বিশ্ব পোলিও দিবস উপলক্ষে রোটারি ক্লাব অব রাজশাহী সেন্ট্রালের বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সম্পন্ন

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: বিশ্ব পোলিও দিবস উপলক্ষে রোটারি ক্লাব অব রাজশাহী সেন্ট্রালের উদ্যোগে এক বিশাল বর্ণাঢ্য র‌্যালি এবং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। "একদিন, একটি লক্ষ্য: পোলিও শেষ করা" এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজশাহীর চারটি রোটারি ক্লাব—রাজশাহী সেন্ট্রাল, মেট্রোপলিটন, পদ্মা ও রাজশাহী—সম্মিলিতভাবে এই কার্যক্রম পরিচালনা করে।

এই বিশেষ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ছিল পোলিও নির্মূলের লক্ষ্যে মানুষকে সচেতন করা এবং রোটারির দীর্ঘকালীন প্রতিশ্রুতির কথা নতুন করে তুলে ধরা। রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ১৯৮৫ সালে প্রথমবারের মতো পোলিও নির্মূলের পরিকল্পনা ঘোষণা করে, যা আজও মানবজাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত। সেই প্রতিশ্রুতি ধরে রেখে বিশ্বব্যাপী রোটারি সংগঠনগুলো পোলিও মুক্ত বিশ্বের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

র‌্যালিটি রাজশাহীর সাহেব বাজার আলুপট্টি থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো প্রদক্ষিণ করে জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়। র‌্যালির নেতৃত্ব দেন রোটারি ক্লাব অব রাজশাহী সেন্ট্রালের সিপি রোটারিয়ান হাসিবুল হাসান নান্নু। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আইপিপি রোটারিয়ান ড. মো. হেমায়েতুল ইসলাম আরিফ, প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট রোটারিয়ান মো. মিজানুর রহমান, ডিরেক্টর রোটারিয়ান ইঞ্জিনিয়ার শরিফুল হক, জয়েন্ট ট্রেজারার রোটারিয়ান ডা. তাহসিনা শামিম তাসু, রোটারিয়ান মো. সাব্বির হোসেন, মিসেস সাব্বির হোসেন এবং শাহারিয়ার হোসেন। র‌্যালিতে অন্যান্য রোটারি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও রোটারেক্ট সদস্যরা উজ্জীবিতভাবে অংশগ্রহণ করেন।

র‌্যালির শেষে জিরো পয়েন্টে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় রোটারি ক্লাব অব রাজশাহী সেন্ট্রালের আইপিপি রোটারিয়ান ড. মো. হেমায়েতুল ইসলাম আরিফ পোলিও নির্মূলের লক্ষ্যে রোটারির অবদান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "১৯৮৫ সালে রোটারি ইন্টারন্যাশনাল যখন প্রথম পোলিও নির্মূলের ঘোষণা দেয়, তখন এটি ছিল এক সাহসী পদক্ষেপ। সেই প্রতিশ্রুতি আজও অটুট রয়েছে এবং পোলিও মুক্ত বিশ্বের জন্য আমাদের যাত্রা অব্যাহত আছে। এ ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে পারছি এবং এই প্রাণঘাতী রোগের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখছি।"

তিনি আরও বলেন, "পোলিও নির্মূল এখন অনেকটা সফলতার পথে, তবে আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে যতক্ষণ না এই রোগ পুরোপুরি নির্মূল হয়।"

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
আলোচনা সভার পর পদ্মা নদীর পাড়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পরিচালনা করা হয়। এই কর্মসূচির মাধ্যমে রোটারির সামাজিক ও পরিবেশগত দায়বদ্ধতাকে জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে সিপি রোটারিয়ান হাসিবুল হাসান নান্নু, আইপিপি রোটারিয়ান ড. মো. হেমায়েতুল ইসলাম আরিফ, প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট রোটারিয়ান মো. মিজানুর রহমান, ডিরেক্টর রোটারিয়ান ইঞ্জিনিয়ার শরিফুল হক, রোটারিয়ান ডা লোমান মনজ়ুর অপু এবং অন্যান্য রোটারিয়ানরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এই কর্মসূচি শুধুমাত্র পরিবেশের জন্যই নয়, বরং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ ও সুন্দর পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে পরিচালিত হয়েছে।

রোটারি ক্লাব অব রাজশাহী সেন্ট্রালের সদস্যরা ভবিষ্যতেও এ ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তারা জানান, পোলিও নির্মূলের পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্য সচেতনতা কর্মসূচি, শিক্ষামূলক উদ্যোগ এবং পরিবেশ সংরক্ষণে আরও বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

এই র‌্যালি এবং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে রাজশাহীতে পোলিও মুক্ত বিশ্ব গড়ার অঙ্গীকার পুনরায় দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হলো। রোটারি ক্লাব অব রাজশাহী সেন্ট্রাল এবং অন্যান্য ক্লাবের সদস্যদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সফল আয়োজন শহরের জনগণের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সঞ্চার করতে সক্ষম হয়েছে।