মোঃ গোলাম আরিফ: বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উপকেন্দ্র, ঈশ্বররদী, পাবনা’র আয়োজনে উচ্চ ফলনশীল ও প্রিমিয়াম কোয়ালিটির বোরো ধানের জাত শেখ রাসেল ধান অর্থাৎ বিনা ধান২৫ এর পরিচিতি, চাষাবাদ পদ্ধতি, বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ শীর্ষক দিনব্যাপী কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
০৪ জানুয়ারি ২০২৪ সকাল ১০.৩০ ঘটিকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, পাবনা’র প্রশিক্ষণ হলে কৃষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী সেশনের আয়োজন করা হয়। ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, মহাপরিচালক, বিনা, ময়মনসিংহ এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে মহাপরিচালক বলেন, দেশের খাদ্য চাহিদা পূরণে স্বাধীনতার পর থেকে কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান উচ্চ ফলনশীল ১৬০ টির মতো জাতের ধান উদ্ভাবন করেছে। ফলে আজ ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। খাদ্য চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রফতানি উপযোগী সরু ও চিকন প্রিমিয়াম কোয়ালিটির চালের অপ্রতুলতা রয়েছে। বিনা ধান২৫ বিদেশে রফতানিযোগ্য যা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখবে এবং আমদানি নির্ভরতা কমাবে। দেশের সরু ও চিকন চালের চাহিদা পূরণের জন্য মিলাররা তুলনামূলক মোটা চালকে কেটে বাজারে বিক্রি করছে। এতে করে ভোক্তা পুষ্টিগুণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিনা ধান২৫ সরু ও চিকন হওয়ায় কেটে চিকন বানানোর প্রয়োজন হয় না।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, বিনা ধান২৫ বোরো মৌসুমে আগাম, উচ্চফলনশীল, রোগবালাই মুক্ত ধান হওয়ায় শস্য বিন্যাসে সহজেই নির্বাচন করা যায়। বীজ বপনের সময় নভেম্বরের ৩য় সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বরের ৩য় সপ্তাহ পর্যন্ত। জীবনকাল ১৩৮-১৪৮ দিন। চাল সরু ও প্রিমিয়াম কোয়ালিটি এবং গড় ফলন বিঘা প্রতি (৩৩ শতাংশ) ২৫ মন হওয়ায় বিনা ধান২৫ চাষে আর্থিকভাবে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব। উচ্চ ফলনশীল ফসল চাষ করে দেশের কৃষিকে আরো এগিয়ে নিতে ও আর্থিকভাবে লাভবান হতে বিনা ধান২৫ চাষ ও সম্প্রসারণে উপস্থিত সকলকে আহবান জানান। বীজ প্রাপ্তিতে সংশ্লিষ্ট উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা বা উপজেলা কৃষি অফিস বা বিনার অফিসে কৃষক-কৃষানীদের তিনি যোগাযোগ করতে বলেন।
কৃষিবিদ মোঃ খান জাহান আলী, এসও এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বিনা উপকেন্দ্র, ঈশ্বরদী, পাবনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন কৃষিবিদ ড. মোঃ জামাল উদ্দীন, উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পাবনা; কৃষিবিদ মোঃ সাইফুল ইসলাম, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা; কৃষিবিদ মোঃ রোকনুজ্জামান, অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য); কৃষিবিদ ড. মোঃ আব্দুল মজিদ, অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ)।
মোঃ হাবিবুর রহমান, বৈজ্ঞানিক সহকারী এর সঞ্চালনায় প্রশিক্ষণে বিনা ধান২৫ এর পরিচিতি, উৎপাদন প্রযুক্তি, বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ বিষয়ে সেশন পরিচালনা করা হয়। দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে পাবনা জেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষক-কৃষানীসহ ৫০ জন অংশগ্রহণ করেন।