ইসলামের দৃষ্টিতে "আত্মশুদ্ধি" সফলতার অন্যতম সোপান

Category: ইসলাম ও জীবন Written by Shafiul Azam

ইসলামিক ডেস্ক: ইসলামের দৃষ্টিতে আত্মশুদ্ধি শুধু ব্যক্তিগত উন্নতিরই নয়, বরং সামগ্রিক সমাজ ও জাতির উন্নয়নের অন্যতম মূল চাবিকাঠি। কোরআন ও হাদিসে আত্মশুদ্ধিকে গুরুত্ব দিয়ে বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, প্রকৃত সফলতা অর্জনের জন্য আত্মার পরিশুদ্ধি অপরিহার্য।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই সাফল্য লাভ করবে সে, যে আত্মশুদ্ধি লাভ করে”* (সুরা আল আ’লা ৮৭:১৪)। একইভাবে আরও বলা হয়েছে, “অবশ্যই সফলকাম হয়েছে সেই ব্যক্তি, যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করেছে। আর ব্যর্থ হয়েছে সেই ব্যক্তি, যে নিজেকে পাপাচারে কলুষিত করেছে” (সুরা আল শামস ৯১:৯-১০)।

ইসলামিক স্কলারদের মতে, আত্মশুদ্ধি মানে শুধু আত্মার পরিশুদ্ধি নয়; বরং এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে চরিত্র গঠন, কুপ্রবৃত্তি দমন, অহংকার পরিহার, গিবত ও হিংসা থেকে মুক্ত থাকা এবং আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য অর্জন। একজন আত্মশুদ্ধ ব্যক্তি নিজের জন্য যেমন কল্যাণকর, তেমনি তার প্রভাব সমাজেও পড়ে ইতিবাচকভাবে।

বর্তমানে যখন সমাজে পারস্পরিক কলহ, সংঘাত ও নৈতিক অবক্ষয় প্রকট হচ্ছে, তখন আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব আরও বেশি করে অনুভব করা যাচ্ছে। ইসলাম শিক্ষা দেয়, আল্লাহর পথে আত্মসমর্পণই হচ্ছে প্রকৃত শান্তি ও সফলতার পথ। সুরা আলে ইমরানের ৮৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “তবে কি তারা আল্লাহর দীনের পরিবর্তে অন্য কিছু অনুসরণ করতে চায়? অথচ আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে সবই স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করেছে।”

ইসলামিক স্কলাররা মনে করছেন, ব্যক্তিপর্যায়ে আত্মশুদ্ধির চর্চা শুরু হলে সমাজে শান্তি, সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ ফিরে আসবে।

আত্মশুদ্ধির চর্চা কেবল ইবাদতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং প্রতিদিনের জীবনে ন্যায়নিষ্ঠা, সততা, সহানুভূতি ও অন্যের প্রতি দয়াশীল আচরণও এর অংশ। ইসলামি শিক্ষায় আত্মশুদ্ধি অর্জনের মাধ্যম হিসেবে তওবা, ইখলাস, তাকওয়া ও কোরআন-হাদিস অধ্যয়নকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

আত্মশুদ্ধি হচ্ছে ইসলামি আদর্শিক জীবনের ভিত্তি, যা মানুষকে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছে দেয় এবং পৃথিবীতেই এনে দেয় প্রকৃত সফলতা ও শান্তি। আসুন আমরা আত্মশুদ্ধির চর্চা করি এবং সুখী ও সুন্দর সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলি। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে কবুল করুন।-আমিন