এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানী, তুরস্ক এবং আশেপাশের দেশগুলো সার্কভুক্ত দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি অনেক কম।
বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে তথ্য অধিদফতর প্রকাশিত পদ্মা সেতু ভিত্তিক সংবাদ সংকলনের ৭টি খন্ডের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে দেশের অর্থনৈতিক বিষয়ে বিএনপি মহাসচিবের নেতিবাচক মন্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া এসময় উপস্থিত ছিলেন।
ড. হাছান বলেন, আমি মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলবো, তিনি শিক্ষক ছিলেন আমিও শিক্ষকতা করি, এখনো পার্টটাইম পড়াই। মাস্টার হিসেবে একজন প্রাক্তন মাস্টারের কাছে অনুরোধ, মাস্টার সমাজের যাতে বদনাম না হয়, সেজন্য তার একটু পড়াশুনা করা দরকার। বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির দিকে তাকে একটু তাকাতে বলবো। ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে, সেটি ৮.৬%। ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ যুক্তরাজ্যে ৯.১%, জার্মানীতে ৭. ৯%, রাশিয়াতে ১৭.১%, তুরস্কে ৭৩.৫%, নেদারল্যান্ডে ৯.৬%।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলংকায় ৩৯.১%, পাকিস্তানে ১৩.৮%, ভারতেও ৭ শতাংশের ওপরে। আমাদের দেশে মে মাস পর্যন্ত সেটি ৬ শতাংশের একটু ওপরে ছিলো, সাম্প্রতিক সময়ে বেড়ে ৭ শতাংশ হয়েছে, যেটি আজকে সমস্ত পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। দেশে এখনো এই কম মূল্যস্ফীতি প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কারণেই সম্ভবপর হয়েছে। এবং বিশ্ব বাজারে ধীরে ধীরে ভোগ্যপণ্যের দাম কমছে, আমরা আশা করছি দু-এক মাসের মধ্যে এর সুফল পাবো।’
এদিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির সমাবেশ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অফিসে আসার সময় প্রেসক্লাবের সামনে দেখেছি জনা পঞ্চাশ মানুষ দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করছে। আশেপাশের গাছপালায় তার চেয়ে বেশি কাক পাখি আছে। সাড়ে ১৩ বছরের বেশি সময় ধরে তাদের হুমকি-ধামকির মধ্যেই জনগণ আমাদের আরো দু’বার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। এ ধরণের হুমকি-ধামকি তাদেরকে হাস্যসকর বানাচ্ছে এবং এসবে কোনো কাজ হবে না। দেশে যথাসময়ে নির্বাচন হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী সমস্ত সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে যেমন ভারত, ইংল্যান্ড, কন্টিনেন্টাল ইউরোপে, অস্ট্রেলিয়া, জাপানে যেভাবে হয় ঠিক একইভাবে নির্বাচন কমিশনের অধিনে বাংলাদেশে নির্বাচন হবে এবং এবং বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে।’
মন্ত্রী এসময় তার নির্দেশে পদ্মা সেতুভিত্তিক দুই হাজারেরও বেশি সংবাদের সংকলন দ্রুত প্রকাশের জন্য তথ্য অধিদফতরকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, পৃথিবীতে আমাজান নদীর পরেই সবচাইতে খরস্রোতা নদী হচ্ছে পদ্মা। এবং আমাজানের ওপর এখনো কোনো সেতু নির্মিত হয়নি। দ্বিতীয় খরস্রোতা নদী পদ্মার ওপর সেতু নির্মাণ ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা। পদ্মা সেতু শুধুমাত্র একটি সেতু নয়, পদ্মা সেতু বাঙালির গর্ব, সক্ষমতা ও মর্যাদার প্রতীক। এই পদ্মা সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আবার প্রমাণ করেছেন যে, কোনো রক্তচক্ষু তাকে দমাতে পারে না, কোনো ষড়যন্ত্রও তাকে থামাতে পারে না। সমস্ত ষড়যন্ত্রকে উপড়ে ফেলে তিনি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন দেশকে, জাতিকে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারেন। তাই আমরা আশা করি জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায়, মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছেবে ২০৪১ সাল নাগাদ কিংবা তার আগেই বাংলাদেশ একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে।
দেশে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে গত অর্থবছরে ৫৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা যথার্থ বর্ণনা করে ড. হাছান বলেন, প্রথমত করোনা দ্বিতীয়ত ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী মন্দা চলছে। ইউরোপের ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, বেলজিয়ামসহ সমগ্র পৃথিবীতে সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ক’দিন আগে সমস্ত নাগরিকদের কাছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য মোবাইলে বার্তা পাঠানো হয়েছে উল্লেখ করে বার্তাটি পড়ে শোনান তিনি।
সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসারবৃন্দের মধ্যে মো. আবদুল জলিল এবং ইয়াকুব আলী গ্রন্থমোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।