এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: কৃষক নির্ভর বাংলাদেশের প্রাণ কৃষি হল অনেকটাই প্রকৃতি শাসিত। প্রতি বছর প্রকৃতির রোষানলের শিকার হয় এ দেশের কৃষি ও কৃষক। খরা, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, শৈত্যপ্রবাহ ইত্যাদি আমাদের কৃষকদের চিরশত্রু। প্রতি বছরের ধারাবাহিকতাকে ছাপিয়ে সাড়া দেশ এবার দেখেছে স্মরনকালের ভয়বহ বন্যার তাণ্ডব। ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, রংপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা ইত্যাদি সহ চাঁপাইনবাবগঞ্জের কিছু অঞ্চল। জানমালের সাথে ক্ষতি হয় কৃষকের ফসল, সাথে শীতকালীন সবজির বীজতলা।
এসব বিষয়কে মাথায় রেখে দেশের একমাত্র গবেষণা ভিত্তিক বেসরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ এর শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে সবজির চারা বিতরণের উদ্যোগ গ্রহন করে। উদ্যোগ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমনুরাস্থ স্থায়ী ক্যাম্পাসের গবেষণা মাঠে লাউ, বেগুন ও মরিচের চারা উৎপাদনের কাজ শুরু করে।
শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পরিচর্যায় বেড়ে উঠা এসব চারা আজ বিতরণ করা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার রানীহাটি ও দুর্লভপুর ইউনিয়নের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় তিনশ কৃষক পরিবারের মাঝে। চারা বিতরণের উদ্দেশ্যে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মো: আফতাবুজ্জামান- আল- ইমরান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ মো: নয়ন মিয়া, উপজেলা কৃষি অফিসার, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর সার্বিক সহযগিতায় আয়োজিত সবজির চারা বিতরণের এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ ডঃ মোঃ সাহেব আলী প্রামানিক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত), এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশকে ভুয়সী প্রশংসা করেন। বানভাসী মানুষের জন্য সবজির চারা উৎপাদন এবং বিনামূল্যে বিতরণের যে উদ্যোগ এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ নিয়েছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আমরা তাদের এই সুন্দর জনকল্যাণমূলক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। যারা এই মহতি কাজের সাথে সংপৃক্ত বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে আমি আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা সবসময় আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় পাশে আছি।
বিশেষ অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকেনো প্রয়োজনে আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সর্বদা আপনাদের পাশে থাকবো এবং এই সুন্দর কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদেরকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাচ্ছি।
উক্ত অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. সাহেব আলী প্রামাণিক তাঁর বক্তব্যে বলেন এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ দেশের একমাত্র গবেষণাধর্মী বেসরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশের বিশেষ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গবেষণা এবং শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সর্বদা আপনাদের পাশে আছি কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আপামর মানুষের কল্যানের জন্য। এখানে যাতে করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছেলেমেয়েরা অল্প খরচে বিশ্বমানের শিক্ষা পায়। আমরা আমাদের কোয়ালিটি ধরে রেখে শিক্ষা এবং গবেষণার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। কৃষি বিষয়ক যে কোনো সমস্যা সমাধানে আমরা সর্বদা সচেষ্ট।
তিনি তার বক্তব্যে সার্বিক সহযোগিতার জন্য উপজেলা প্রশাসন এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং সকল সাংবাদিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।উল্লেখ্য যে, কিছুদিন আগে এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ রাস্তার পাশে এক হাজারের বেশি তালবীজ রোপণ কর্মসূচিও গ্রহন করেছিল।