটেনশন করা সম্ভব। তাই সকল কর্মকর্তাকে দায়িত্বের সংগে কাজ করার অনুরোধ জানান।

সভাপতি তাঁর সমাপনী বক্তব্যে বলেন, আমরা মানুষের জন্য কাজ করি, মানুষের উন্নয়নে কাজ করি। আজকের ওয়ার্কসপে প্রানবন্ত আলোচনা হয়েছে। এখানে অনেক সুপারিশ ও সমস্যা উঠে এসেছে যা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্টনার প্রোগ্রাম আরো সমৃদ্ধশালী হবে। তিনি ওয়ার্কসপে উপস্থিত হয়ে সহযোগিতা করার জন্য সকল কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে সমাপনী ঘোষনা করেন।

কর্মশালা ২টি সেশনে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম সেশনে স্বাগত বক্তব্য ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় এবং দ্বিতীয় সেশন ছিল কারিগরী সেশন। এখানে নলডাঙ্গা নাটোর, পুঠিয়া রাজশাহী ও মান্দা নওগাঁ উপজেলা কৃষি অফিসারগণ, জেলা পর্যায়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং স্টেক হোল্ডারের মধ্যে বিএমডিএ, কৃষি বিপনন অধিদপ্তর ও ধান গবেষনা ইনষ্টিটিউট তাদের কার্যক্রম পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন। মুক্ত আলোচনায় উপ পরিচালকগণ অংশগ্রহন করেন। স্বাগত বক্তব্যের পর ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে পার্টনার প্রোগ্রামের সার্বিক কার্যক্রম তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত পরিচালক, উপ পরিচালক, জেলা প্রশিক্ষন কর্মকর্তা, অতিরিক্ত উপ পরিচালক, উপজেলা কৃষি অফিসার, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, বিএমডিএ, কৃষি বিপনন, বিএডিসি, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, ধান গবেষণা, গম ও ভুট্টা গবেষণা, বিনা গবেষণা, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন, সরেজমিন গবেষণা কেন্দ্র ও কৃষি তথ্য সার্ভিসসহ বিভিন্ন দপ্তর প্রধান ও প্রতিনিধি ২০০ জন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।