শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তি ও শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতির দাবি ৫ শতাধিক নারী গৃহকর্মীর

এগ্রিলাইফ ডেস্ক: শ্রম আইনে গৃহকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান এবং 'গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫' বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন ৫ শতাধিক গৃহকর্মী। ৫ মার্চ মঙ্গলবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়নে অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ এর সুনীতি প্রকল্প আয়োজিত 'গৃহকর্মী জাতীয় সম্মেলন ২০২৪' শীর্ষক সম্মেলনে এই আহ্বান জানায় গৃহকর্মীরা।

'সময় এখন গৃহকর্ম এবং গৃহকর্মীর' এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৫ শতাধিক গৃহকর্মীর অংশগ্রহণে আয়োজিত এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সংসদ সদস্য শিরীন আখতার স্বাগত বক্তব্য রাখেন অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশিষ দামলে। সভাপতিত্ব করেন ডিএসকে এর নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডঃ শামসুল আলম বলেন, 'সরকার নানানভাবে দেশের উন্নয়ন করছে। গৃহকর্মীদের জন্যেও এই সরকার সংবেদনশীল। তারই প্রমাণ ২০১৫ সালে গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫ প্রণয়ন করা। আমি মনে করি এ যাবতকাল পর্যন্ত গৃহকর্মীরা নিগৃত শ্রেণীর। তাদের ছুটিছাটা নেই, যেখানে রান্না করেন সেখানেই ঘুমান, তারা নির্যাতিত হন এমনকি তাদের হত্যা পর্যন্ত করা হয়। এই যে এই প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহকর্মীদের মানবেতর জীবন থেকে সুস্থ জীবনে নিয়ে আসা, সেটাও একটা মানবিক সংগ্রাম। গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি ও শ্রমআইনে অন্তর্ভুক্তির দাবির সাথে আমি একমত। গৃহকর্মী নীতি ঠিকভাবে মনিটরিং হচ্ছে না।'

তিনি আরও বলেন, 'আমার দাবি এবং সুপারিশ, সংসদ অধিবেশনে এই নীতির বাস্তবায়ন নিয়ে বর্তমান শ্রমমন্ত্রী সংসদে এ নিয়ে কথা বলবেন। শুধু তাই নয়, দেশে প্রায় ৪০ লাখ গৃহকর্মী রয়েছেন, আসন্ন জাতীয় বাজেটে তাদের জন্য সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যায় কিনা দেখা যেতে পারে। সর্বশেষ, গৃহকর্মী এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সন্তানদের মাধ্যমিক পর্যন্ত উপবৃত্তি প্রদান করা যায় কিনা ভাবতে হবে।'

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সংসদ সদস্য শিরীন আখতার বলেন, 'গৃহকর্মীদের কোনো ছুটি নেই, কাজের নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই, নেই কোনো নিয়োগপত্র, স্বাস্থ্যসুবিধা এবং নুন্যতম মজুরী। গৃহকর্মীরা যৌন হয়রানিসহ নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে। তাদের সামাজিক মর্যাদা নেই এবং পেশা হিসেবে কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই।'

এসময় নিজের অধিকারের কথা, বঞ্চনার কথা, সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন গৃহকর্মীদের একাধিক প্রতিনিধি। তাদের বক্তব্যে ন্যুনতম মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নির্যাতন, পর্যাপ্ত ছুটি না থাকা বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে।