কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু।। ঘুনিরঘাট সেতু আজ বাস্তব! কৃষি-শিল্প-সংস্কৃতি হাতছানি দিয়ে ডাকছে। চাঙ্গা হবে এলাকার অর্থনীতি ও বৃদ্ধি পাবে সামাজিক মর্যাদা। ফুলবাড়িয়া, ত্রিশাল উপজেলার আংশিকসহ ভালুকার উথুরা, মেদুয়ারী,ডাকাতিয়া তিন ইউনিয়ন এর প্রায় ১৫ গ্রামের আনুমানিক লক্ষাধিক মানুষের প্রাণের দাবি কৃষি ও কাঠালের সূতিকাগার এলাকাটি আমার প্রিয় জন্মভূমি।
পশ্চিম ভালুকাবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন 'ঘুনিরঘাট বয়ড়ারটেক সেতু' আজ বাস্তব। ছোটবেলা থেকে প্রয়োজনে- অপ্রয়োজনে কতবার যে নৌকায় এ নদী পার হয়েছি তা বলে শেষ করা যাবে না। তীব্র স্রোতে এই নদী পার হওয়া নিয়ে অনেক দুর্ঘটনাও ঘটেছে। নদীগর্ভে দু-চারজন মানুষকেও আমরা হারিয়েছি। নদীতে কালো কালো বিশাল আকৃতির শশুক দেখেছি লম্ফজম্ফ দিতে। আর মাছ ধরার কথা তো বলে শেষ করা যাবে না। এ মৌসুমে সারিবদ্ধভাবে জাল দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্যটা ছিলো একেবারেই স্বাভাবিক। এরকম আরও অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে এ ব্রিজ কেন্দ্রীক খিরু নদীকে কেন্দ্র করে। এই বহু আকাঙ্ক্ষিত সেতু বাস্তবায়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি ভালুকা আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজিম উদ্দিন আহমেদ ধনু ভাইকে।
পরিশেষে, এই সেতু বাস্তবায়নে স্থানীয় সাংবাদিক, এলাকাবাসীসহ সংশ্লিষ্ট অন্য সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার সুফল আজ আমাদের হাতের নাগালে।
সেতুটির কাজ শেষে এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। আনুমানিক ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি বর্তমান সরকারের এক মাইলফলক উন্নয়নকে স্পর্শ করেছে। সেতুটি চালুর মাধ্যমে উক্ত এলাকার মানুষের অবর্ননীয় কষ্ট আজ দূর হয়েছে। সরেজমিনে দেখলাম সেতুটি দিয়ে শতশত মানুষজন পায়ে হেটে ও গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করছে। অনেকেই উৎসবমুখর পরিবেশে সেতুটি একনজর দেখতে আসছে।
সেতুটি চালুর মাধ্যমে দীর্ঘ অবহেলিত এই জনপদে উৎসব আমেজ বিরাজ করছে। এলাকার মানুষের কৃষি পন্যসহ নানাবিধ জনগুরুত্বপূর্ণ সহজেই রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে পৌঁছে যাবে যার প্রেক্ষিতে সচল হবে অত্র এলাকার লক্ষাধীক মানুষের অর্থনীতির চাকা। আবারও সারাবছর ব্যাপী বাস-মাইক্রোবাস নিয়ে উক্ত এলাকায় সার্বজনীন প্রবেশে মুখরিত হবে সংশ্লিষ্ট এলাকা।
পরিশেষে আবারও অভিনন্দন অত্র এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ আপামর জনগণ যারা বর্তমান সরকারের প্রতি আস্থা রেখেছেন দীর্ঘ সময়। সেতুটির জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
তবে উদ্বোধনের পূর্বেই অতি বৃষ্টিতে সেতুটির সংযোগ সড়ক ডেবে গেছে এবং কিছুটা ত্রুটি দেখা দিলে স্থানীয় যুবলীগ নেতাসহ অনেকেই কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিলে একপর্যায়ে তা গণমাধ্যমে চলে আসে। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে তাৎক্ষণিক সম্মানিত উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব আবুল কালাম আজাদ এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিন সেতুটি পরিদর্শন করেছেন তা শীঘ্রই সংশোধন করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মাননীয় এমপি মহোদয় হজ্বব্রত পালনরত থেকেও সেতুর বর্তমান অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন এবং সমাধানের নির্দেশনা দিয়েছেন। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার প্রেক্ষিতে এলাকার মানুষজন আজ স্বস্তি প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য সেতুটির দুপাশে ২০০ মিটার সংযোগ সড়কসহ ৮১ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণে প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। কার্যাদেশ প্রাপ্তি সাপেক্ষে গত ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে ঘুনিরঘাট সেতুটির কাজ শুরু করেছিলো সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ।