খুলনায় ‘মাশরুম চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্প’র আঞ্চলিক কর্মশালা-২০২৫ অনুষ্ঠিত

Category: ফারমার্স এন্ড ফার্মিং প্রডাক্টস্ Written by Shafiul Azam

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খুলনা অঞ্চলের কনফারেন্স রুমে ‘মাশরুম চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্প’ এর উদ্যোগে আজ শনিবার ২০ ডিসেম্বর আঞ্চলিক কর্মশালা-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ ওবায়দুর রহমান মন্ডল।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আলোচনা করেন খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য কৃষিবিদ ড. এস এম ফেরদৌস ও বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সীর আঞ্চলিক বীজ প্রত্যয়ন অফিসার কৃষিবিদ বিভাস চন্দ্র সাহা, সাতক্ষীরার উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম, উপ-সহকারী কৃষি অফিসারদের পক্ষে ফুলতলার সালমা সুলতানা।

প্রধান অতিথি কৃষিবিদ মোঃ ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, মাশরুম চাষের জন্য অতিরিক্ত জমির প্রয়োজন পড়ে না। বাসগৃহে পরিবেশ সৃষ্টি করে মাশরুম চাষ করা যায়। মাশরুম চাষ করতে খুব বেশি অর্থেরও প্রয়োজন নাই। মাশরুম যে একটি হালাল খাবার তা প্রচারের জন্য দর্শনীয় স্থানগুলোতে বিজ্ঞাপন দেয়া যায়। স্ট্রিট খাবার হিসেবে মাশরুমকে জনপ্রিয় করার জন্য তিনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ভুমিকা জোরদারকরণের জন্য আহবান জানান। কৃষিবিদ ওবায়দুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাশরুম চাষ ও পারিবারিক পর্যায়ে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য অনুরোধ করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জনসমাগম স্থানে মাশরুমের তৈরি খাবার বিক্রয়ের জন্য উদ্যোক্তা তৈরি করার জন্যও তিনি আহবান জানান।

মাশরুম চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ ড. আখতার জাহান কাঁকন কর্মশালার প্রারম্ভে প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বিবরণ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশে মাশরুম উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন, দারিদ্র্য হ্রাসকরণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং বেকারত্বের কারণে সৃষ্ট সামাজিক সমস্যা কমিয়ে আনা। তিনি জানান, ৬৪ জেলার ১৬০টি উপজেলা ও ১৫টি মেট্রোপলিটন থানায় প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

বাংলাদেশে চাষকৃত ও চাষ উপযোগী মাশরুমগুলো চাষের পরিবেশ ও ঔষধি গুণসমুহ পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। প্রকল্পের প্রধান প্রধান কার্যক্রমসমুহ বর্ণনাকালে তিনি বলেন মাশরুম চাষের জন্য উৎপাদক পর্যায়ে উদ্যোক্তা তৈরি করা হচ্ছে যাতে প্রকল্পের কার্যক্রম না থাকলেও মাশরুমের চাষ অব্যাহত থাকে।

বিশেষ অতিথি ড. এস এম ফেরদৌস বলেন, মাশরুম চাষ ও খাওয়ার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে জনসমাগম স্থানে মাশরুমের তৈরি বিভিন্ন ধরণের খাবার প্রদর্শনের জন্য আহবান জানান। কৃষিবিদ বিভাস সাহা বলেন, সব ধরণের প্রশিক্ষণ কালে মাশরুম চাষ পযুক্তি ও খাবার নিয়ে আলোচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন।

কর্মশালায় বাগেরহাট জেলার পক্ষে অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ রমেশ ঘোষ ও নড়াইল জেলার পক্ষে কৃষিবিদ মোঃ রোকনুজ্জামান পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। এছাড়া সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ মনিরুজ্জামান ও ফুলতলা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ আরিফুর রহমান সংশ্লিষ্ট উপজেলায় প্রকল্পের কার্যক্রম ও সমস্যাসমুহ আলোচনা করেন। সফল উদ্যোক্তাদের মধ্যে সাতক্ষীরার সাদ্দাম হোসেন, ফুলতলার অলিউর রহমান ও নাইম, নড়াইলের অসিত বসু, বাগেরহাটের রিপন কুমার রায় ও সুব্রত কুমার প্রধান প্রমুখ তাদের মাশরুম চাষের সফলতা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা ব্যক্ত করেন।

দিনব্যাপি কর্মশালায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী, শিক্ষকবৃন্দ, স্ট্রীট ফুড বিক্রেতা, সুপার শপ ও অভিজাত হোটেলের প্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধিসহ শতাধিক ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। ‍উন্মুক্ত আলোচনা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ রফিকুল ইসলাম ও সমগ্র অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করেন করেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষ্ণা রানী মন্ডল।