এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:২৯ জুলাই ২০২২ইং নগরীর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের উদ্যোগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অপচয় বন্ধ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে প্রধান অতিথি ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবরী, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, পরিবেশবিদ মুক্তিযোদ্ধা ডঃ ইদ্রিস আলী, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু।
ক্যাব ডিপিও জহুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন ক্যাব মহানগরের সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সভাপতি চৌধুরী কে এনএম রিয়াদ, ক্যাব চান্দাগাও থানা সভাপতি মোঃ জানে আলম, ক্যাব ৭নং ওয়ার্ডের আবদুল আওয়াল, ক্যাব লালাখান বাজারের ঝর্না বড়ুয়া, হিন্দু পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের রনজিত কমুার দাস, ক্যাব চান্দগাও থানার সহ-সভাপতি আবু ইউনুস, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সিনিয়র সহ-সভাপতি নিলয় বর্মন, সহ-সভাপতি সাকিলুর রহমান, সহ-অর্থ সম্পাদক ওমর ফারুক, মহিলা সম্পাদক সাবিনা ইয়াসমিন, ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহ-সাধারন সম্পাদক সিতারা শামীম প্রমুখ।
মানব বন্ধনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সাশ্রয় ও অপচয় বন্ধে এগার দফা সুপারিশ করা হয়। তারমধ্যে ইজিবাইক, টমটম ও বিদ্যুত চালিত যানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা, এসমস্ত যানে চার্জ দেবার জন্য বানিজ্যিক হারে সংযোগ দিতে হবে। সরকারি অফিসে অপ্রয়োজনীয় এসি বন্ধ করা। বিল্ডিং কোড যথাযথ বাস্তবায়ন করা, প্রতিটি এপার্টমেন্ট এ সৌর প্যানেল স্থাপন বাধ্যতামুলক করা, বাড়ী তৈরীর সময় আলো-বাতাস এর জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রাখা নিশ্চিত করা। পরিবেশ সম্মত নবায়নযোগ্য বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনে বিনিয়োগ জোরদার করা। জীবাস্ম জ্বালানীর পরিবর্তে জৈবশক্তি (বায়োগ্যাস, বায়োম্যাস, বায়োফুয়েল) ভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন জোরদার করতে হবে। প্রতিটি পরিবার, শিক্ষিা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট-অফিস আদালতে বিদ্যুত-জ্বালানী সাশ্রয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা, জনগনকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে আগ্রহী করার জন্য সরকারি উদ্যোগে প্রচারনা কর্মসুচি গ্রহন করা। লোডশেডিং এর সমন্বয় জোরদার করা, পূর্বঘোষনা দিয়ে লোডশেডিং দেয়ার ব্যবস্থা করা।
লোডশেডিং এর কারনে জেনারেটর এর ব্যবহার বাড়ছে, যা জ্বালানী খাতে অস্থিরতা বাড়াচ্ছে এবং গ্রাহকের খরচ বাড়ছে। আইপিএস, চার্জার ফ্যান, বাতি এর ব্যবহার বাড়ছে, এর ফাঁকে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী এ জাতীয় পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। তা যথাযথ নজরদারি নিশ্চিত করা। ফুটপাত, পাহাড় ও নিন্ম আয়ের জন অধ্যুষিত এলাকায় অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করা। বিয়ে বাড়ী, কমিউনিটি সেন্টারগুলিতে আলোকসজ্জা নিয়ন্ত্রণ করা, প্রয়োজনে অতিথি নিয়ন্ত্রণ আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন জ্বালানী খাতে বৈশ্বিক অস্থিরতায় বাংলাদেশও আক্রান্ত। সে কারনে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, এলপিজি ও জ্বালানী তেলে সাশ্রয়ী হতে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারী কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম কর্মীসহ সকলেই এ সমস্যায় জর্জরিত। যারা সরকার চালান তারাও এদেশের নাগরিক এবং তাদের আত্মীয়স্বজনও এ সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্ত নয়। তাই বৈশ্বিক এই সমস্যা মোকাবেলায় দলমতের উর্ধ্বে উঠে সকলকে সম্মিলিতভাবে এ সমস্যা সমাধানে কাজ করতে হবে। সমস্যাটি সরকারের একার নয়, এটা ১৬ কোটি মানুষকে ভোগাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ অসচেতন বলেই একটি দিয়াশলাই এর কাঠির জন্য পুরো দিন গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখেন। আবার ৫০ টাকার একটি পাইপের জন্য শত শত টাকার পানি অপচয় করেন। অন্যদিকে সরকারি অফিসগুলিতে তদারকির অভাবে অপ্রয়োজনে ফ্যান, বাতি ও এসি চালিয়ে রাখেন। তাই ক্যাব যুব গ্রুপের সদস্যরা জ্বালানী সাশ্রয়ে ও নবায়নযোগ্য জ্বালানীর দাবি নিয়ে মাঠে ময়দানে সচেতনতা সৃষ্ঠির কাজে নেমেছে। তরুন সমাজ ফেসবুক, আড্ডা, নেশা বাদ দিয়ে জাতির ক্রান্তিকালে এগিয়ে এসেছে, সেজন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।