"রিজিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ" সূরা আল-আনকাবুতের বাণী মুমিনদের ঈমান আরও দৃঢ় করে

Category: ইসলাম ও জীবন Written by Shafiul Azam

ইসলামিক ডেস্ক:মহান আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের জন্য নির্ধারিত রিজিক কখনো প্রশস্ত করেন, আবার কখনো সীমিত করে দেন এটি তাঁর পরিপূর্ণ হিকমতের অংশ। পবিত্র কুরআনের সূরা আল-আনকাবুতের ৬২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন,
“আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা জীবিকা প্রশস্ত করেন এবং যার জন্য ইচ্ছা পরিমিত করে দেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কে সম্যক অবহিত।”

এই আয়াত মুমিনদের হৃদয়ে এক গভীর সত্য উপলব্ধি করিয়ে দেয় রিজিকের মালিক মানুষ নয়, সরকার নয়, কোনো প্রতিষ্ঠান নয় বরং একমাত্র রাব্বুল আলামিন। তিনিই জানেন কখন, কীভাবে, এবং কতটুকু রিজিক তাঁর বান্দাকে দেওয়া প্রয়োজন।

ইসলাম শেখায় যে পরিশ্রম করা অবশ্যই জরুরি, তবে রিজিকের আসল উৎস আল্লাহর অনুগ্রহ। অনেক সময় মানুষ প্রচুর চেষ্টা করেও কাঙ্ক্ষিত ফল পায় না, আবার কেউ সামান্য পরিশ্রমেই আল্লাহর রহমতে প্রচুর নেয়ামত পেয়ে যায়। এটি আল্লাহর জ্ঞান ও পরিকল্পনার অংশ যা মানুষের দৃষ্টির বাইরে।

যে মুমিন অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করে যে রিজিকের মালিক শুধুই আল্লাহ, তার মনে কখনো হতাশা জমে না। দুঃসময়েও সে জানে“আমার রব আমাকে দেখছেন, জানেন, এবং সর্বোত্তমটাই আমার জন্য নির্ধারণ করবেন।” এমন বিশ্বাস মানুষের অন্তরে স্থিরতা আনে, ঈমানকে করে আরও শক্তিশালী এবং আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ ভরসা স্থাপন করে।

কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে তাকওয়া, আল্লাহভীতি, সত্যনিষ্ঠা, হালাল উপার্জনের চেষ্টা ও শোকর আদায় রিজিক বৃদ্ধির মাধ্যম। যে মানুষ তার জীবনে আল্লাহর ভয় এবং কৃতজ্ঞতা ধরে রাখে, আল্লাহ তার রিজিক এমনভাবে বাড়িয়ে দেন যা মানুষের ধারণারও বাইরে।

“আর তিনি তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দেবেন, যা তার ধারণারও বাইরে। আর যে আল্লাহর উপর ভরসা করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর কাজ সিদ্ধ করেন। আল্লাহ তো প্রত্যেক কিছুর জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ধার্য করেছেন।”- (সূরা আত-তালাক: আয়াত ৩)

এই বার্তা শুধু ধর্মীয় নির্দেশই নয় এটি মুসলিম সমাজের জন্য এক গভীর মনস্তাত্ত্বিক শক্তি। যখন মানুষ বুঝতে পারে তার জীবিকার নিয়ন্ত্রণ দুনিয়ার হাতে নয়, বরং পরম দয়ালু আল্লাহর হাতে তখন দুশ্চিন্তা কমে যায়, হালাল-পথে স্থিরতা বাড়ে এবং আল্লাহর প্রতি ভরসা দৃঢ় হয়।