"বিটি বেগুন চাষে কীটনাশকের অযাচিত ব্যবহার কমবে", বাকৃবি অধ্যাপক

Category: গবেষণা ফিচার Written by Shafiul Azam

বাকৃবি প্রতিনিধি: যদিও শুরুতে বিটি বেগুন নিয়ে অনেক বিতর্ক ছিল তবে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি খুবই সম্ভবনাময় ফসল। এটি প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবেও কাজ করায় কীটনাশক ব্যবহার কমার পাশাপাশি এই বেগুন কৃষকের অতিরিক্তি খরচও কমাবে। ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা মূলত লার্ভা অবস্থায় বেগুনের ক্ষতি করে থাকে। তাছাড়া বিটি বেগুন ফলনে কীটনাশকের অযাচিত ব্যবহার কমবে। বিটি বেগুন, জেনেটিক্যালি মডিফায়েড ফসল ও এর পরিচর্যা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক শরীফ-আল-রাফি।

বাংলাদেশের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ফসল বেগুন । এদেশের আবওহাওয়ার অনুকূল হওয়ায় বেগুন চাষে ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ প্রায়ই দেখা যায়। ফলাফল প্রতিবছর এই পোকার আক্রমনে প্রচুর পরিমাণে বেগুন নষ্ট হয়ে থাকে। বাংলাদেশ বেগুন চাষের জন্য অন্যতম ঝুঁকি এই পোকা। এর প্রতিরোধে সাধারনত কৃষকেরা কীটনাশক ব্যবহার করে থাকে। কিন্ত এসব কীটনাশক পানি, খাবার বা পরিবেশ এর সাথে মিশে মানুষ, গবাদিপশুর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এই পরিপেক্ষিতেই বিটি-বেগুন এর ধারণা আসে।

অধ্যাপক শরীফ-আল-রাফি বলেন, বিটি শব্দটি এসেছে Bacillus thuringiensis (Bt) নামক ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়া সাধারণত কীটপতঙ্গদের (যেমন বেল বোরার) বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে কাজ করে। এই ব্যাকটেরিয়াটি ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা কিংবা লার্ভা গ্রহণে গিজার্ড নষ্ট হয়ে যায়। ফলাফল স্বরূপ পোকা বা লার্ভার অন্ত্র নষ্ট হয়ে মারা যায়। বিজ্ঞানীরা এই ব্যাকটেরিয়ার ওই বিশেষ জিন বেগুনের মধ্যে সংযুক্ত করে যার ফলে বেগুনটি কীটদের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকে।

তিনি আরও বলেন, বিটি বেগুন মূলত একটি জেনেটিক্যালি মডিফায়েড বেগুন যেটি Bacillus thuringiensis (Bt) ব্যাকটেরিয়ার জিন ধারণ করে যা কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে বেগুনকে রক্ষা করে এবং এর নামকরণ হয়েছে সেই জিন (Bt) এর জন্য।

বিটি বেগুন নিয়ে সাধারণের ধারণা নিয়ে তিনি বলেন, বিটি বেগুন নিয়ে আমাদের একটি ভুল ধারণা আছে। অনেকে মনে করেন যে বেগুন খেলে পোকার ক্ষতি করে সেটা মানুষের ক্ষতি করবে কিনা। কীটনাশক যেমন কীটপতঙ্গের ক্ষতি করে তেমনি মানুষেরও ক্ষতি করে। কিন্তু বিটি বেগুনের ক্ষেত্রে যে ব্যাকটেরিয়ার জিন ব্যবহার করা হয় সেটি শুধু মাত্র ওই বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার ক্ষতি সাধন করে। এই জিন মানুষের অন্ত্রের কোন ক্ষতি করে না বরং নিরাপদ। চাষের ক্ষেত্রে বিটি বেগুনের জন্য আলাদা কোন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। সাধারণ বেগুনের মতই চাষকরা হয় এই বেগুন।