বাকৃবির সবুজ ক্যাম্পা‌সে প্রাণ ফিরবে কাল

Category: কৃষিবিদ ও ক্যাম্পাস Written by Shafiul Azam

বাকৃবি প্রতিনিধি: পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে ১৪ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) প্রশাসন। আগামীকাল এই ছুটি শেষ হবে। ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বাড়ি চলে যায়। এতে করে সাড়ে ১২শ একরের বিশাল বাকৃবি ক্যাম্পাস এক প্রকার ভূতুড়ে পরিবেশে পরিণত হয়েছিল।

অথচ বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সময় সমাবর্তন চত্বর, বৈশাখী চত্বর, ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়, টিএসসি, মরণ সাগর এবং আমবাগান ছিল প্রাণময় ও সরগরম। দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়, হোটেলগুলোর মুখরোচক খাবার, দোকানিদের ডাকাডাকি—সব মিলিয়ে জমজমাট পরিবেশ ছিল। কিন্তু এখন শুধু চারদিকে নীরবতা। শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের অভাবে অনেক হোটেলও বন্ধ রেখেছেন মালিকরা। এতে করে তা‌দের লোকসান গুনতে হচ্ছে।

তবে আশার কথা হলো ১৪ দিনের ছুটিতে বাকৃবির সবুজ ক্যাম্পাস সেজেছে এক অপরূপ সাজে। সবুজ ক্যাম্পাস এখন আরও বেশি সবুজ। গাছে গাছে নতুন পল্লব, নতুন ফুলের কুঁড়ি। ডাল থেকে ডালে উড়ে বেড়াচ্ছে পাখির দল। কোথাও আবার বেঁধেছে নীড়। এছাড়াও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গা থেকে ভেসে আসছে পাকা ফলের মিষ্টি ঘ্রাণ। গ্রীষ্মের তপ্ত রোদ আর হালকা বৃষ্টিতে পেকেছে আম, জাম ও কাঁঠাল। এসময় অনেক রিকশাওয়ালা এবং বাইরের লোকজনকে গাছে উঠে ফল পাড়তে ও কুড়াতেও দেখা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন শাখা ঘুরে দেখা যায়, নীল রঙের বাকৃবি বাসগুলোর গায়ে জমেছে ধুলোর আস্তরণ। অনেকে আবার সেই ধুলো মুছে বাস প্রস্তুত করতে ব্যস্ত।

সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বারের মোড়, ফার্স্ট গেইট এবং কেআর মার্কেট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ে ফিরছেন। কারও কাঁধে ব্যাগ, কারও হাতে খাবারের থ‌লি। কেউ রান্না করা গরুর মাংস টিফিন ক্যারিয়ারে নিয়ে আসছেন, কেউবা প্লাস্টিক ব্যাগে কাঁচা মাংস বহন কর‌ছেন ফাঁকা সময় রান্না করে খাওয়ার জন্য। অনেকেই আবার সঙ্গে করে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি ফল এনেছেন ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ ঘু‌রে দেখা যায়, শ্রেণিকক্ষগুলোতে ঝাড়ু দেওয়া হচ্ছে। আগামীকাল থেকে পাঠদান শুরু করার জন্য প্রস্তুতি চলছে।

বাড়ি থেকে আসা কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবারের ছুটি তাদের দারুণ কেটেছে। ছু‌টির এই সময় উপ‌ভোগ কর‌তে কখনও বা পাহাড়ে ছুটে গেছেন, কখনও নৌকা নিয়ে নদীর অজানায় ভেসেছেন। বাড়ির সুস্বাদু খাবারের স্বাদ এখনও জিহ্বায় লেগে আছে। এখন হলে বা হোটেলের সেই স্বাদহীন খাবারগুলো খাওয়ায় বেশ কঠিন !