এগ্রিলাইফ ডেস্ক: বিদ্যমান বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন ২০১৯ বলবৎ থাকার পরও সম্প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল আইন-২০২৩ প্রণয়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় যে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন (বিভিএ)। আজ শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তন বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন আয়োজিত আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। সংবাদ সন্মেলনে বক্তারা বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল আইন-২০২৩ প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান। একইসাথে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব-এর অপসারণ দাবি জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন (বিভিএ)-এর মহাসচিব ড. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান মোল্লা।
সংবাদ সন্মেলনে বলা হয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিতর্কিত, নজিরবিহীন ও দেশবিরোধী বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল আইন-২০২৩ প্রণয়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় যে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এটি কতখানি কল্যাণকর ও প্রয়োজন তা দেশবাসীর জানা প্রয়োজন। সাধারণত যে কোন আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারগণের সাথে মতবিনিময় ও আলোচনাক্রমে আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়। প্রাণিসম্পদ সেক্টরে বিদ্যমান আইন সমূহ প্রণয়নের ক্ষেত্রে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রধান কারিগরী সংস্থা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে স্টেকহোল্ডারগণের সাথে আলোচনা করে আইনের খসড়া প্রস্তুত হওয়ার পর তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তারপরে মন্ত্রণালয়ে অধিকতর যাচাই বাচাইয়ের জন্য একাধিক আভ্যন্তরীণ সভা হয়ে থাকে।
সংবাদ সন্মেলনে আরো বলা হয় সম্প্রতি বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল আইন-২০২৩ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সাথে মত বিনিময় ছাড়া সরকারের স্বীকৃত সংস্থা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে সম্পূর্ণ পাশ কাটিয়ে তড়িঘড়ি করে কঠোর গোপনীয়ভাবে ১৮ ডিসেম্বর ।আইনটি প্রণয়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, প্রাণিসম্পদে সমৃদ্ধ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, ডেনমার্ক, জাপান, ভারত, শ্রীলংকা সহ পৃথিবীর সকল দেশের মত প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন, উৎপাদন, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, খাদ্য, সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা, প্রানিজাত পণ্যের উৎপাদন সহ সার্বিক বিষয়ে পরামর্শ প্রদান ও মান নিয়ন্ত্রণ ১৯৮২ সাল থেকে বিদ্যমান বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন-২০১৯ এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়ে আসছে।
বক্তারা আরো বলেন, দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কার্যক্রম চলমান। এ মূহূর্তে নীতিনির্ধারণী বিষয় সিদ্ধান্তগ্রহণ মন্ত্রণালয়ের কতখানি এখতিয়ারভুক্ত তা বিবেচনার দাবী রাখে। বর্ণিত বিতর্কিত অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল আইন-২০২৩ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ক্যাম্পাসে প্রতিদিন মিছিল সমাবেশ হচ্ছে, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে হচ্ছে প্রতিবাদ সভা। আসন্ন নির্বাচনে প্রায় দেড় হাজার ভেটেরিনারি গ্র্যাজুয়েট দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের মাঝেও সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ হতাশা। সর্বোপরি দেশের প্রায় ১৫ হাজার ভেটেরিনারি গ্র্যাজুয়েট, ৪০ লাখ পোল্ট্রি খামারী ও ৫০ হাজারেরও অধিক ডেইরী খামার মালিকগণ বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছে। স্টেকহোল্ডার গণের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে অসন্তোষ ও বিভ্রান্তি।
লিখিত বক্তব্য প্রদানের সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিভিএ'র সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম, চট্রগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাযার্চ প্রফেসর ড. নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল (বিভিসি) এর সভাপতি ড. মঞ্জুর কাদের, ডিএলএস এর সাবেক মহাপরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. শহিদুল ইসলাম সহ সিনিয়র ভেটেরিনারিয়ানগণ।