"আমাদের এমন কৃষিপণ্য উৎপাদন করতে হবে যা বিশ্ব দরবারে সমাদৃত হয়"-ড. ওয়ায়েস কবীর

রাজধানী প্রতিনিধি: দেশের মার্কেটের পাশাপাশি বাইরের মার্কেট ধরা সম্ভব কিন্তু বিদেশে কৃষিপণ্য রপ্তানি করতে হলে স্থানীয় বাজার বিবেচনায় নিতে হবে। স্থানীয় ভোক্তারা কোন ধরনের জিনিস খেতে পছন্দ করেন বিদেশি ক্রেতারা সে বিষয়গুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। সে লক্ষে আমাদের এমন কৃষিপণ্য উৎপাদন করতে হবে যা বিশ্ব দরবারে সমাদৃত হয়। আমন্ত্রিত অতিথিরা এজন্য ক্যাম্পেইনিং/অ্যাডভোকেসি এর মাধ্যমে পণ্য জনপ্রিয় করার তাগিদ দেন।

Society for Bangladesh Agricultural Extension Network (BAEN)-এর আয়োজনে "Innovation Grant Fund-Last Mile Progamme (MLP) Learning Sharing"-শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ড. ওয়ায়েস কবির এসব কথা বলেন।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউস্থ সেচ ভবনে বেলা ১২ টায় অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হর্টেক্স ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুল আমিন, প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (উৎপাদন) ডঃ এবিএম খালেদুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন BAEN-এর সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক ড. সেকেন্দার আলী।

কর্মশালায় অষ্টগ্রামের পনির-এর উপর একটি পেপার উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স-এর শিক্ষার্থি মোঃ আল ইমাম। একই বিভাগের প্রফেসর ডঃ মোঃ আশিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে জানা যায় ৩০০ বছরের ইতিহাস ঐতিহ্য ধরে রেখেছে "অষ্টগ্রামের পনির"। কর্মশালায় তারা চার মাসের গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন। নানা প্রশ্নের মাধ্যমে গবেষণাটি সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করেন আগত স্টেক হোল্ডাররা।

কর্মশালায় অষ্টগ্রামের পনিরকে কে জিআই পণ্য হিসেবে বিশ্ব দরবারে উপস্থাপিত করার ব্যাপারে বক্তারা তাদের যুক্তি তুলে ধরেন। সেজন্য সকল স্টেক হোল্ডারকে গবেষণা সম্প্রসারণ এবং অন্যান্য ফিল্ডে কাজ করতে হবে। পুষ্টির এ ধরনের উদ্যোগকে সামনে নিয়ে আসতে হবে। যেকোন কৃষি পণ্যকে সম্প্রসারিত করার জন্য ব্র্যান্ডিং প্রয়োজন।

বাসা ফাউন্ডেশন-এর সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার প্রোডাক্ট মাসুমা আক্তার পান্না তার উপস্থাপিত পেপারে ফারমার্স কো-অপারেটিভ মডেল তুলে ধরেন। তারা এমন একটি মডেল তৈরি করেছে যেখানে ২০০ জন মহিলা টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও সখীপুরে নিরাপদ সবজি উৎপাদনের সম্পৃক্ত রয়েছেন। নিরাপদ উপায়ে উৎপাদিত সবজি উৎপাদন থেকে বিপনন এসব কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তারা সেখানে কালেকশন সেন্টার স্থাপন করেছেন। পুরো প্রকল্পটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

নিরাপদ সবজি উৎপাদন এর মডেলটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন আগত অতিথিরা। কৃষক যেন একজন বাণিজ্যিক উদ্যোক্তায় পরিণত হবে এটি এসব কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য বলে জানান বক্তারা। এ সময় আগত কৃষক ও উৎপাদকরা তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।

Society for Bangladesh Agricultural Extension Network (BAEN) এমন একটি কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে যা সত্যিই প্রশংসনীয়। সীমিত সক্ষমতার মাধ্যমে দিয়েও গবেষণাগুলি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন আগত স্টেক হোল্ডাররা।  এজন্য গবেষক এবং কৃষকদের তারা আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

সমাপনী বক্তব্য রাখেন BAEN-এর-সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক ড. সেকেন্দার আলী। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ আফজাল হোসেন ভূঁইয়া।

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন থেকে বক্তব্য প্রদান করেন বন্ধন সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সানজিদা খানম, বাসা ফাউন্ডেশন এর এজিএম সাবরিন আহমেদ, সহ আরো অনেকে।