চলতি বোরো সংগ্রহ/২০২৪ মৌসুমে দেশের ১৫টি জেলায় জিংক ধান-চাল সংগ্রহ করা হবে

রাজধানী প্রতিনিধি: শিশু ও নারীদের মধ্যে জিঙ্কের ঘাটতি প্রকট হচ্ছে। জিঙ্কের অভাবেই শিশুরা খাটো এবং অপুষ্টিতে ভুগছে। চালের মাধ্যমে এই অপুষ্টি দূর করা সম্ভব। কারন মোট চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ পুষ্টি চালে পাওয়া সম্ভব। তাই জিঙ্ক সমৃদ্ধ চাল উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি জনপ্রিয় করতে হবে। এ লক্ষে চলতি বোরো সংগ্রহ/২০২৪ মৌসুমে ১৫টি জেলায় জিংক ধান-চাল সংগ্রহ করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাজধানীর তোপখানাস্থ সিরডাপ মিলনায়তনে "National Coordination workshop for Biofortified Zinc Paddy and Rice Procurement in Boro Season,2024"- শীর্ষক এক কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়। Directorate General of Food এবং The Global Alliance for Improved Nutrition (GAIN) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে। এতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও খাদ্য অধিদপ্তরের জেলা ও আঞ্চলিক পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশগ্রহন করেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মো:ইসমাইল হোসেন এনডিসি।

খাদ্য অধিদপ্তর-এর মহাপরিচালক (গ্রেড-১) মোঃ শাখাওয়াত হোসেন-এর সভপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)-এর চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ এনডিসি, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবির, বৃষিবিদ মো: তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, পরিচালক, সরেজমিন উইং, ডিএই। স্বাগত বক্তব্য রাখেন খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

কর্মশালা থেকে জানা যায় ভাত/চালের মাধ্যমে দেহের পুষ্টিচাহিদা পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় অনুপুষ্টি সমৃদ্ধ বায়োফটিফাইড ধান উৎপাদনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা মানবদেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় জিংক সমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন। যেমন ব্রি-৬২, ব্রি-৭২, বিনাধান-২০, ব্রি-৭৪, ব্রি-৮৪, বঙ্গবন্ধু-১০০, ব্রিধান১০২ ইত্যাদি।

বর্ণিত জাতসমূহের মধ্যে ব্রি-৭৪ ধানটি বোরো মৌসুমে উৎপাদিত হয়। জাতটি উচ্চফলনশীল মোটা জাতের। প্রচলিত পদ্ধতিতে ছাঁটাইয়ের পর প্রতি কেজি চালে ২৪.২ মিলিগ্রাম জিংক পাওয়া যায়, যা শরীরের প্রায় ৭০% পর্যন্ত জিংকের চাহিদা পূরণ করে। খাদ্য বিভাগ যেমন মোটা চাল/ধান সংগ্রহ করে ব্রি-৭৪ জাতটি সেই পর্যায়ের।

কর্মশালায় আরো বক্তব্য রাখেন কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক ড. সুরজিৎ সাহা রায়। "Role of GAIN in Commercialization of Biofortified Crops (CBC) in Bangladesh Developing Nutritious Food Systems"- শীর্ষক পেপার উপস্থাপন করেন Ashek Mahfuz, PhD Portfolio Lead, LSFF and Value Chain এবং "Nourishing Soil, Nourishing Health through Biofortified Lentil" শীর্ষক পেপার উপস্থাপন করেন যথাক্রমে Abul Bashar Chowdhury, Project Manager and Ahmed Shihab Zaman, Project Manager GAIN Bangladesh

অনুষ্ঠানে জিঙ্কসমৃদ্ধ চালের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য একটি উন্মুক্ত আলোচনার আয়োজন করা হয়। এ পর্বটি পরিচালনা করেন খাদ্য অধিদপ্তর-এর মহাপরিচালক (গ্রেড-১) মোঃ শাখাওয়াত হোসেন। কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন GAIN-এর কনসালট্যান্ট কৃষিবিদ ড. এম. মনির উদ্দিন।

উল্লেখ্য, চলতি বোরো সংগ্রহ/২০২৪ মৌসুমে ১৫টি জেলায় জিংক ধান-চাল সংগ্রহ করা হবে। জেলাগুলো হচ্ছে ১) ভোলা, ২) রংপুর, ৩) বরিশাল, ৪) কুমিল্লা, ৫) কক্সবাজার, ৬) লালমনিরহাট, ৭) কুড়িগ্রাম, ৮) মেহেরপুর, ৯) পটুয়াখালী, ১০) গাইবান্ধা, ১১) শরিয়তপুর, ১২) চাঁদপুর, ১৩) ফেনী, ১৪) ঝালকাঠি এবং ১৫) নীলফামারী।