অসুস্থদের খোঁজখবর নেওয়া, দোয়া করা ও তাদের পাশে দাঁড়ানো ইসলামের এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা

Category: ইসলাম ও জীবন Written by Shafiul Azam

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:তরুণ ইসলামিক চিন্তক কৃষিবিদ ডা. মোঃ শহিদুল্লাহ শরীফ বলেছেন, অসুস্থ ব্যক্তিদের খোঁজখবর নেওয়া, তাদের জন্য দোয়া করা এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো ইসলামের এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে নিয়মিতভাবে অসুস্থদের দেখতে যেতেন, তাদের সান্ত্বনা দিতেন এবং তাদের জন্য দোয়া করতেন।

ডা. শরীফ বলেন, “রোগীর কাছে বেশি সময় বসে থাকা উচিত নয়, তবে যদি দেখা যায় রোগী এতে সান্ত্বনা পায়, মন প্রফুল্ল হয়, তাহলে তাতে কোনো দোষ নেই।” তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা)-এর বাণী উদ্ধৃত করে বলেন, “রোগীর কাছে অতিরিক্ত সময় বসে থেকে তাকে অতিষ্ঠ করা অনুচিত।”

তিনি আরও বলেন, “বিধর্মীদের এয়াদাতের সময় সুযোগ হলে হিকমতের সঙ্গে ঈমান ও ইসলামের দিকে আহ্বান করা উচিত। কারণ রোগের সময় মানুষের মন নরম থাকে, সত্য গ্রহণের প্রবণতা বাড়ে।” তিনি হযরত আনাস (রা)-এর বর্ণিত একটি ঘটনার উল্লেখ করেন, যেখানে এক ইহুদি বালক অসুস্থ হলে নবী করিম (সা) তাকে দেখতে গিয়ে দ্বীনের দাওয়াত দেন, এবং সে ইসলাম গ্রহণ করে। নবী করিম (সা) তখন আল্লাহর প্রশংসা করে বলেন, “আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করেছেন।”

ডা. শরীফ বলেন, “অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া সুন্নাত এবং তার এয়াদাত করা একটি মুস্তাহাব আমল। তবে যদি দেখা যায় কোনো রোগীর দেখভালের কেউ নেই, তাহলে তাকে দেখতে যাওয়া ফরজের পর্যায়ে পড়ে।” তিনি বলেন, “রোগীর শিয়রে বসে সূরা ফাতিহা পড়ে তার জন্য দোয়া করা এবং তাকে সান্ত্বনা দিয়ে চলে আসা উত্তম। তবে যদি রোগী খুশি হয় এবং তার মন প্রফুল্ল থাকে, তাহলে কিছুটা সময় বেশি থাকা দোষের নয়।”

চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতেও রোগীর কাছে অপ্রয়োজনীয়ভাবে বেশি সময় থাকা অনুচিত বলে উল্লেখ করেন তিনি। “ডাক্তাররা বলেন, রোগীর বিশ্রাম ও মানসিক প্রশান্তির জন্য অল্প সময়ের সাক্ষাৎই উত্তম,” বলেন ডা. শরীফ।

তিনি সমাজের সকল শ্রেণির মানুষকে আহ্বান জানান, অসুস্থদের খোঁজখবর নেওয়া, তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং যাদের দেখভালের কেউ নেই তাদের প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়ার জন্য। “এটি শুধু মানবিক দায়িত্ব নয়, বরং ইসলামী দৃষ্টিতে এটি এক মহৎ আমল,” বলেন তরুণ এই ইসলামিক চিন্তক।

তিনি আরও বলেন, “অসুস্থদের জন্য দোয়া করা, তাদের মনোবল বাড়ানো এবং তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন সমাজে ভালোবাসা, ঐক্য ও মানবিকতার বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।”

মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সকলকে বেশি বেশি মহৎ আমল করার তাওফিক দিন।-আমিন