এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: দেশের কৃষিখাত উন্নয়নে কৃষি তথ্য মনোয়ন্নয়ন ও আন্তঃবিনিময় কাঠামো এবং পলিসি তৈরির কাজকে ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে স্মার্ট কৃষি বাস্তবায়নে আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং এসপায়ার টু ইনোভেট -এটুআই এর মধ্যে একটি যৌথ সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব মোঃ জালাল আহমেদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন এবং এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
এই চুক্তির আওতায় স্মার্ট কৃষি বাস্তবায়নে কৃষি মন্ত্রণালয় ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় যেসব স্মার্ট সল্যুশন গ্রহণ করবে সেখানে অনুঘটক হিসেবে সার্বিক সহযোগিতা করবে এটুআই। এর অংশ হিসেবে দেশের কৃষি ব্যবস্থায় অধিকতর উন্নয়ন আনয়নে একটি সার্বিক কৃষি তথ্য মানোয়ন্নয়ন ও আন্তঃবিনিময় কাঠামো তৈরিতে সহযোগিতা করবে এটুআই। একইসঙ্গে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং কৃষক ও খামারিদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং স্মার্ট কৃষি ডিভাইসের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে দুই মন্ত্রণালয়কে সার্বিক সহযোগিতা করবে এটুআই।
এর মাধ্যমে দেশের কৃষিখাতে সার্বিক একটি ডেটা ইকোসিস্টেম নিশ্চিত করা যাবে। যার ফলে কৃষি উন্নয়নে প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকের উপযোগী স্মার্ট সল্যুশন তৈরি হবে এবং এর ধারাবাহিকতার প্রবণতা তৈরি হবে। কৃষি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্টার্টআপদের সম্পৃক্ততা শতভাগ নিশ্চিত করা যাবে এবং আন্তঃমন্ত্রণালয় ও বেসরকারি পর্যায়ে মানসম্মত তথ্য ও তথ্য বিনিময় প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। স্মার্ট কৃষি ব্যবস্থা নির্মাণের মধ্য দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য পূরণে যৌথভাবে কাজ করবে এই তিন প্রতিষ্ঠান।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ বলেন, ‘আমাদের ডিজিটাল উদ্ভাবনগুলোকে স্মার্ট করার সময় এখন। প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে উদ্ভাবনগুলোকে ফোরআইআর ও এআই নির্ভর প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। প্রাণিসম্পদ খাতের উদ্ভাবনী সমাধানে আমরা সবসময় এটুআইকে পাশে পেয়েছি। বিশেষ করে স্মার্ট সল্যুশন বাস্তবায়নে আমরা এটুআইকে আরো বেশি করে সম্পৃক্ত করতে চাই।’
আইসিটি বিভাগের সচিব জনাব মোঃ সামসুল আরেফিন বলেন, ‘দেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে আন্তঃমন্ত্রণালয় ও বেসরকারি পর্যায়ে তথ্য বিনিময়ের প্রবণতা কম। আইন প্রণয়নের মধ্য দিয়ে এই সমস্যার সমাধান আনা সম্ভব হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে স্বপ্ন তাতে এই পুরো কাজটি ভালো ভূমিকা রাখবে বলে আশা রাখি।’
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, ‘কৃষি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে অনেকগুলো স্মার্ট সল্যুশন নিয়ে কাজ করছে। যে উদ্ভাবনগুলো জাতীয় পর্যায়ে স্কেলআপ করা সম্ভব। বেসরকারি পর্যায়ে যারা স্মার্ট সল্যুশন নিয়ে কাজ করছে এ প্রক্রিয়ায় আমরা তাদেরকেও যুক্ত করতে চাই। এ ব্যাপারে এটুআই-এর সম্পৃক্ততা উন্নয়নের ধারাকে এক ধাপ এগিয়ে নেবে বলে আশা রাখছি।’
এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘কৃষি তথ্য-উপাত্তের মান-উন্নয়ন ও আন্তঃবিনিময়ের ক্ষেত্রে একটি কমিটি করার পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশে একটি স্মার্ট কৃষি ব্যবস্থা বাস্তবায়ন এবং জাতীয় কমিটিকে ক্যাটালিস্ট সকল ধরনের সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে এটুআই প্রস্তুত রয়েছে। স্মার্ট কৃষি বাস্তবায়নে সরকারি-বেসরকারি সকল পর্যায়ের অংশীদারিত্বের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব।’
এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেতৃত্ব দেবার সময়। স্মার্ট কৃষি বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেতৃত্বে আসতে পারে। কৃষিতে এআই প্রযুক্তির ব্যবহার এনে কৃষিখাতের উন্নতির অনেক সুযোগ রয়েছে। বিশেষ এই জায়গায় কাজ করা যেতে পারে। পুরো প্রক্রিয়ায় এটুআই পাশে থাকবে।’
উল্লেখ্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতায় বাস্তবায়নাধীন ও ইউএনডিপি’র সহায়তায় পরিচালিত এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই বাংলাদেশ সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বিভিন্ন উদ্ভাবনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
এসময় অনুষ্ঠানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব খ. মাহবুবুল হক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ মোঃ এমদাদুল হক তালুকদার, এটুআই-এর প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট ইনোভেশন মানিক মাহমুদসহ কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং এটুআই এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।